Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন: অতিরিক্ত ব্যয় বন্ধে শুরুতেই পদক্ষেপ নিতে হবে

জুলাই ১৭, ২০২০, ০৫:৪১ এএম


অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন: অতিরিক্ত ব্যয় বন্ধে শুরুতেই পদক্ষেপ নিতে হবে

দেশে করেনা ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর থেকেই হাসপাতালগুলোতে অক্সিজেন সরবারহ নিয়ে অপ্রতুলতার খবর পাওয়া যায়। শেষমেশ ৮৩টি হাসপাতালে লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক বসানোর সংবাদ ইতিবাচক।

তবে দেখতে হবে— প্রয়োজন নেই এমন কোনো স্থানে যেনো এগুলো বসানো না হয়।

দেশের হাসপাতালগুলোয় দামি দামি অনেক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে যেগুলো কারো কাজে লাগছে না; বরং অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে। আলোচ্য ক্ষেত্রেও যাতে এমনটি না ঘটে, এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত। উদ্বেগজনক হল, লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংকগুলো কেনাকাটার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো দর যাচাই কমিটি গঠিত হয়নি।

এছাড়া যান্ত্রিক বিষয়গুলো দেখভালের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠন করা হয়নি কোনো কমিটি। এ অবস্থায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর জীবনরক্ষায় অপরিহার্য অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের কাজে দুর্নীতি হবে না, এর নিশ্চয়তা কী?

দেশের স্বাস্থ্য খাতে নানারকম অনিয়ম-দুর্নীতির কথা সর্বজনবিদিত; করোনাকালীন সংকটেও যার ব্যত্যয় ঘটেনি। লিকুইড অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপনের ক্ষেত্রেও যাতে অনিয়ম-দুর্নীতি না ঘটে, এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ প্রয়োজনীয় অক্সিজেনের অভাব।

 হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীদের লক্ষণ অনুযায়ী সব ধরনের ওষুধ দেয়া সম্ভব হলেও অনেকের ক্ষেত্রেই প্রয়োজন অনুযায়ী ‘হাইফ্লো’ অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছিল না।

এর ফলে অনেক রোগী দুঃখজনক মৃত্যুর শিকার হয়েছেন। এ বাস্তবতায় অক্সিজেন ট্যাংকগুলো স্থাপনের উদ্যোগ আরও আগেই গ্রহণ করা উচিত ছিলো।

তবে দেরিতে হলেও উদ্যোগটি নেয়ার জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাতেই হয়। এখন দেখা উচিত— কত দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা যায়। করোনা বিষয়ে জনমনে কী পরিমাণ আতঙ্ক ও ভীতি বিরাজ করছে, এ নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই।

হাসপাতালে জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেনের অপ্রতুলতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে, ফুটপাতে; এমন কী নরসুন্দরের দোকানে অক্সিজেন সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে— এমন সংবাদ ও ছবি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ইতোমধ্যে যে কয়টি হাসপাতালে অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে, তার একটিতে বিল দেয়া হয়েছে চার কোটি টাকা; অন্যটিতে চার কোটি ২৩ লাখ টাকা।

অথচ সংশ্লিষ্টদের অভিমতে হচ্ছে, ঠিকাদারের লভ্যাংশসহ আড়াই কোটি টাকার মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব। তার মানে এ ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় দেখানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা শুরুতেই রোধ করা প্রয়োজন।

আমরা মনে করি, অক্সিজেন ট্যাংক স্থাপন ব্যয় নির্বাহের জন্য একটি বাজার দর যাচাই কমিটি গঠন করা উচিত ছিলো। জমাকৃত বিলগুলোর টাকাও যাচাই-বাছাই করে তবেই দেয়া উচিত। কেউ যদি অতিরিক্ত বিল দাখিল করে এবং কেউ যদি সেটি প্রদান করে তাহলে উভয়কেই শাস্তির আওতায় আনা দরকার।

আমারসংবাদ/এআই