Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ধর্ষিত হয় আমার মা বোন এই কারণে বলা ৩ মাসে চাই ফাঁসি

মোমিন মেহেদী

অক্টোবর ১২, ২০২০, ০৮:৪৫ পিএম


ধর্ষিত হয় আমার মা বোন এই কারণে বলা ৩ মাসে চাই ফাঁসি

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন ও সাবেক ক্ষমতাসীনদের পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধী-দুর্নীতিবাজ চক্র বরাবরই আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে লালন পালন করে রেখেছে ধর্ষক-নির্যাতক-খুনিদের।

এই সুযোগটি বরাবরই তৈরি করে রেখেছে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-সচিব, আমলা, কর্মকর্তারা। নিজেদের অর্থনৈতিক ফায়দা যেমন এরা হাসিল করে, তেমনি নির্মমতায় মেতে থাকা মানুষগুলোকে নেপথ্যে থেকে সহায়তা করেই যাচ্ছে।

এই সুযোগে বেড়ে উঠছে ছাত্রনেতা সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরুসহ অসংখ্য ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ছাত্রশিবির-ছাত্র ফেডারেশন, ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের অন্যায়-অপরাধের দৌরাত্ম্য। মৌলভীবাজারে ঘটে যাওয়া অন্যায়-অপরাধের রামরাজত্ব শুরু হয় মাদক আড্ডার মধ্য দিয়ে। মাদকদ্রব্য খাওয়ানোর পর তথাকথিত ছাত্রনেতারা সহযোগিতা ও ধর্ষণে মেতে ওঠে। যে ব্যাপারে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

এই মামলায় আসামি করা হয়েছে সোস্যাল ওয়ার্কার হিসেবে, নিম্নবিত্ত নারীদের স্যানেটারি প্যাড প্রদানকারী সংগঠক হিসেবে ব্যাপক পরিচিত মারজিয়া প্রভা, আনসারীসহ বেশ কজনকে। এর পরপরই একের পর এক নুরুল হক নুরের মতো ছাত্র নেতাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হওয়া শুরু হয়।

তারপর নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, কুষ্টিয়াতে পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক ধর্ষণ, এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নেতাদের গণধর্ষণ, বরিশালে-যশোরে-ঝিনাইদহে ধর্ষণসহ সারা দেশে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনা ঘটেই চলছে।

পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় চলছে মহামারির চেয়েও ভয়ংকরভাবে বলাৎকারের ঘটনা। যার সংবাদ দৈনিকের পাতায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। কওমি-হাফেজি মাদ্রাসাগুলোতে কিছু কুলাঙ্গার টাইপের তথাকথিত ধর্মীয় শিক্ষকরা এসব অপকর্মগুলো করছে; যা স্থানীয় একটি অপরাধী চক্রের হস্তক্ষেপে মীমাংসিত হচ্ছে। কিন্তু এভাবে বাংলাদেশকে কেন নারীবাদি-ধর্মীয় উগ্রবাদি-পুঁজিবাদি-ভোগবাদিরা ক্ষতিগ্রস্ত করছে? কারণ একটাই— অপরাধ করলেও ক্ষমতা থাকলে বিচার নাই।

সবকিছুর জন্য বিচারের সংস্কৃতি না থাকাই দায়ী। এই বিচারহীনতার উদাহরণ হিসেবে কয়েকটা ঘটনা তুলে ধরি— চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০০৫ সালের ৭ অক্টোবর এক কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় কিশোরীর মামা বাদি হয়ে মামলা করেন।

তদন্ত শেষে ২০০৬ সালের ১৩ জুন এ মামলায় আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ। ২০০৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন আদালত। ২০০৮ সালের ৩ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। মামলায় ৯ জনের মধ্যে পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।

সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৫ জুন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। এরপর আর কোনো সাক্ষ্য নেয়া হয়নি। আদালত ‘সময় ও অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা’ জারির পরও মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী ‘চিকিৎসক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা’ সাক্ষ্য দেননি।

ইতোমধ্যেই মামলার একমাত্র আসামি মাসুম বিল্লাহ জামিন নিয়ে পলাতক আছে। অপর এক মামলার নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আসামি শাহ আলম। একপর্যায়ে কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়ে।

এ কারণে শাহ আলমকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় ওই কিশোরী। কিন্তু শাহ আলম বিয়ে না করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদি হয়ে ২০০৮ সালের ১৪ জুলাই মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ আগস্ট মামলার চার্জশিট দেয়া হয়।

একই বছরের ২৭ নভেম্বর আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। তবে এ দীর্ঘদিনেও মামলায় একজনেরও সাক্ষ্য গ্রহণ হয়নি। মামলার বাদি, বাদির মা এবং বাদির বাবাকে সাক্ষীর জন্য স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানায় সমন ও জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানো হলেও তা কাজে আসেনি।

পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছে, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানায় তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চাঞ্চল্যকর এ মামলার ভবিষ্যৎও অনিশ্চয়তায় পড়েছে। মামলার একমাত্র আসামি পলাতক রয়েছে। দুটি মামলাই বর্তমানে ঢাকার দুই নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী বছরের ২০ জানুয়ারি মামলা দুটির পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

শুধু এ দুটি মামলাই নয়, বর্তমানে দেশে ৯৫টি ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রায় পৌনে দুই লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৪০ হাজার মামলা পাঁচ বছরের পুরনো। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে প্রত্যেকটি ট্রাইব্যুনালে গড়ে প্রায় এক হাজার ৭৫০টি মামলা বিচারাধীন।

একজন বিচারকের পক্ষে এসব মামলায় দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন। এতে একদিকে যেমন ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি কঠোর শাস্তি নিশ্চিতের মাধ্যমে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন না হওয়ায় ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বেড়েই চলেছে।

আমি মনে করি- বিদ্যমান আইনের অনেক কিছু পরিবর্তন দরকার। যদিও আমাদের পর্নোগ্রাফি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আছে। এরপরও পুরনো ব্রিটিশ আমলের সেই আইন ফলো করে কাজ করতে হচ্ছে। একটি আইনের প্রয়োগের ব্যাপারে তিনটি গ্রুপকে কাজ করতে হয়। প্রথম হলো তদন্ত।

এ সময়ে একজন যোগ্য ও সৎ পুলিশ অফিসার যদি স্বাধীনভাবে তদন্ত করেন এবং তাকে যদি তার ঊর্ধ্বতন অফিসার নজরদারিতে রাখেন তাহলে একটি সঠিক তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া সম্ভব। বর্তমান আধুনিক যুগে ডিএনএ টেস্ট, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে অনেক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা সম্ভব। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হলেন— যথাক্রমে বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটর। একজন বিচারক যদি কমিটেট থাকেন ও নারীবন্ধব হন, সেই সঙ্গে পাবলিক প্রসিকিউটর যদি তার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখেন তাহলে বিচার সুষ্ঠু ও দ্রুত হওয়া সম্ভব।

এ তিনটি গ্রুপের যথাযথ কাজের মাধ্যমেই একটি ভালো বা প্রত্যাশিত রায় আসতে পারে। এছাড়া হাইকোর্টের নীতিমালা মনিটর করা হলে যার যতটুকু অপরাধ- সে অনুসারে শাস্তি হতে পারে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অধিকাংশ মামলায়ই সাজা হয় না। মাত্র ৫ ভাগ মামলায় সাজা হয়।

তাই আইন পরিবর্তনের চেয়েও সবচেয়ে বড় হলো বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো। আর বিচারক হতে হবে নারী ও শিশুবান্ধব। একইসঙ্গে সাক্ষী নিশ্চিত করাসহ আদালতে সব ধরনের সুবিধা বাড়াতে হবে। বিদ্যমান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সর্বোচ্চ ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিলের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।

প্রতি কর্মদিবসে টানা বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে মামলা নিষ্পত্তি করতে ট্রাইব্যুনালকে নির্দেশনা দেয়া আছে। ১৮০ দিনের মধ্যে বিচারকাজ সম্পাদনের নির্দেশনাও আছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। এই ভিন্নতা থেকে সরে এসে তিন মাসের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসির রায় কার্যকর করার আইনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং কোনো ফাঁক দিয়ে যেন ধর্ষক বেরিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য কঠোর ও দৃঢ় থাকতে হবে বাংলাদেশের আইন-প্রশাসন বিভাগকে।

নতুন প্রজন্মের রাজনীতি-শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আইন সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে পারি— প্রতিটি কোর্টে প্রায় দুই হাজার নারী নির্যাতন ও ধর্ষণসংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এরপরও পৃথক শিশু আদালত গঠন না হওয়া পর্যন্ত শিশুদের নিয়ে মামলাগুলোর বিচার কাজও এসব ট্রাইব্যুনালে হচ্ছে।

ফলে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তিতে বিচার ও প্রসিকিউটরদের ওপর চাপ আরও বেড়ে গেছে। বেশকিছু মামলায় ট্রাইব্যুনালে স্টাফদের সঙ্গে যোগসাজশে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে সাক্ষী হাজির হতে দেন না।

ফলে বাদিপক্ষের লোকজন জানতেই পারে না যে, কবে মামলার সাক্ষী হবে। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাদিপক্ষের আইনজীবী আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে মিশে যান। এভাবেই হারিয়ে যায় আমাদের নারী নির্যাতন-ধর্ষণের বিচার প্রক্রিয়া।

সেই সাথে পরিবার ও সমাজের চাপে নারীরা ধর্ষণের কথা বলতে চান না। ধর্ষণের দায় নারীদের ওপর চাপানো হয় বলে অনেকেই নির্যাতনের শিকার হয়েও চুপ থাকেন। আবার ধর্ষণের ঘটনায় বিচার চাইতে গেলে চরম লাঞ্ছনার মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময় অতি আপনজনও নারীর পাশে দাঁড়ান না।

মানবাধিকার বাংলাদেশ নামক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বলছে— প্রতিদিন গড়ে এক হাজারেরও বেশি নারী নির্যাতিত হয়; আর ধর্ষিত হয় প্রায় অর্ধশত নারী। যার তথ্য আমরা প্রতিদিনের গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ থেকে পেয়েছি। এছাড়াও রেকর্ডের বাইরে বেশকিছু তথ্য থেকে যায়, যা স্থানীয় মোড়ল- মেম্বার- চেয়ারম্যান-মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের হস্তক্ষেপে মীমাংসা করা হয়।

এরপরও দেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বৃদ্ধি এবং এসব ঘটনার প্রতিবাদে চারদিকে বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ায় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। এ ব্যাপারে অবশ্য সরকারকে সতর্ক করে দ্রুত ধর্ষণ ও নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দেয়ার সুপারিশ করেছেন আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী।

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি বলছে- ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনাগুলোতে জড়িত পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা না হলে নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন অব্যাহত রাখলে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।

এ অবস্থায় ধর্ষণ ও নির্যাতনের মামলাগুলো নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনার মত দিয়েছে সংস্থাটি। পাশাপাশি সিলেটের এমসি কলেজে নববধূকে গণধর্ষণ এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা দুটি দ্রুত তদন্ত ও বিচার সম্পন্ন করে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।  

এই প্যান্ডামিক পরিস্থিতিতেও আমাদের ক্ষমতাসীন দলের-সাবেক ক্ষমতাসীন দলের-স্বাধীনতাবিরোধীদের বা পীর-মুরিদ-ধর্মব্যবসায়ীদের অপরাধ-দুর্নীতি কমেনি, কমেনি পশুবৃত্তিক আচরণ। যে কারণে নির্মমতায় মেতে উঠছে তারা। ভয়ভীতি এবং সামাজিক সম্মান খুন্ন হওয়ার ভয়ে ধর্ষণের শিকার এক-চতুর্থাংশ নারীই মামলা করতে পারে না। গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ২২৫ জনই ধর্ষণের শিকার হলেও মামলা করতে পারেননি। এর বাইরে গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫০ জন।

এর মধ্যে ৫৮ জন মামলা করতে পারেননি। ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ঘটনাগুলো সংঘবদ্ধ অপরাধ। এসব অপরাধী ক্ষমতাবান। ঘটনার পর তারা নানাভাবে ভুক্তভোগীদের ওপর চাপ তৈরি করতে থাকেন। এসব কারণে অনেকেই ধর্ষণের শিকার হলেও মামলা করতে পারেন না। আবার সামাজিক ব্যবস্থা বিবেচনায় মানসম্মান রক্ষার্থেও অনেকেই মামলা করেন না। তবে চেপে যাওয়ার এমন প্রবণতার ফলে অপরাধীরা আরও বেশি অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে।

তবে কেন যেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে এই ধর্মভীরু খ্যাত বাংলাদেশের চরিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এদেশে যেকোনো ধরনের সংকটকালীন পরিস্থিতিতেই অপরাধ বেড়ে যায়। এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজন বিশেষ পরিকল্পনার।

 পাশাপাশি আমাদের ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ একজন ভুক্তভোগী আজ ধর্ষণের শিকার হয়েও বিচার চাইতে পারেন না। কারণ তার প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করার সুযোগ বর্তমান ক্রিমিনাল জাস্টিম সিস্টেমে নেই।

যদিও ট্রিপল নাইন নামক একটা কথা বলা হচ্ছে বেশ কিছুদিন যাবৎ। বাস্তবতা হলো— সেখানে কল দিলে বলে- ‘আপনি যে থানা এলাকায় আছেন, এক্ষুণি সেই থানায় চলে যান অথবা সেই থানার ডিউটি অফিসারের সেল নাম্বার দিয়ে বলেন, তাকে কল দিন।’ এই বাস্তবতার বাইরে বেরিয়ে এসে সঠিকভাবে ধর্মচর্চা করতে হবে বাংলাদেশের সকল ধর্মানুসারীকে। যাতে করে থানায় মামলা দিতে গেলে না বলে- এত রাতে আপনি নারী হয়েও কেন বাইরে ছিলেন?

মসজিদ থেকে বেরিয়ে আলখাল্লা পরা ব্যক্তিটি নারীর শরীরের দিকে তাকিয়ে থাকায় কেন এভাবে তাকাচ্ছেন প্রশ্ন করলে যেন না বলে- ‘আপনি কেন নারী হয়েও বাইরে বেরিয়েছেন?’ নারী কারো মা, কারো বোন, কারো কন্যা, কারো সহধর্মিনী। অতএব, সভ্য মানুষের সভ্য দেশে বাংলাদেশকে পরিণত করতে শুদ্ধ ধর্ম-মানবিক মূল্যবোধ শিক্ষা এবং আইনের সংস্কৃতি-বিচারের চর্চায় অগ্রসর হতে হবে বাংলাদেশকে। কথায় নয়; কাজে চাই নারীবাদী বা মানবতাবাদী হোন নিরন্তর...

লেখক : চেয়ারম্যান, অনলাইন প্রেস ইউনিটি

আমারসংবাদ/এসটিএম