Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪,

ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে রাজধানী

এপ্রিল ১৬, ২০১৫, ০৭:৫০ এএম


ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে রাজধানী


সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকার চিত্র পরিবর্তন হয়ে গেছে। রাজধানী ঢাকা এখন ব্যানার, পোস্টার, ফেষ্টুনের দখলে। বড় রাস্তা থেকে শুরু করে অলিগলিসহ সব স্থান দখলে নিয়েছে পোস্টার আর ব্যানার। নির্বাচন কমিশন তিন সিটিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার সাথে সাথেই জমে উঠেছে রাজধানীর নির্বাচন। ইতোমধ্যেই মহল্লায় মহল্লায় ভোটারদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন প্রার্থীরা। সেই সাথে ব্যানার, ফেষ্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে রাজধানীর সর্বত্র। জমে উঠেছে চায়ের স্টলে নির্বাচনী হইচই। চায়ের টেবিলেই বিজয়ী করছেন নিজ প্রার্থীদের। অনেকে আবার চ্যালেঞ্জ করছেন নিজ প্রার্থী নিয়ে।

 তবে এবারের নির্বাচনে ত্রিমুখি লড়াই হবে বলে আসা করছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের তালিকা অনুযায়ী, এবারের সিটি নির্বাচনে ভোটার রয়েছে ৪২ লাখ ১৬ হাজার ১২৭জন।এছাড়াও ৯৩ ওয়ার্ডে ১ হাজার ৯’শ ৮২ টি কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়াডের্র সংখ্যা ৩৬টি, সংরক্ষিত ওয়াডের্র সংখ্যা ১২টি। আর ওয়ার্ডগুলোর মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১০৯৩টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৫৮৯২টি। যার মধ্যে একটিও অস্থায়ী ভোট কেন্দ্র নেই, তবে অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ২৭৭টি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৪। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ লাখ ২৪ হাজার ৭০১ জন আর নারী ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ২০ হাজার ৬৭৩টি। অন্যেিদকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়াডের্র সংখ্যা ৫৭টি, সংরক্ষিত ওয়াডের্র সংখ্যা ১৯টি। দক্ষিণে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৮৯টি, মোট ভোট কক্ষের সংখ্যা ৪৭৪৬টি। অস্থায়ী মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১টি ও অস্থায়ী ভোট কক্ষের সংখ্যা ৬১২টি।ঢাকা দক্ষিণে মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৫৩টি। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ১০ লাখ ৯ হাজার ২৮৬ জন ও নারী ভোটার সংখ্যা ৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৬৭ জন। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলিতে ব্যানার, ফেষ্টুন ও পোষ্টারে ভরে গেছে।

এবারের নির্বাচনে প্রথম দিকে বিএনপির জল্পনা কল্পনা থাকলেও সর্বশেষ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়ায় নির্বাচনকে করে তোলেছে আরও প্রাণবন্ত। আওয়ামী লীগ,বিএনপি,জাতীয় পার্টিসহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে তাদের পছন্দনিয় প্রার্থী দিয়েছেন। যাতে করে সর্ব মহলে নির্বাচনের আমেজ ছড়িয়ে পড়ছে। মহল্লায় মহল্লায় গড়ে উঠছে নির্বাচনী অফিস। আর এই অফিসগুলোতে সারা দিনই প্রার্থীদের কর্মীরা নিজ প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষে ভোটারদের সেবা যত্ন ও কুশল বিনিময় করছেন। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পূর্বে বড় দুই দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী নির্বাচন করার কথা থাকলেও বর্তমানে এমনটি চোখে পড়ছে না। বড় দুই দলই নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একনিষ্টভাবে নির্ঘুম প্রচারণা চালাচ্ছেন। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা হিসাব নিকাশ। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে তিন সিটিতে বিজয়ের ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও বিজয়ের জন্য প্রাণপন চেষ্টা করে চলছে।

 এবারের ঢাকা সিটি নির্বাচনে ৩৬ জন মেয়রসহ সর্বমোট ৮৮২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয় সূত্রে পাওয়া তথ্যানুযায়ী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে লড়ছেন মোট ৩৮১ জন প্রার্থী। মেয়র পদে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক,বিএনপি সমর্থিত তাবিথ আউয়াল, জাতীয় পার্টি সমর্থিত বাহাউদ্দিন আহম্মেদ বাবুল, বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরীসহ ১৬ জন প্রার্থী। ঢাকা উত্তরের সাধারণ ৩৬ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা ২৭৭ জন। এ সিটির সংরক্ষিত ১২ প্রার্থীর সংখ্যা ৮৮ জন। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এ সিটিতে মেয়র পদে ২০ জনসহ মোট ৫০১ জন প্রার্থী রয়েছেন। মেয়র পদে লড়াইয়ে আছেন ঢাকা দক্ষিণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন, বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাস, জাতীয় পার্টি সমর্থিত হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলনসহ ২০ জন।

এ ছাড়া বিএনপির আরেক কেন্দ্রীয় নেতা এসএম আসাদুজ্জামান রিপন ও আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে সাধারণ ৫৭টি ওয়ার্ডে  প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর পদে ৩৮৬ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯৫ জন রয়েছেন। ঢাকা সিটি নির্বাচনে ৮৮২ জন প্রার্থী থাকলেও কিছু সংখ্যক প্রার্থীদের পোষ্টারে ছেয়ে গেছে রাজধানী। হেভিওয়েট কয়েকজন প্রার্থী ব্যতীত অন্যদের পোষ্টার তেমন চোখে পড়ে না। এছাড়াও পোষ্টার লাগানো নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষের সাথে মারধর চলছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।  রাজধানীর দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়াডের্র আওয়ামীলীগ সমর্থিত কমিশনার পদপ্রার্থী আব্দুর রহমান মিয়াজীর সমর্থক রাজিব নামের এক কর্মীকে পোস্টার লাগানোর অপরাধে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহাবুদ্দিন জনির পাঁচ সমর্থক মারধর করেছে। পরে তাকে পিস্তল দিয়ে হুমকীরও অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী তা দেখে পাঁচ সমর্থককে গণধোলাই দেয়। এই সময় চারজন পালিয়ে গেলে একজনকে ধরে সূত্রাপুর থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। গত ১৩ এপ্রিল দুপুর ১টায় বাংলাবাজারের লেডিস মার্কেটের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়,জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলেও আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দেওয়া যাবে। ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় ২০১৪ সালে যারা ভোটার হয়েছেন অথচ পরিচয়পত্র পাননি, তারাও সিটি নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।