Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার আহ্বান বি. চৌধুরীর

জুন ১২, ২০১৫, ০১:১০ পিএম


বিএনপিকে জামায়াত ছাড়ার আহ্বান বি. চৌধুরীর

জামায়াতনির্ভর রাজনীতি ছেড়ে বিএনপিকে আবার জিয়াউর রহমানের রাজনীতিতে ফিরে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি জিয়াউর রহমানের আদর্শের মধ্যে নেই। বিএনপি এখন তৃতীয় স্টেজের রাজনীতি করছে। তাদের রাজনীতি এখন সম্পূর্ণ জামায়াতনির্ভর।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ কে এম মাঈদুল ইসলাম চৌধুরী এমপির লেখা ‘আত্মসত্তার রাজনীতি এবং আমার ভাবনা’ বইয়ের প্রকাশনা উত্সবে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রকাশনা উত্সবে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ। এ ছাড়া, অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন—বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার প্রমুখ।

বি. চৌধুরী বলেন, ‘মাঈদুল ইসলাম আজ বিএনপির সঙ্গে নেই। আমিও নেই। অনেকেই জানে না শহীদ জিয়াউর রহমান বিএনপি গড়ার শুরুতে হাতে গোনা দু’একজনের কাছ থেকে অনুদান নিয়েছিলেন। তার মধ্যে মাঈদুল দিয়েছিলেন এক কোটি টাকা। অনেকেই তা জানে না। যে দু’একজন জানে আমি তার মধ্যে একজন।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রাজনীতিকরা অনেক কথা বলেন। কিন্তু লেখেন না। সবাই তো আর শিল্পী হতে পারে না। তাই সবাই লিখতেও পারে না।’তিনি বলেন, ‘রাজনীতিতে প্রথম প্রথম প্রতিযোগিতা হয়। পরে হয় শত্রুতা। আর বেশি কিছু বলতে চাই না।’ প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিএনপিকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন দলটির প্রতিষ্ঠাতা এ মহাসচিব।

বি. চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগ-জিয়াউর রহমানের বিএনপি। তিনি মানুষের পাশে ছুটে যেতেন। উৎপাদনের রাজনীতি করতেন। মানুষকে ভালবাসার রাজনীতি করতেন। মানুষকে বিশ্বাসের রাজনীতি করতেন। যে কারণে তিনি জনগণের একান্ত মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। সবার কাছে জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হয়েছিলেন।

দ্বিতীয়ত, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি। এ সম্পর্কে আমি বেশি কিছু বলতে চাই না। তবে বেগম জিয়াকে আমি কিছুদিন আগেও প্রশ্ন করেছি, কোথায় সেই জিয়ার আদর্শ? জিয়া রাখাল রাজার মতো সারাদেশ চষে বেড়িয়েছেন। তিনি নিজে কোদাল হাতে নিয়ে পানি সমস্যা দূর করতে খাল কেটেছেন। আপনিতো দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় ছিলেন। কেন একটি খালও আপনি কাটেননি? তৃতীয়ত, বর্তমানে জামায়াতনির্ভর বিএনপি। এ বিএনপি তার রাজনীতির তৃতীয় স্টেজে আছে। যদি বিএনপি বাঁচতে চায়, আবার জনগণের দল হতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই জিয়াউর রহমানের আদর্শের কাছে ফিরে যেতে হবে। জিয়ার মতো জনগণের কাছে যেতে হবে। তাহলেই জনগণের মাঝে আবার বিএনপি জেগে উঠতে পারবে।’

অধ্যাপক বি চৌধুরী বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একজন ভাল সেলস ম্যান। তিনি সীমান্ত চুক্তি সমাধান করেছেন। এ জন্য তাকে ধন্যবাদ। দীর্ঘ ৬৮ বছর পর এতে ৪৭ হাজার মানুষ উপকার পাবে। আর তিস্তা পাড়ের দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ চোখের পানি ফেলছে। সে বিষয়টি তার বিবেচনায় আসেনি। তিনি চুক্তি করেছেন ২২টি। এগুলো আমাদের দেশের জন্য কতটা মঙ্গলজনক তা সময় সাপেক্ষে বোঝা যাবে। জনগণ এখনও জানে না এ সব চুক্তির মধ্যে কী কী শর্ত আছে। এ চুক্তির বিষয় জনগণকে জানাতে হবে। সে জন্য অবিলম্বে এ চুক্তির বিষয়বস্তু সংসদে উত্থাপন করতে হবে।’

সাবেক রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি এ দেশ সফর করেছেন। আমরা জয়ধ্বনী করলাম। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলাম। তিনি আমাদের সামনে হিন্দিতে বক্তব্য রাখলেন। তিনি ভাবলেন কী করে এ দেশের জনগণ হিন্দি ভাষায় অভ্যস্ত। সবাই হিন্দি বলতে ও বুঝতে পারে। তার এ ভাবনাটা ঠিক হয়নি। ভবিষ্যতে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন ভারত সফরে যাবেন তখন ভারতের সংসদে বাংলায় বক্তব্য দিতে হবে। তা না হলে ব্যালেন্স হবে না।’