Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে দৃষ্টি সরাতে জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২১, ১০:১০ এএম


আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে দৃষ্টি সরাতে জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে।

রিজভীর ধারণা, বাংলাদেশকে নিয়ে আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে দৃষ্টি সরাতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের মদতদাতা উল্লেখ করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার ৭২তম সভায় জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়। জামুকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাবে এবং এতে তাদের সম্মতি লাগবে।

মঙ্গলবার নেয়া এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করেন নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে।

এসময় তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে বর্তমান সরকারের মাফিয়া দুঃশাসনের যে সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, সেটিকে আড়াল করতেই রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছে।

সরকারের প্ররোচনায় জামুকা জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি শেখ হাসিনার আদেশেই করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে।

এই সিদ্ধান্ত রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ করার ঘোষণাও দেন রিজভী। 

বলেন, বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তি রাজপথে সুনামির ন্যায় ধেয়ে এসে প্রতিরোধ করবে।

নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ‘মে-দিনের কবিতা’ ও সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘উদ্যোগ’ কবিতার দুই লাইন করে আবৃত্তি করেন রিজভী:

‘মৃত্যুর ভয়ে ভীরু বসে থাকা, আর না-

পরো পরো যুদ্ধের সজ্জা’।

‘আজ দৃঢ় দাঁতে পুঞ্জিত হাতে প্রতিরোধ করো শক্ত, প্রতি ঘাসে ঘাসে বিদ্যুৎ জাগে সাড়া প্রত্যয়-ব্যক্ত’।

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান।

স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশকে যে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে, তার একটির প্রধানও ছিলেন জিয়া। যুদ্ধের পরে বঙ্গবন্ধু সরকার তাকে বীর উত্তম খেতাব দেয়।

এদিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নানা পটপরিক্রমায় জিয়াউর রহমান চলে আসেন রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে। ১৯৭৬ সালের ১৯ নভেম্বর সামরিক আইন জারি করে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন সে সময়ের মেজর জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সেনাপ্রধান থাকা অবস্থাতেই জিয়া হয়ে যান রাষ্ট্রপতি।

জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের নানাভাবে পুরস্কৃত করেন। পাশাপাশি তাদের বিচার থেকে রক্ষা করতে জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানের অংশ করতে সংবিধান সংশোধন করেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় এই ঘটনার সুফলভোগী জিয়াউর রহমানকে বিচারের মুখোমুখি না হতে হলেও তিনি খুনিদের নানাভাবে পুরস্কৃত করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত একাধিক খুনিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করা হয়েছে। তাদের বিচার থেকে রক্ষা করতে জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জিয়াউর রহমান সংবিধানের অংশ করতে সংবিধান সংশোধন করেন। এ কারণে ২১ বছর এই হত্যার বিচারও করা যায়নি।

আমারসংবাদ/জেডআই