Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বিতর্কিত ‘হাইব্রিড’ নেতারা কীভাবে আওয়ামী লীগে?

আমার সংবাদ ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১, ০৫:৩০ পিএম


বিতর্কিত ‘হাইব্রিড’ নেতারা কীভাবে আওয়ামী লীগে?

আওয়ামী লীগে ‘হাইব্রিড’ ও ‘কাউয়া’ শব্দটি বহুল প্রচলিত৷ তাদের তালিকা করার কথাও বলা হয়েছিল৷ তা করা হয়নি, কিন্তু হালে উপকমিটির বিতর্কিত লোকজন নিয়ে আবার শুরু হয়েছে আলোচনা৷ খবর ডয়েচভ্যালির।

রিজেন্ট সাহেদ ও হেলেনা জাহাঙ্গীরের পর এখন আলোচনায় এসেছেন জামাল হোসেন মিয়া জামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি৷ চট্টগ্রামের চোরাই গাড়ির আসামিদের তালিকায় তিনি ‘পলাতক’ এমন একজনও এখন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য

রিজেন্ট সাহেদ ছিলেন আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য৷ আর হেলেনা জাহাঙ্গীর মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য৷ এই দুইজন এখন কারাগারে আছেন

২০১৯ সালের ক্যাসিনোকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগে ‘হাইব্রিড’ ও ‘বহিরাগত’দের নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়৷ তখন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আসা হয়। সেসময় সারাদেশে আওয়ামী লীগ ও তার ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনে বহিরাগত, হাইব্রিড, বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু সেই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত তেমন এগোয়নি।

আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের উপ-কমিটি করা হয়েছিল সাবেক ত্যাগী ও যোগ্য ছাত্রলীগ নেতাদের অন্তর্ভূক্ত করার জন্য। যেহেতু আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন আর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সবাইকে জায়গা দেয়া সম্ভব হয় না। তাই সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে উপ কমিটির ব্যবস্থা চালু হয়। কিন্তু এখন সেখানে নানা ধরনের অনিয়ম হচ্ছে।’’

তার মতে, ‘‘দলের কিছু নেতার হাত ধরেই বিতর্কিত লোকজন দলের ভিতরে ঢুকছে। সাহেদ, হেলেনা জাঙ্গীর বা সর্বশেষ জামাল হোসেন মিয়ারা কাদের হাত ধরে উপ কমিটিতে ঢুকেছে এটা তো সবার জানা৷ এইসব বিতর্কিত লোকজনকে যারা দলে আশ্রয় দেন, তারা দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছেন। এটা তৃণমূল পর্যায়েও হচ্ছে। কোনো কোনো নেতা তার গ্রুপ ভারি করার জন্য এইসব কাজ করছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘এটা দুঃখজনক যে বঙ্গবন্ধুর গড়া রাজনৈতিক দলে তার আদর্শবিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বিরোধীদেরও কোনো কোনো নেতা ঠাঁই দিচ্ছেন।’’

আলোচিত জামাল হোসেন যে তথ্য ও গবেষণা উপ কমিটির সদস্য সেই কমিটির প্রধান (সম্পাদক) হলেন ড. সেলিম মাহমুদ৷ তিনি বলেন, ‘‘তিনি তো একজন আইনজীবীও। আপনারা সেটা না লিখে আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সদস্য বিষয়টিকে কেন প্রাধান্য দিচ্ছেন?

আর তিনি তো ২০১৬ সাল থেকে উপ কমিটির সদস্য।আগে ছাত্রলীগ করতেন। আমাকে আগের সম্পাদক তার নাম দিয়েছেন। আর তার বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও তিনি তো সাজাপ্রাপ্ত নন৷ স্থানীয় পর্যায়ে শত্রুতামূলক মামলাও তো হতে পারে।’’

তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের নীতি হলো কোনো বিতর্কিত লোককে দলে জায়গা না দেয়া৷ আমার হাত দিয়ে সেরকম কেউ উপ-কমিটিতে ঠাঁই পায়নি।’’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, ‘‘আমাদের নেত্রীর নির্দেশ হলো কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে আমরা দলে জায়গা দেবো না৷ কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ বা সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে আমরা দলে ঠাঁই দেই না।’’

সাব কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই কমিটি দলের সম্পাদকরা গঠন করেন। সেখানে বিশেষজ্ঞদেরও নেয়া হয়৷ শিক্ষক, প্রকৌশলী, নারী উদোক্তা- তারাও থাকেন। হেলেনা জাহাঙ্গীর নারী উদ্যোক্তা হিসেবে সাব-কমিটিতে ছিলেন। মো. সাহেদ ঘটনার সময় সাব-কমিটিতে ছিলেন না৷ আগে একবার ছিলেন৷ একটি সাব কমিটিতে ৪০ জনের মতো সদস্য থাকেন। তাদের বায়োডাটা নেয়া হয়। বায়োডাটায় তো আর বিতর্কিত বিষয় লেখা থাকে না। নেতারাও হয়তো জানেন না৷ যখন জানা যায়, তখন ব্যবস্থা নেয়া হয়।

‘হাইব্রিড’ ও ‘কাউয়া’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগে কোনো হাইব্রিড বা সুবিধাবাদী নেই৷ দুই-একজন বিচ্ছিন্নভাবে ঢুকে পড়ে। আমরা জানার পর ব্যবস্থা নিই।’’ 

আমারসংবাদ/ইএফ