Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

‘বিএনপির কারণে জিয়াকে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ১০:০০ এএম


‘বিএনপির কারণে জিয়াকে নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকবে’

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশকে পাকিস্তান করার বিএনপির উদ্দেশ্য নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড এবং এর পরবর্তী সামরিক শাসনে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলতেই থাকবে।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশের প্রসঙ্গ টেনে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের একজন নাগরিকের এইটা (বিচার চাওয়া) অধিকার, সংবিধান বলেন, সংবিধান যদি নাও থাকে, তাহলে সিআরপিসিতেও এটা জনগণের অধিকার। একটা হত্যাকাণ্ড যদি সংগঠিত হয়, একটা অপরাধ যদি সংগঠিত হয় তাহলে সে থানায় গিয়ে একটা এজাহার দায়ের করতে পারে। সেই অধিকারটুকু হরণ করে নিয়েছিলেন, ২১ বছরে এটাও কারেক্ট করেন নাই। আর আজকে আপনি বিএনপির সংসদ সদস্য হয়ে বলছেন, এই তর্ক বিতর্ক বন্ধ হোক।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক শেষ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় আইনমন্ত্রী বলেন, তর্ক বিতর্ক কীভাবে বন্ধ হবে? যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা জাতির পিতাকে জাতির পিতা হিসেবে গ্রহণ করবেন না… আপনারা গ্রহণ করেন আর না করেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তাতে কিছু আসে যায় না তার কারণ তিনি সত্যি সত্যি জাতির পিতা। বাঙালি জাতি সেটা জানে। বাঙালি জাতি সেটা ধরে রাখবেই। এই বিতর্ক চলবেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে পাকিস্তান করার যে উদ্দেশ্য বিএনপির ছিল সেটা যতক্ষণ পর্যন্ত ধুয়ে মুছে শেষ না হয়ে যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ রাজনীতি চলবে।

এর আগে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ১৫ আগস্টের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১০ বছর যাবৎ, অতীতেও শুনেছি, এই রিসেন্টলি উনি বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেদিন কোথায় ছিলেন? এটা উনি প্রশ্ন করেছেন আওয়ামী লীগের কাছে। কারণ ওই সময় যে পার্লামেন্ট ছিল সেটা আওয়ামী লীগের পার্লামেন্ট। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। এটা কী অসত্য? সেনাবাহিনীর কয়েকজন বিদ্রোহী সদস্য বঙ্গবন্ধুকে গিয়ে হত্যা করল সপরিবারে। নিঃসন্দেহে এটি অত্যন্ত মারাত্মক একটি ট্রাজেডি।

এসবে জড়িয়ে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে চলমান বিতর্ক বন্ধ রাখার প্রস্তাব রাখেন হারুনুর রশীদ।

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো সৎ সাহস দেখিয়েছেন। তিনি এটা প্রশ্ন করেছেন। তার মানেই তিনি এটা কগনিজেন্সে নিয়েছেন।

তিনি বলেন, দুঃখের কথা কী বলব, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের এখন যিনি সম্পাদক (রুহুল কুদ্দুস কাজল), তিনি বিএনপি সমর্থিত একজন ভালো ক্যাডার। তিনি উল্লেখ করেছেন, সেদিন কালুরঘাটে যদি খুনি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিত এবং পাকিস্তানি হানাদারের ওপর গুলি না চালাত, স্বাধীনতা তাহলে কোথায় থাকত সেটা তিনি উল্লেখ করেছেন। ইতিহাস নাকি অন্যরকম হতো।

এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে আনিসুল হক আরও বলেন, যারা এখনও, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে, আমরা যেখানে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি, যারা এখনও এরকম মিথ্যা কথা বলার ধৃষ্টতা দেখায়, তাদের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে কী কেউ মনে করবে? উনি যে কথাটা বলছেন, উনি যদি সেটা মনে মনে বিশ্বাস করেন, জাতিকে ধোকা দেয়া ছাড়া বিএনপির কথাটা যদি উনি বলতেন আমি খুশি হতাম। কিন্তু, উনার এই যে বক্তব্য এটা অ্যাকচুয়েলি বিএনপির জাতিকে ধোকা দেয়ার যে উদ্দেশ্য… ধোকা যেদিন সৃষ্টি হয়েছে সেদিন থেকে এই বিএনপি দিয়ে যাচ্ছে। ধোকা দেয়ার জন্য আজকে আবারও একটা পুনরাবৃত্তি করলেন।

হারুনুর রশীদকে প্রশ্ন রেখে আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে আমার প্রশ্ন, খুনি জিয়াউর রহমান যদি মুক্তিযোদ্ধা হতেন, কেউ কী তার হাতটা চেপে ধরেছিল যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না? কেউ কী তার হাতটা চেপে ধরেছিল, না ২৬ সেপ্টেম্বর যে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স করা পাস করা হয়েছিল, এটাকে বাতিল করা যাবে না? এরকম তো কেউ করেনি। তাহলে উনি এই বিচারটা কেন করলেন না?

আমারসংবাদ/জেআই