Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে যুবলীগের ঘর পেল ভূমিহীন ১০ পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১, ০৩:৪৫ এএম


প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে যুবলীগের ঘর পেল ভূমিহীন ১০ পরিবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষ্যে ভূমি ও গৃহহীন ১০ পরিবারকে ঘর উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ যুবলীগ।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও আশ্রয় কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে ১০টি ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। ঘর প্রাপ্তরা হলেন- গাজীপুরের মো: ইমান আলী, প্রেম কুমার দাস, ফাতেমা তুজ জোহরা (দুটি), আনোয়ারা বেগম (দুটি), নুর মোহাম্মদ কটু মিয়া, নরসিংদী জেলার রতন বালা, ময়মনসিংহ জেলা বিউটি খাতুন, শেরপুর জেলার মোসা: খুশবান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নেয়া ঘর প্রদান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে জানানো হয়। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, শেখ হাসিনা ছোট বেলা থেকেই সংগ্রামী ও সাহসী ছিলেন। আমরা যখন ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্টের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করি তখন তিনি আজিমপুর গার্লস স্কুলের ছাত্রী। তিনি সেখানকার ছাত্রীদের নিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করতেন। তিনি ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা আন্দোলনের অন্যতম অগ্রসৈনিক ছিলেন। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান দেশে যখন একটি অরাজকতা পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন, বঙ্গবন্ধুর খুনী ও যুদ্ধাপরাধীদেরকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব দিয়েছে, যখন কোন আইনের শাসন ছিল না সেই দুর্বিসহ সময়ে ১৯৮১ সালের ১৭ই মে তিনি দেশে ফেরেন আলোর দিশারী হয়ে।

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যুবলীগই ছিল শেখ হাসিনার একমাত্র ভ্যানগার্ড এবং এই যুবলীগই সার্বক্ষণিক শেখ হাসিনার নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছে। প্রত্যেকটি আন্দোলন সফল করতে যুবলীগের ত্যাগ-তিতিক্ষা ছিল অপরিসীম। 

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু’র জন্ম না হলে যেমন বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না, তেমনি শেখ হাসিনার জন্ম না হলে বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশের প্রত্যাশা বাংলার মানুষ করতে পারতো না। আমরা যদি শেখ হাসিনাকে না পেতাম তাহলে আমরা বাঙালিরা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা বাংলার মানুষের কাছে আসামীর কাঠগড়ায় থাকতাম। 

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৮১ সালে যেদিন শেখ হাসিনা দেশে ফিরলেন সেদিন নির্বাসন থেকে বাংলাদেশ অস্তিত্বে ফিরলো। ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি মার্কিন সাময়িকী টাইম পত্রিকায় বাংলাদেশের ওপর একটি প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে বঙ্গবন্ধু একটি আবক্ষ ছবি প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে ডান পাশে লেখা ছিল বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ সমার্থক। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছিলাম। কারণ ৭৫ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। আমরা শেখ হাসিনার জন্মদিন পালন করছি এ জন্যই যে, তাঁর কাছে আমাদের অশেষ দায়, অশেষ ঋণ।

তিনি শেখ হাসিনার গুণাবলী সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, শেখ হাসিনার শক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তাঁর সম্মোহনী শক্তি, তিনি সাহসী। শেখ হাসিনা সাহসী না হলে বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার হতো না, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো না। তিনি সাহসী না হলে পদ্মা সেতু নিজেদের অর্থায়নে তৈরি হতো না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহসী হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানাই।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম না নিলে আমরা আজ একটা মানচিত্র পেতাম না, একটা পতাকা পেতাম না, জাতীয় সংগীত পেতাম না, শেখ হাসিনা জন্ম না নিলে আমরা গণতন্ত্র পেতাম না, সামাজিক ন্যায় বিচার পেতাম না, অর্থনৈতিক মুক্তি পেতাম না, ভোট ও ভাতের অধিকার পেতাম না এবং একটা মর্যাদাশীল দেশ  পেতাম না। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে দলকে সুসংগঠিত করা, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা এবং ১৫ই আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার করার সংগ্রামে নেমেছিলেন। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য তিনি সকল দুঃখ-কষ্ট বুকে নিয়ে রাত-দিন পরিশ্রম করে সমগ্র দেশ সফর করে বেড়িয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য এবং জাতির পিতার হত্যার বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে কঠোর পরিশ্রম আর সংগ্রাম করতে হয়েছে। পুড়ে পুড়ে খাটি হয়েছেন তিনি। তাঁর জীবনের সংগ্রাম এবং স্বজন হারানোর অভিজ্ঞতা তাকে শুধু একজন ত্যাগী জননেত্রী হিসেবেই সৃষ্টি করেনি, বিশ্বের একজন অন্যতম সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।

বিএনপি-জামাতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামাত দেশে কী করেছে? জঙ্গিবাদের উত্থান, বারংবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, কৃষকের ওপর অত্যাচার, সাংবাদিকদের ওপর অত্যাচার, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার, রাজাকারের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি, মৌলবাদের উত্থান থেকে শুরু করে নৌকার ভোটারদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অতিহাস কারো অজানা নয়।

জাতিসংঘে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী'র ভাষণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সাম্যের কথা, অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা এবং সামাজিক অবিচারের কথা। বৈশ্বিক অঙ্গীকারের উদাহরণস্বরূপ তিনি টিকার ন্যায্য হিসসা এবং ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবিচারের কথা বলেছেন।

একই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ আজ দ্রুত বর্ধমান পাঁচটি অর্থনৈতিক দেশের মধ্যে একটি। বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি কয়েকটি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে-টিকা বৈষম্য দূরীকরণ, সবার জন্য ন্যায়সংগত ও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকা পাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করা, প্রবাসী ও অধিবাসীদের অধিকারের কথা, রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো ভূমিকা এবং রোহিঙ্গাদের মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা দুই প্রজন্ম ধরে এ দেশের মানুষের জন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা করে যাচ্ছেন। তার কাছ থেকে আমাদের প্রজন্মের অনেক কিছু শেখার আছে। এ দেশের যুবসমাজ জননেত্রী শেখ হাসিনা'র দেখানো পথে জনগণের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে সর্বদা সচেষ্ঠ থাকবে।

যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে বিএনপি-জামাত এদেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। তারা যুদ্ধাপরাধী এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়ে ত্রিশ লক্ষ শহীদকে অপমান করেছিল।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা বিএনপি-জামাতের সকল অপশক্তিকে রাজপথে প্রতিহত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডাঃ খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, এমপি, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মো: হাবিবুর রহমান পবন, মো: এনামুল হক খান, মো: মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মো: জসিম মাতুব্বর, মো: আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মো: বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মো: রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো: মাজহারুল ইসলাম, ডা: হেলাল উদ্দিন, মো: সাইফুর রহমান সোহাগ, মো: জহির উদ্দিন খসরু, মো: সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, এ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো: জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো: সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো: শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

আমারসংবাদ/এমএস