Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিপরীক্ষা: সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একমত হতে হবে

অক্টোবর ১৯, ২০২১, ০৯:৪৫ পিএম


গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিপরীক্ষা: সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একমত হতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নেয়া যে কত বড় দুর্ভোগের বিষয় তা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভালোভাবেই জানা আছে। ভর্তির অনিশ্চয়তা দূর করতে একজন শিক্ষার্থী কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন। পরীক্ষার সময় দেখা যায়, আজ রাজশাহী তো কাল পটুয়াখালী, তার পরদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষা রয়েছে। 

এক জায়গায় পরীক্ষা দিয়েই ছুটতে হয় আরেক জায়গায়। পথের দুর্ভোগ ছাড়াও অনেককে রাত কাটাতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গাছতলায়। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় মেয়ে শিক্ষার্থীদের। সকালে বাথরুমে যাওয়ার বা ফ্রেশ হওয়ার সুযোগ পর্যন্ত থাকে না। শিক্ষার্থীদের এমন দুর্ভোগ দূর করতে চেষ্টা করা হচ্ছিল সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তিপরীক্ষা আয়োজনের। 

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় উপাচার্যদের নিয়ে বৈঠক করেছিল। ফল হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসির উদ্যোগও কাজে আসেনি। অবশেষে সেই অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে চলতি বছরে। করোনা মহামারির মধ্যে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ২০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিপরীক্ষা নিতে শুরু করেছে। ১৭ অক্টোবর বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তিপরীক্ষায় মোট ২৮টি কেন্দ্রে এক লাখ ৩১ হাজার ৯০৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তিপরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

এমন সমন্বিত পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকরাও অনেক খুশি। যাতায়াত, ঘুম-থাকা-খাওয়ার দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি আর্থিকভাবেও তাদের অনেক সাশ্রয় হয়েছে। তারপরও কিছু দুর্ভোগ থেকেও গেছে। সবাই চান বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে। কিন্তু দেশের পাঁচটি বড় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এই গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশ নেয়নি। ফলে অনেক শিক্ষার্থীকে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটতেই হবে। তারপরও ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত ভর্তিপরীক্ষা তাদের কাছে একটি বড় প্রাপ্তি। একটিমাত্র পরীক্ষার মাধ্যমেই তারা মেধাক্রম ও পছন্দ অনুযায়ী ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো একটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিপরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যমে অনেক লেখালেখি ও আলোচনা হয়েছে। 

কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য কারণে সেই সমন্বিত পরীক্ষা এতদিন পর্যন্ত গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ বছর যে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় বহু কাঙ্ক্ষিত সেই কাজটি সম্পন্ন করছে, তাদের স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করছি, যে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসেনি, তারাও শিগগির এই পদ্ধতিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় মিলে যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তিপরীক্ষার ব্যাপারে ঐক্যমত্যে পৌঁছে তাহলে তা সবার জন্যই মঙ্গলজনক হবে।