Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

নিশ্চিত করতে হবে অর্থের নিরাপত্তা

অক্টোবর ২২, ২০২১, ০৬:০০ পিএম


নিশ্চিত করতে হবে অর্থের নিরাপত্তা

বাংলাদেশের টাকা বাংলাদেশের ব্যাংকে থাকে না। বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছরই টাকা পাচারের পরিমাণ বাড়ছে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে দেশ থেকে টাকা পাচারের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। 

সম্প্র্রতি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ মোট ছয় দেশে বিপুল অর্থপাচারের তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ ডলারের তথ্যও রয়েছে এ প্রতিবেদনে। তবে এ ঘটনায় অপরিচিত হ্যাকাররা অভিযুক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সিআইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিজার্ভ চুরির ৮ কোটি ১০ লাখ ইউএস ডলার যায় ফিলিপাইনে এবং দুই কোটি ইউএস ডলার শ্রীলংকায় পাচার করা হয়। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছে তিন কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলারের মতো। তালিকায় উল্লিখিত বাকি সাতটি মামলায় পাচারকৃত মোট অর্থের পরিমাণ ৩১০ কোটি ৮০ লাখ ১৪ হাজার ৭৪৬ টাকা। ভবিষ্যতে বাকি অর্থ উদ্ধারে তা কতটুকু ভূমিকা রাখবে, সে প্রশ্ন খুবই সঙ্গত। 

বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে, তা সহজেই অনুমেয় এবং এর ফলে এ দেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে, সেটাও সহজেই পরিমেয়। বিদেশে অর্থপাচারের কারণে এ দেশের সর্বনাশ হচ্ছে। প্রতিবছর বিপুল অর্থপাচার হচ্ছে, এর সঙ্গে কিন্তু সমাজের উঁচু স্তরের ব্যক্তিরাই জড়িত। প্রতিবছরই যে পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে, তা যদি দেশে বিনিয়োগ হতো, তা হলে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে আরও উন্নতির পথে যেত এবং শিল্পসমৃদ্ধ দেশেই পরিণত হতো।

 এই ক্ষতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি দুদক ও এনবিআরসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঠিক এবং যথাযথ নজরদারি বাড়াতে হবে। বাংলাদেশি বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে সুইস ব্যাংকসহ গোপনে বিদেশে পাচার করা অর্থ অবিলম্বে ফেরত আনতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়াও জরুরি। 

সর্বোপরি অর্থপাচারের সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের অর্থসংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার সব ছিদ্র বন্ধ করতে হবে, নিশ্চিত করতে হবে অর্থের নিরাপত্তা। এ জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই। সরকার এ ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এটাই প্রত্যাশা।