Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা বাড়ছেই

ডিসেম্বর ৩, ২০২১, ০৭:২৫ পিএম


চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা বাড়ছেই

বর্তমানে সড়কে কোনো শৃঙ্খলা নেই। ঘর থেকে বের হয়ে আবার যে ঘরে ফেরা যাবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। বেপরোয়া গতির বাস, ট্রাক বা অন্য কোনো গাড়ি যেকোনো সময় আপনাকে চাপা দিয়ে চলে যেতে পারে। 

কদিন আগে সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থীকে চাপা দিলে তার মৃত্যু হয়। এর প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আবার রাস্তায় নামেন। এ দুই দাবিতে চলা আন্দোলনের মধ্যেই রাজধানীর রামপুরায় আরেক শিক্ষার্থীকে চাপা দেয় অনাবিল পরিবহনের একটি বাস। 

প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এসএসসির ফল প্রত্যাশী মাঈন উদ্দিন দুর্জয় তার ভগ্নিপতির সঙ্গে রাস্তা পার হচ্ছিল। এ সময় প্রতিযোগিতা করে চালানো বাসটি দুর্জয়, তার ভগ্নিপতি ও অন্য একজনকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। দুর্জয় ঘটনাস্থলেই মারা যায়। 

অন্য দুজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়। জনতা বাসটি আটক করলেও চালক ও সহকারী পালিয়ে যান। ক্ষুব্ধ জনতা পরে সেই বাসটিসহ অন্তত আটটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার ভোরে পালিয়ে যাওয়া ওই গাড়ির চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবারও ছাত্রছাত্রীরা কয়েকটি সড়ক অবরোধ করে রাখে। ফলে শহরজুড়ে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। 

এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সড়কে যানবাহন চালকদের স্বেচ্ছাচারিতা ক্রমেই বাড়ছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, দুই বাস পরস্পরকে আটকে রেখে যাত্রী তোলার চেষ্টা কিংবা প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। ফলে দুর্ঘটনার নামে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটছে। 

এর আগে ২০১৮ সালে বিমানবন্দর সড়কে এভাবে দুই শিক্ষার্থী হত্যার পর ছাত্ররা রাস্তায় নেমে এসেছিল। তখন রাজধানী কার্যত অচল হয়ে গিয়েছিল। তারপর তাড়াহুড়ো করে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছিল। আইনটির দুর্বলতা নিয়ে অনেক সমালোচনা আছে; কিন্তু আইনে যা আছে, তারও সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। 

সড়কে নৈরাজ্যের কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বেপরোয়া গতি, চালকদের প্রশিক্ষণের অভাব, বৈধ লাইসেন্স না থাকা, নেশাগ্রস্ততা, অতিরিক্ত কাজের চাপ ইত্যাদি।

এসব অনিয়ম রোধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার চালকদের ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করতে হবে; পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদেরও শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে— এটাই সাধারণের প্রত্যাশা।