Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রণোদনার ঋণ জালিয়াতি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

ডিসেম্বর ৪, ২০২১, ০৮:০০ পিএম


 প্রণোদনার ঋণ জালিয়াতি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে

করোনার নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনা ঋণের ব্যবস্থা করেছিল। কিন্তু এ ঋণ নিয়ে বেশ কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান জালিয়াতি করেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ পেতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছেন একশ্রেণির ব্যাংক কর্মকর্তা। তাদের সহায়তায় কম সুদের প্রণোদনার ঋণ নিয়ে তা দিয়ে বেআইনিভাবে অন্য খাতের বেশি সুদের ঋণ পরিশোধ করা হয়েছে।

কয়েকটি ব্যাংক আবার আগের ঋণ শোধ করার শর্তেই সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ঋণ পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। প্রণোদনা ঋণের অপব্যবহারের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক তদন্ত প্রতিবেদন থেকে উঠে এসেছে এসব তথ্য। প্রতিবেদনগুলো এখন সমন্বয় করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

প্রণোদনা দেয়া হয়েছিল অর্থনীতির ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে। এর শর্তও ছিলো। প্রণোদনা ঘোষণার সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল— এ ঋণ শুধু সংশ্লিষ্ট খাতে চলতি মূলধন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এ ঋণ অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না, কিংবা আগের কোনো ঋণ পরিশোধ বা সমন্বয়, শিল্পপ্রতিষ্ঠান সম্প্রসারণ বা সংস্কার ইত্যাদি কাজেও ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু এসব শর্ত ভঙ্গ করা হয়েছে।

আমরা মনে করি, যেসব ব্যাংক শর্ত ভঙ্গ করে ঋণ দিয়েছে এবং যারা এই ঋণ অন্য খাতে ব্যবহার করেছে— দু’পক্ষেরই শাস্তি হওয়া উচিত। একই সঙ্গে নগদ যে অর্থ তুলে নেয়া হয়েছে, তা কোথায় কীভাবে স্থানান্তরিত হয়েছে— তারও তদন্ত হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা বলেছে, তার বাস্তবায়নও জরুরি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, প্রণোদনার নীতিমালা অনুযায়ী এ ঋণের সুদ বাবদ সাড়ে ৪ থেকে ৫ শতাংশ সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ভর্তুকি হিসাবে জোগান দেয়া হচ্ছে; কিন্তু যারা ঋণ নিয়ে তার অপব্যবহার করেছেন, তারা সুদের ভর্তুকি পাবেন না। অর্থাৎ, তাদের ৯ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। 

প্রণোদনার ঋণের টাকা নগদ আকারে উত্তোলনের পর সেই টাকার একটি অংশ শেয়ারবাজারে গেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। কিছু টাকা ভোগবিলাসেও খরচ হয়ে থাকতে পারে, দেশের বাইরেও পাচার হতে পারে। আমরা মনে করি, পুরো বিষয়টির বিশদ তদন্ত হওয়া দরকার।

দ্বিতীয়ত, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী কোনো একক হিসাব থেকে একদিনে ১০ লাখ টাকার বেশি অর্থ নগদ আকারে তোলা হলে ক্যাশ ট্রানজেকশন রিপোর্ট বা নগদ লেনদেন প্রতিবেদন আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটে জমা দিতে হয়। প্রণোদনার ঋণের ক্ষেত্রে অনেক গ্রাহক ১০ লাখের বেশি টাকা নগদ আকারে তুলে নিলেও আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটে এর প্রতিবেদন পাঠানো হয়নি। এটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ। এ অপরাধেরও উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত।