Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫,

জয়ের নাম রাখার ইতিহাস জানালেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

জুলাই ২৭, ২০১৭, ০২:৪১ পিএম


জয়ের নাম রাখার ইতিহাস জানালেন প্রধানমন্ত্রী

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৪৭তম জন্মদিন ছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময় অবরুদ্ধ ঢাকায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা দম্পতির প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। ছেলের জন্মদিনে তার নাম রাখার ইতিহাস নেতা-কর্মীদের সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ দিন প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময় ছেলের নামকরণের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন, তার পরপরই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল। এর কিছুদিন পরে মা, জামাল, রেহানা, রাসেলসহ ধানমন্ডির পুরনো ১৮ নম্বরের একটি একতলা বাড়িতে গৃহবন্দি করে রাখা হলো। বন্দিখানায় ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে ফ্লোর, সেখানে আমাদের থাকতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম, খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো হতো না। জয়ের জন্মের সময় আমার মা হাসপাতালে যেতে চেয়েছিল, কিন্তু তাকে যেতে দেয়া হয়নি। মা যখন যেতে চেয়েছে তখন পাকিস্তানি সেনা অফিসার বলেছিল, আপনি তো নার্সও না ডাক্তারও না আপনি গিয়ে কি করবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাই হোক ওই অবস্থায়ই জয়ের জন্ম হয়। জয়ের জন্মের পর বন্দিখানার মধ্যে আমরা কিছুটা হলেও সজীবতা পেয়েছিলাম বলে মা তার নাম রেখেছে সজীব।

তিনি বলেন, ১৯৭১ এর ২৩ মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল। বাবা বলেছিলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, আমি থাকতে পারব কিনা জানি না, দেখতে পারব কিনা জানি না। স্বাধীনতা আমরা অর্জন করবই। আমি সে ব্যবস্থার সবই করে রেখে গেছি। তোর ছেলে হবে, সে স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হবে। সে ছেলে হলে তার নাম জয় রাখবি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাইব, জয়ের জন্য দোয়া করবেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারের নিহত হওয়ার সময় মা শেখ হাসিনার সঙ্গে লন্ডনে ছিলেন জয়। পরে মায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন ভারতে। সেখানেই তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে।

নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে লেখাপড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক করেন জয়। পরে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার বিষয়টি নিয়ে আসেন জয়। আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকে দেশে তথ্য-প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ শুরু করেন তিনি।

২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সজীব ওয়াজেদ জয়কে তার পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে নামেন।

২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। ২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর বিদেশি ক্রিস্টিন ওভারমায়ারকে বিয়ে করেন জয়। সোফিয়া নামে এই দম্পতির একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।