জানুয়ারি ২৯, ২০১৫, ০৬:০৭ এএম
ছুটির ঘন্টা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে এক সময়ের সবচেয়ে বেদনাবিধূর ও ব্যবসা সফল ছায়াছবির নাম ছিলো ‘ছুটির ঘন্টা’। এই ছবির করুণ কাহিনীরই যেনো পুন: অবতারণা ঘটলো বুধবার কলারোয়ার একটি প্রাইমারি স্কুলে। ঘটনাস্থলটি হলো উপজেলার আলাইপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুল।
জানা যায, বুধবার এই স্কুলে ছুটি দেয়া হয় নির্ধারিত সময়ের এক ঘন্টা আগে বেলা ৩ টার দিকে। স্কুল ছুটির আগে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শারমিন নামের এক ছাত্রী ল্যাট্রিনে যায়।
আগে ভাগে ছুটি হওয়ায় স্কুলের পিয়ন অফিস, শ্রেণিকক্ষসহ ল্যাট্রিনে তালা দিয়ে চলে যান।
কিন্তু স্কুলের ল্যাট্রিনে সে সময় অবস্থান করছিলো শারমিন (৯) নামে স্কুল ছাত্রী। ফলে সে সেখানে আটকা পড়ে যায় ওই ছাত্রী।
জানা গেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক কলারোয়া ফুটবল ময়দানে অনুষ্ঠিত প্রাইমারি স্কুল পর্যায়ের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দায়িত্বরত ছিলেন। শারমিন তার নানা আলাইপুর গ্রামের রহিম বকসের বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করে। সে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে।
স্কুল শেষে আশপাশের সকল ছেলে-মেয়ে বাড়িতে ফিরলেও ফেরেনি শারমিন। শারমিনের মা-মেয়ে বাড়িতে না আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
কেননা, মেয়েটির মুর্ছা যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মা সবখানে খুঁজেও মেয়েকে না পাওয়ায় বিকেল ৫ টার দিকে চলে আসেন স্কুলে। স্কুল পিয়নের দিয়ে স্কুলের কক্ষ খোলা হয়। তৃতীয় শ্রেণির কক্ষে প্রথমে পাওয়া যায় শারিমিনের বইপত্র।
তারপর সন্দেহের বশে খোলা হয় ল্যাট্রিনের তালা। আর ল্যাট্রিনের তালা খোলা মাত্র সেখানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় শারমিনকে। পরে যদিও তার জ্ঞান ফিরে আসে। এ বিষয়ে আলাপকালে সদর ক্লাস্টারের দায়িত্বরত উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, বিকেল সোয়া ৪ টায় স্কুল ছুটি হয় এবং ওই মেয়েটিকে বিকেল ৫ টার দিকে ল্যাট্রিন থেকে উদ্ধার করা হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক হেনা বানু জানান, ঘটনার সময় তিনি কলারোয়া ফুটবল ময়দানে স্কুল পর্যায়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি আরও জানান, ঘন্টাখানেকের মতো মেয়েটি ল্যাট্রিনে আটকা পড়ে ছিলো।
স্কুলের পিয়ন তাকে উদ্ধার করেছেন ও বর্তমানে মেয়েটি সুস্থ আছে। ‘ছুটির ঘন্টা’র নতুন অধ্যায় থেকে মুক্ত হওয়া এই মেয়েটিকে দেখতে আলাইপুর গ্রামে শত শত গ্রামবাসী ভিড় জমান।