Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন

এম. রনি ইসলাম

ডিসেম্বর ৫, ২০২১, ০৭:১৫ পিএম


 স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন

হিন্দু-মুসলিম দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে জন্ম নেয় পাকিস্তান নামক নতুন রাষ্ট্র। এতে বিভাজিত হয় বাঙালি জাতির ভৌগোলিক সীমানা। ব্রিটিশ উপনিবেশের কড়াই থেকে পূর্ববাংলার বাঙালি জনগোষ্ঠী গিয়ে পড়ে পশ্চিম পাকিস্তানি ভূস্বামীদের নব্যউপনিবেশে, জ্বলন্ত অগ্নিকুণ্ডে।

মেনে নিতে পারেনি সচেতন বাঙালি সমাজ। বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন ও জাতিসত্তার অস্তিত্বের প্রশ্নে দ্বন্দ্বের পরিণতি হিসেবে মাতৃভাষার অধিকারের বিষয়টি সবার আগে সামনে চলে আসে। 

জাতীয় পরিষদে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সংখ্যাগরিষ্ঠের ভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবির ভেতর দিয়ে বাঙালির জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটতে শুরু করে। রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে জিন্নাহের উর্দুর ঘোষণা বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তোলে। আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে ছাত্র-শিক্ষক-সচেতন জনসমাজ। বায়ান্নতে রক্ত ঝরে রাজপথে। বাঙালির জাতীয় মুক্তি আন্দোলন একটি সুস্পষ্ট গতিপথ অর্জন করে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তখন উপনিবেশবিরোধী জাতীয় মুক্তি আন্দোলন এশিয়া আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের প্রভাবে দ্রুত বিশ্বের উপনিবেশ ব্যবস্থার পতন ও স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার হিড়িক পড়ে যায়। আর তারই আলোয় আলোকিত অগ্রসর বাঙালি সমাজ পশ্চিম পাকিস্তানি শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে অবস্থান নেয়। 

তাদের চিন্তায়, কর্মে ও লেখনীতে মূর্ত হয়ে ওঠে মুক্তচিন্তার দ্যুতি। একটি শোষণ বঞ্চনাহীন অসামপ্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের স্বপ্নে বিভোর বুদ্ধিজীবী মহল মুক্তিসংগ্রামের তাত্ত্বিক পথপ্রদর্শক হয়ে ওঠেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের ভেতরে জারিত চেতনার স্ফুলিঙ্গকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনপুঞ্জের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠেন তাঁরা। 

তাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ড, কবিতা, গল্প, নাটক, স্লোগান, প্রবন্ধ সাগরমুখী নদীর মতো একমুখী হয়ে ওঠে। রাষ্ট্র ভাষা বাংলা ও জাতিসত্তার অস্তিত্বের জন্য চাই স্বাধীনতা। তাইতো পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছিল যার গৌরবময় অধ্যায় ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬-এর শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ। আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ঠ অধ্যায় হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, যার মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ, একটি নতুন মানচিত্র আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জায়গা করে নেওয়া রুপকথার গল্পের মতো সুন্দর রোমাঞ্চকর কোন গল্প ছিলো না। 

এর সাথে যেমন জড়িয়ে  আছে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর নির্মম অত্যাচার ও নিপীড়নের কালো অধ্যায় তেমনি রয়েছে বীর বাঙালির সশস্ত্র সংগ্রাম ও প্রতিবাদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। আমাদের স্বাধীনতার জন্য ত্রিশ লক্ষ মানুষের তাজা রক্ত বিসর্জন দিতে হয়েছে, সম্ভ্রম হারাতে হয়েছে অগণিত মা বোনকে। রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল আমাদের সবুজ শ্যামল প্রান্তর। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। 

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। বাঙালি জাতির জন্য সবচেয়ে আনন্দের মাস এ মাস। তারচেয়েও বড় কথা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি রাষ্ট্রকে যখন ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল, ঠিক তখনই স্বাধীনতা বিরোধী, পরাজিত শক্তি বাঙালির স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাংলাদেশকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তাদের চক্রান্ত সফল হয়নি। বিগত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ এগিয়েছে অনেক। 

একসময় যে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উপহাস করা হতো সেই বাংলাদেশ আজ এশিয়ার একটি সম্ভাবনাময় দেশ। ১৯৭১ সালে সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বার্ষিক বাজেট আজ পরিণত হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেটে। সেদিনের ১২৯ ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশটিতে বর্তমান মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৫৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। 

সময় পেরিয়েছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশও এগিয়েছে। আমাদের বৃদ্ধি এবং প্রবৃদ্ধি সময় ও প্রত্যাশার সঙ্গে সংগতি রেখেই ঊর্ধ্বগতি পেয়েছে। মাথাপিছু আয়, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ ও দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধি, বৈদেশিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও ব্যবহার এবং সম্পদ উৎপাদন ও আহরণ দৃশ্যমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, সে কথা নির্মোহভাবেই বলা যায়।

বাংলাদেশ এখন এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ১৩তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারে গত দুই যুগে সিঙ্গাপুর ও হংকংকে ছাড়িয়ে আজকের অবস্থানে উঠেছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে যেখানে দেশে দেশে প্রবৃদ্ধির গতি ব্যাহত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের ওপরে রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ করেছে এবং মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ করেছে। 

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের(এডিবি) প্রতিবেদনমতে, গত দেড় যুগে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনে অগ্রগতি তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু রোধ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। শ্রমশক্তিতে কর্মক্ষম মানুষের অংশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। দেশে সাক্ষরতার হার ৭৪ দশমিক ৭ শতাংশ।

সরকার এসডিজি এবং জাতীয় অঙ্গীকারের ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা(২০১৬-২০২০) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। যার মধ্যে সাক্ষরতা বিস্তার, দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ এবং জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে জনগণের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৭২.৩ বছর। প্রাথমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার কমে যাওয়ায় শিক্ষার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। 

২০১৯ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা ছিলো ২২,৫৬২ মেগাওয়াট, দেশের ৯৪ শতাংশ জনগণ এখন বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। আইসিটি খাতে রপ্তানি বিষয়টি অবাস্তব মনে হলেও ২০১৯ সালে আইসিটি খাতে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। 

অন্যান্য রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। রেমিট্যান্স আয় ১৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। খাদ্যে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে অনেক আগেই। ২০১৯ সালে দেশের খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিলো ৪ কোটি মেট্রিক টন। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বৈদেশিক বিনিয়োগ ছিলো ৩৬০ কোটি ডলার, যা উন্নয়নের আরেক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত। 

গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজধানীতে ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেট্রোরেল স্থাপন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যা ১৬টি স্টেশন ঘণ্টায় প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রাখবে। বাঙালির স্বপ্নের সেতু ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু’র কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে, যা নিজস্ব বাজেটেই সম্পন্ন হচ্ছে। বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু ১’ স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ। যেকোনো সময় জরুরি ভিত্তিতে সেবা পেতে আধুনিক বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও চালু হয়েছে ইমার্জেন্সি সার্ভিস ‘৯৯৯’ কল সেবা। এছাড়া জনগণের সেবাদানে অন্যান্য কল সেবাগুলো চালু হয়েছে; দুদক, নারী নির্যাতন বা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, সরকারি তথ্যসেবা, স্বাস্থ্য বাতায়ন, দুর্যোগের আগাম বার্তা, জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য ও মানবাধিকার সহায়ক কল সেন্টার। 

এসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বলা যায়, একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে একটি আধুনিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবেই পালন করছে বলে প্রতীয়মান হয়। তবে বাস্তবিক অর্থে একটি দেশের প্রকৃত সমৃদ্ধি বা অগ্রগতি নির্ভর করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকের ওপর, যা সাধারণত পরিসংখ্যানের নজর কাড়তে পারে না। জনগণের জীবনযাত্রার বাস্তব রূপ, ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, জীবনমুখী-কর্মকেন্দ্রিক মানসম্মত শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও গবেষণা, কর্মসংস্থান প্রভৃতি বিষয়গুলো উন্নয়নের প্রকৃত চিত্র প্রদর্শন করে। 

স্বাধীনতার অর্ধশতক পরে একদিকে যেমন মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে অন্যদিকে সমাজে শ্রেণিবৈষম্য বেড়েছে সাগর সমান দূরত্বের বহরে। প্রবৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতি কিংবা মাথাপিছু আয় অর্থনৈতিক সক্ষমতার সূচক হলেও আধুনিক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার প্রভাবে বাংলাদেশের সমাজেও ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বেড়েছে, বেড়েছে সামাজিক অস্থিশীলতা এবং নিরাপত্তাহীনতা।

দেশের আর্থিক খাতের দুটি দুষ্ট খাত হলো খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচার। এ দুটির মধ্যে আবার পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-এর সেপ্টেম্বরের শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। তালিকার শীর্ষে থাকা ২৫ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮০ হাজার ৩৫০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। যার মধ্যে ৪২ হাজার ২২১ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পাঁচ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের। অর্থ পাচার রোধে দেশে শাস্তির বিধান থাকা সত্ত্বেও কেন এ পাচার বন্ধ হচ্ছে না, তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা জরুরি। বস্তুত, দুর্নীতি বেড়েছে বলেই অর্থ পাচারের হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাজনীতির ঘনিষ্ঠ সহযোগী। 

এছাড়াও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশসহ বেশকিছু ক্ষেত্রে এখনও সমস্যা রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের পরম লক্ষ্য ছিলো গণতন্ত্র, জনগণের মৌলিক অধিকার, বাক-ব্যক্তি, সংবাদমাধ্যম ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং ভিন্নমতকে শ্রদ্ধা করা। 

এসবকে ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেই আপামর জনসাধারণ সেদিন অস্ত্র হাতে শত্রুর মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, যে রাষ্ট্রে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত হবে পূর্ণ মানবিক মর্যাদা এবং সুযোগের সমতার ভিত্তিতে। কোনো ধর্ম-গোত্র বা অন্য কোনো ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগত বিভাজনের চেতনা তাদের মধ্যে ছিলো না। বিগত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশ যতদূর এগিয়েছে তা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য পরম গৌরব ও আনন্দের বিষয়। 

তবে দুর্নীতি রোধ, মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ, উচ্চশিক্ষাকে গবেষণামুখী করা একটি দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্রত্যাশা উপর্যুক্ত সমস্যাগুলি মোকাবিলা করে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হওয়ার পাশাপাশি আগামীতে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিত হবে। 

লেখক : শিক্ষার্থী, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা