Amar Sangbad
ঢাকা সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫,

বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

ড. মিল্টন বিশ্বাস

ডিসেম্বর ১৯, ২০২১, ০৭:৩৫ পিএম


বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এবারের বিজয় দিবস উদযাপিত হলো। ইতিহাসের এই বিশেষ দিনে বঙ্গবন্ধুর দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে মানুষের এগিয়ে চলার মহামন্ত্র বিশ্ববাসী নতুন করে শুনতে পাচ্ছে। রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলন থেকে শুরু করে পাকিস্তানি অপশাসনবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনের সেই অনিবার্য চেতনা আমাদের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনে যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধন করেছে।

‘মুক্তি’ আন্দোলনের গণজাগরণ ও সংগ্রামী চেতনার স্পর্শে এক অপরিমেয় সম্ভাবনায় উজ্জীবিত হয়ে উঠেছিল আমাদের জনতা। সেই উজ্জীবনী শক্তি একাত্তরের রক্তস্নাত অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে বর্তমান সময়েও সচল। সংগত কারণেই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতিতে মুক্তিযুদ্ধের অবদানকে নতুন করে মূল্যায়ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। যুদ্ধোত্তরকালে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ঘটনা সদ্য স্বাধীন দেশের বাস্তবতায় ছিলো ভয়ঙ্কর ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ সময় থেকে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের নবতর অভিযাত্রা ব্যাহত হয়।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রকাঠামো পেয়েছি। যে রাষ্ট্রের ভিত্তি গণতন্ত্র, সামাজিক সাম্য এবং মৌলিক অধিকার চর্চা। আজ আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে উচ্চ মর্যাদায় অভিষিক্ত। যে রাজনৈতিক সংগ্রাম আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে এই রাষ্ট্রের জন্ম সেই ইতিহাসকে যথাযথ উপলব্ধি করাই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। 

যুগান্তকারী সব পরিবর্তন-সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হওয়ার পরই আবার রুদ্ধ হয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের মুক্ত চেতনা, গণতন্ত্র ও শিল্পবিপ্লবের অবাধ বিকাশ হয় প্রলম্বিত। দীর্ঘ ২১ বছর পর পুনরায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন, জয় বাংলা ধ্বনিত হলো এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে স্বমহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হলো। 

আর ২০০৮ ও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে একাধারে সাড়ে ১২ বছর ক্ষমতায় থাকায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আপামর জনগণের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্ম তথা আড়াই কোটি তরুণ ভোটার আজ উজ্জীবিত। এ জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলে থাকেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা যায়। 

তার মতে, সংবিধান ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে সামগ্রিক উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। ‘মুজিববর্ষে’ এ কথার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি বলেছেন, ‘আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। জাতির পিতা স্বপ্ন দেখেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের। আমি সেই লক্ষ্যে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছি’। 

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা হয়েছিল। আর সেই চেতনা পুনরুদ্ধারে সক্ষম হয়েছেন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে একজন রাষ্ট্রনায়কের প্রধান কর্তব্য জনগণের সেবা করা যা বঙ্গবন্ধু তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংগ্রাম আর সরকারপ্রধান হিসেবে দেখিয়ে গেছেন। দেশপ্রেমিক শাসক আর জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার লালন করার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রকাশ পায়। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে গেছে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের পরও আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে নির্মূল করতে পারিনি।

এদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আ.লীগের দিক থেকে উত্থাপিত হয়েছে বারবার। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বকারী বঙ্গবন্ধু ও আ.লীগ নিঃসন্দেহে রাজনৈতিক মতাদর্শের দিক থেকে প্রগতিপন্থি। কেননা আমরা তাদেরই নেতৃত্বে স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু বিএনপির স্লোগানই হচ্ছে গণতন্ত্র। আর সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপির প্রধান সহযোগী হচ্ছে জামায়াতে ইসলাম। গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা কি সম্ভব? শুধু তাই নয়, বিএনপির নিজের ভাবমূর্তি গণতান্ত্রিক কি? গত ১২ বছরে তাদের সুযোগ ছিলো বিরোধী দল হিসেবে জনগণের আস্থার জায়গা তৈরি করা। বিশেষ করে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ, ১৫ আগস্টের নির্মমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বর্জন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের দল থেকে বহিঃষ্কার করা— তবেই তাদের দলীয় ভাবমূর্তি স্বচ্ছ হতো।

গণতন্ত্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম অনুধ্যান। কারণ আমাদের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির একেবারে মর্মমূলে রয়েছে গণন্ত্রের আদর্শ। বাঙালির গণতান্ত্রিক চেতনাকে যখন রুদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল তথাকথিত পাকিস্তান, তারই প্রতিবাদে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী দলকে একাত্তরে ক্ষমতায় যেতে দেয়া হয়নি বলে গণযুদ্ধ হয়েছিল। এটা তাৎক্ষণিক কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি কারণ। অবশ্য গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বাংলাদেশের মানুষকে বঞ্চিত করার ঘটনা অনেকদিনের। সেই ইতিহাসে বাংলাদেশের মানুষকে, নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে অংশগ্রহণ করতে হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ ও আপসহীন নেতৃত্বে ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-এর ৬ দফা, ৬৯-এর ১১ দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আ.লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। ফলে বৈধ ভিত্তি পায় বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা। আবার এ কথাও সত্য যে, দীর্ঘ ৫০ বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ ছিলো না। কখনো একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় আর একাধিকবার সামরিক অভ্যুত্থানে পিছিয়ে পড়েছে এদেশ। 

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ও মুক্তির যে ডাক তিনি দিয়েছিলেন সেখান থেকে যাত্রারম্ভে অতীতের সংগ্রামের ইতিহাসকে স্মরণ করে ভবিষ্যৎপ্রসারি করতে হবে দৃষ্টিভঙ্গিকে। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণা করে মুজিবনগর সরকার।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রথম বাংলাদেশ সরকার হিসেবে খ্যাত এই সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছিল, ‘১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল। সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সে ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করছি’।

সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত ‘বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। অন্যদিকে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চারটি মূলনীতিও আমাদের মুক্তিসংগ্রামের অংশ। উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয় বাংলাদেশের সংবিধান। 

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও সংবিধান অনুসারে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হলো স্বাধীনভাবে আমাদের বেঁচে থাকা; ব্যক্তিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক মুক্তি, সকল মৌলিক অধীকার সমানভাবে নিশ্চিত করা; অর্থাৎ বৈষম্যহীন, মুক্ত এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন, রাষ্ট্রে বলিষ্ঠ জাতি হিসেবে আমাদের বিকাশের সুযোগ থাকা এবং রাষ্ট্রে বেড়ে ওঠা আমাদের মানবসত্তা বিশ্বে মর্যাদা পাওয়া— সব মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। কিন্তু সেই চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য কেবল রাষ্ট্রীয় নিয়মনীতি, আইনকানুন প্রণয়ন ও প্রয়োগই যথেষ্ট নয়; তার জন্য সামগ্রিক এবং নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ প্রয়োজন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘নেশন মাস্ট বি ইউনাইটেড অ্যাগেইনস্ট করাপশন। পাবলিক ওপিনিয়ন মবিলাইজ না করলে শুধু আইন দিয়ে করাপশন বন্ধ করা যাবে না’। স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্নীতি দমন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময় বহুবিধ আইন, বিধি-বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর আরও কিছু নতুন আইন প্রণয়ন করেছে, প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার উন্নয়নে বেশ কিছু নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এবং এগুলোর ব্যবস্থাপনা ও পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০১১-২০১৫) শেখ হাসিনা সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি দমনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। ‘রূপকল্প-২০২১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রণীত ‘বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২০২১’ শীর্ষক দলিলে দুর্নীতি দমনকে একটি আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। এই আন্দোলনে সবাইকে অংশীদার হতে উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ বলতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হওয়া ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বাংলাদেশকে বুঝতে হবে। এই বাংলাদেশে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণীত হয়েছে। যে শিক্ষানীতি ২০১০-এ ছাত্রদের চরিত্র গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। 

শিক্ষানীতির শিক্ষার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য তিন অংশে বলা হয়েছে : ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করে তোলা ও তাদের চিন্তা-চেতনায় দেশাত্মবোধ, জাতীয়তাবোধ এবং তাদের চরিত্রে সুনাগরিকের গুণাবলি (যেমন : ন্যায়বোধ, অসামপ্রদায়িক চেতনাবোধ, কর্তব্যবোধ, মানবাধিকার সচেতনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা, সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা, সৌহার্দ্য, অধ্যবসায় ইত্যাদি) বিকাশ ঘটানো হবে। 

অর্থাৎ জাতীয় শিক্ষানীতিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত’। বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়নমূলক অনেক কাজ ত্বরান্বিত হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে জাতিকে উপহার দেয়া হবে নতুন ভিশন— নতুন প্রেক্ষিত পরিকল্পনা রূপকল্প-২১০০। আর ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে এক শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, সুখী এবং উন্নত জনপদ। সুশাসন, জনগণের সক্ষমতা ও ক্ষমতায়ন হবে এই অগ্রযাত্রার মূলমন্ত্র। 

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রকাঠামো পেয়েছি। যে রাষ্ট্রের ভিত্তি গণতন্ত্র, সামাজিক সাম্য এবং মৌলিক অধিকার চর্চা। আজ আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে উচ্চ মর্যাদায় অভিষিক্ত। যে রাজনৈতিক সংগ্রাম আর ত্যাগের মধ্য দিয়ে এই রাষ্ট্রের জন্ম সেই ইতিহাসকে যথাযথ উপলব্ধি করাই হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

 এই চেতনার মধ্যে গণতান্ত্রিক দাবি আদায়ের আদর্শ রয়েছে, মুক্তির স্বপ্ন আছে আর আছে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ না করার মূল্যবোধ। অন্যদিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, অসামপ্রদায়িকতা, সাম্য ও মানবাধিকার আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের অগ্রগতির অন্যতম অনুপ্রেরণা যা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অন্যতম অনুষঙ্গ।

লেখক : ইউজিসি পোস্ট ডক্টরাল ফেলো, লেখক, কবি, কলামিস্ট, অধ্যাপক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।