Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

রাণী এলিজাবেথের শরীরে বইছে মহানবীর রক্ত!

ধর্ম ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২১, ০৫:২৫ এএম


 রাণী এলিজাবেথের শরীরে বইছে মহানবীর রক্ত!

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের শরীরে বইছে স্বয়ং ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) রক্তধারা- এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিককালের একটি গবেষণায়। ইতিহাসবিদের এমন মন্তব্যে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। 

সম্প্রতি মরক্কোর একটি সংবাদপত্র এ নিয়ে রিপোর্ট করায় বিষয়টি সামনে আসে। 

যদিও এই তথ্য নতুন কিছু নয়, কারণ এর আগে  ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে। সেই সময় ব্রিটেনের রাজ পরিবারের বংশতালিকায় বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছিল। বুর্কে’স পিরেজ নামের একটি ব্রিটিশ রাজবংশ তালিকা সংরক্ষণকারী সংস্থা বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করে।

তবে মরক্কোর একটি সংবাদপত্রে প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়।

তবে কী বলছে গবেষণা? 

সাম্প্রতিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে সরাসরি রক্তের সম্পর্ক রয়েছে মধ্যযুগের স্পেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে। যাদের একটি অংশ ব্রিটেনের কেমব্রিজে এসে বসতি গড়েছিল ১১ শতকে। আর তাদের বংশধররাই পরে ১৪ শতকে ক্যামব্রিজের রাজপরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সেখান থেকেই সূত্রপাত হয় রানি এলিজাবেথের বংশের। যা সরাসরি হযরত মোহাম্মদের (সা.) এর নিজের মেয়ে ফাতিমার (রা.) বংশধারার সঙ্গে যুক্ত।

গবেষণায় দাবি অনুসারে রানি এলিজাবেথের পূর্ববর্তী ৪৩ তম প্রজন্মের সঙ্গে সরাসরি যোগ রয়েছে ফাতিমার (রা.)। 

যদিও অনেক ইতিহাসবিদ এই তত্ত্ব খারিজ করে দিয়েছেন, কিন্তু স্পেনের মধ্যযুগীয় কিছু রেকর্ড সমর্থন করছে। শুধু তাই নয়, একসময় মিশরের গ্র্যান্ড মুফতি আলি গোম্মাও একমত হয়েছিলেন মরক্কোর সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের তথ্যের সঙ্গে।

১৯৮৬ সালে এই তথ্য উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারকে। সেই চিঠি লিখেছিল বুর্ক পাবলিশিং নামক ওই সংস্থা। যারা রাজ পরিবারের বংশতালিকা দেখাশোনা করত। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল যে ব্রিটেনবাসীর এটা জানা দরকার যে দেশের রানির শরীরে বইছে স্বয়ং হযরত মোহাম্মদের (সা.) রক্ত। সেই তথ্য প্রকাশ্যে আসায় খুব খুশি হয়েছিলেন ওই দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা।

সে সময় বলা হয়েছিল ,  রাজকন্যা জায়দার বংশধর হচ্ছেন রানি এলিজাবেথ। জায়দা আবার স্পেনের সেভিল-এর মুসলিম রাজা আল মুতামিদ ইবনে আব্বাদ এর চতুর্থ স্ত্রী ছিলেন। অনেকের মতে এই জায়দা হলেন সরাসরি হজরত মোহাম্মদের (সা.) মেয়ের বংশধর।

একাদশ শতকে তিনি নিজ শহর সেভিল থেকে পালিয়ে কেমব্রিজে আসেন এবং খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন।

রাজা আল মুতামিদের সঙ্গে জায়দার একটি ছেলে সন্তান জন্ম নিয়েছিল। যার নাম স্যাঞ্চো। এই স্যাঞ্চোর বংশধরের সঙ্গেই বিয়ে হয় ক্যামব্রিজ রাজ পরিবারের সদস্যদের। আর সেখান থেকেই ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের বংশধারা আসে।

তবে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটর এর মতে, জায়দার বংশধারা নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেক ঐতিহাসিক বিশ্বাস করেন, তিনি ছিলেন এক মাতাল খলিফার মেয়ে। যার বংশধারার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর। অনেকে আবার বলেন, ওই খলিফার পরিবারে বিয়ে করেছিলেন জায়দা।

তবে এই তথ্য নিয়ে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

প্রতিবেদনের এই তথ্য দুই ধর্ম ও রাজত্বের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করবে বলে মনে করছেন আল আওয়াসবু পত্রিকার প্রতিবেদক আব্দুল হামিদ আল আওয়ানি। 

আব্দুল হামিদ আল আওয়ানি লিখেছিলেন, ‘ভাগ্যের কী বিদ্রুপ দেখুন, যখন যুবরানি ডায়না মারা যান, তখন বলা হয়েছিল মিশরীয় ডোডি ফায়েদের সন্তান তাঁর গর্ভে এসেছিল বলেই ব্রিটিশ রাজপরিবার তাঁকে হত্যা করে। রাজবংশ মেনে নিতে পারেনি ভবিষ্যতে কোনও ইসলাম ধর্মাবলম্বী রাজসিংহাসনের দাবিদার হবেন। এদিকে এখন দেখা যাচ্ছে খোদ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথই ইসলাম ধর্মের প্রতিষ্ঠাতার সরাসরি বংশধর!’

সুত্র-ডেইল মেইল

আমারসংবাদ/এডি