মে ২৬, ২০২১, ০৬:৪৫ পিএম
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে বুধবার (২৭ মে) সারাদেশে শুভ বুদ্ধপূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ অনাড়ম্বর পরিবেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেছেন।
সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা এড়িয়ে করোনার কারণে বাড়িতে বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিহার ও প্যাগোডায় বুদ্ধপূর্ণিমার তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। বৌদ্ধ বিহারে অবস্থানরত ভিক্ষুরা বিহারের ভেতরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পূজা, বন্দনাসহ ধর্মীয় কার্য সমাধা করেন।
রাজধানীতে সম্মিলিত প্রতীকী শান্তি শোভাযাত্রা ছাড়াও বুদ্ধপূজা, মহাসংঘদান ও আলোচনাসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন ও বাসাবো সবুজবাগ বৌদ্ধ বিহার।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার উৎসবটি অনাড়ম্বরভাবে উদযাপন করা হয়। সকালে রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সম্মিলিত প্রতীকী শান্তি শোভাযাত্রা ও সম্প্রীতি উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৌদ্ধ ধর্ম কল্যাণ ট্রাস্টের সহ-সভাপতি সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির মহাসচিব নির্মল চ্যাটার্জি, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদের সভাপতি উত্তম কুমার বড়ুয়া, ড. জগন্নাথ বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের এ দেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ও মুসলমান- সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে রচিত হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অন্যতম মূল কারণ ছিল সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা পাকিস্তান থেকে বেরিয়ে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনা। সে জন্যই আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার অনেক অপব্যাখ্যা দেয়া হয়। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে প্রত্যেকে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ফিলিস্তিন ও ইরাক রাষ্ট্রেও ধর্মনিরপেক্ষতা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সব ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সাম্য প্রতিষ্ঠা করা। সেই সম্প্রীতি ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় সকলকে কাজ করতে হবে।
সকল ধর্মের মানুষের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে চেতনার ভিত্তিতে আমাদের পূর্বসূরি বীর মুক্তিযোদ্ধারা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছিলেন, সেই চেতনার গায়ে কেউ যেন কালিমা লেপন করতে না পারে, সেই চেতনাকে কেউ যেন নস্যাৎ করতে না পারে, সে জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সব ধর্ম ও মতামতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় অনেকগুলো যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি বিগত দিনে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করেছেন। ভবিষ্যতেও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বুধবার সরকারি ছুটি ছিল। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করেছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করেছে।
আমারসংবাদ/এআই