Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

মৃত স্বজনদের জন্য আমাদের করণীয়

ধর্ম ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১, ১২:১৫ পিএম


মৃত স্বজনদের জন্য আমাদের করণীয়

মৃত বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনদের জন্য আমরা বেশ কিছু আমল করতে পারি । যার মাধ্যমে তারা পরপারে শান্তি পেতে পারেন। 
 
দোয়া : রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন প্রকার আমল (জারি থাকে)। (প্রথমত) সদকায় জারিয়া (চলমান সদকা); (দ্বিতীয়ত) ওই ইলম, যা দ্বারা অন্য মানুষ উপকৃত হয়; (তৃতীয়) নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (নাসায়ি, হাদিস : ৩৬৫১)।

কোরআন তিলাওয়াত : মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের মৃতদের জন্য সুরা ইয়াসিন পাঠ করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩১২১)।

রোজা : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কেউ রোজা কাজা রেখে মারা গেলে তার অভিভাবক যেন তার পক্ষ থেকে রোজা রাখে। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫২)

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, আমার মা মারা গেছেন; কিন্তু তার জিম্মায় এক মাসের রোজা ছিল। আমি কি তার পক্ষ থেকে কাজা করতে পারব? তিনি বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহর ঋণ অধিকতর পরিশোধযোগ্য। (বুখারি, হাদিস : ১৯৫৩)

ওই হাদিসগুলো দ্বারা বোঝা যায়, রোজা রেখেও মৃতদের জন্য ঈসালে সওয়াব করার সুযোগ আছে।

সদকা : মৃতদের ঈসালে সওয়াব করার একটি উত্তম পদ্ধতি হতে পারে সদকা। কারো সামর্থ্য থাকলে দান-সদকার মাধ্যমে মৃত আত্মীয়দের ঈসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

হজ : বুরায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক নারী এসে জিজ্ঞেস করল, ...আমার মা হজ না করে ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব? তিনি বলেন, ‘(হ্যাঁ), তুমি তার পক্ষ থেকে হজ করো।’ (তিরমিজি, হাদিস  : ৯২৯)

ওই হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মানুষ চাইলে তাদের মৃত আত্মীয়দের ঈসালে সওয়াবের নিয়তে হজ করতে পারবে। তা ছাড়া হজ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত, যা মৃত ব্যক্তির সওয়াবের পাল্লা অনেক বেশি ভারী করে দিতে পারে।

ওমরাহ : অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল হলো ওমরাহ। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরাহ একের পর এক আদায় করো। এ দুটো দারিদ্র্য ও গুনাহকে এমনভাবে দূর করে দেয়, যেমন হাঁপর লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)

কোরবানি : মৃতদের পক্ষ থেকে নফল কোরবানি করাও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা কোরবানির দিনগুলোতে নিজেদের মৃত আত্মীয়-স্বজনের নামে নফল কোরবানি করেও ঈসালে সওয়াব করতে পারে। (আদ্দুররুল মুখতার : ৬/৩৩৫, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১১/২১১)

এ ছাড়া মিসকিনদের খাবার দেওয়া, নফল নামাজ পড়া, চিকিৎসা সেবাসহ যেকোনো সওয়াবের কাজ করেই মৃতদের জন্য ঈসালে সওয়াব করার সুযোগ আছে। তবে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে, এতে যেন কোনো নাজায়েজ, বিদআত ও কুপ্রথার অনুপ্রবেশ না ঘটে। আল্লাহর আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন।

আমারসংবাদ/আরএইচ