Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ইস্তেখারার নামাজ কী, কিভাবে পড়বেন?

ধর্ম ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১, ০৩:০০ পিএম


ইস্তেখারার নামাজ কী, কিভাবে পড়বেন?

প্রখ্যাত হাদিসবিশারদ ইবনে হাজার (রহ.) লিখেছেন, ইস্তেখারা মানে কোনো বিষয় বাছাই ও নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া। উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তিকে দুটি বিষয়ের মধ্যে একটি বিষয় বাছাই করে নিতে হবে, সে যেন উত্তমটি বাছাই করে নিতে পারে। এমন প্রার্থনা করাই হলো ইস্তেখারার মূল উদ্দেশ্য। 

ইস্তেখারার নামাজের দোয়া জাবের বিন আবদুল্লাহ আল-সুলামি (রা.) বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) তাঁর সাহাবিদের সব বিষয়ে ইস্তেখারা করার শিক্ষা দিতেন; যেভাবে তিনি তাদের কোরআনের সুরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো কাজের উদ্যোগ নেয়, তখন সে যেন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে। অতঃপর বলে, “আল্লাহুম্মা ইন্নি-আস্তাখিরুকা বি-ইলমিকা ওয়া আস্তাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়া আসআলুকা মিন ফাদলিকাল আজিম, ফা-ইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আন্তা আল্লামুল গুয়ুব। আল্লাহুম্মা ইনকুন্তা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা” (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) খাইরুন লি ফি- দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে : আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাকদিরহু লি, ওয়া ইয়াসসিরহু লি, সুম্মা বা-রিকলি ফিহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা (এখানে নিজের কাজের কথা মনে মনে উল্লেখ করবে) শাররুন লি ফি দ্বীনী ওয়া মা’আশি ওয়া আক্বিবাতি আমরি (অথবা বলবে: আ-জিলি আমরি ওয়া আজিলিহি) ফাসরিফহু আন্নি ওয়াসরিফনি আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা সুম্মা আরদিনি বিহি।” (এর পর নিজের কাজের কথা উল্লেখ করে দোয়া করবে)।

অর্থাৎ হে আল্লাহ, আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি ও আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই ক্ষমতাবান; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ পরিজ্ঞাত।

হে আল্লাহ, আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (এখানে নিজের প্রয়োজনের নাম উল্লেখ করবে অথবা মনে মনে স্মরণ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য (কিংবা বলবে আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে) কল্যাণকর হলে, আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন।

হে আল্লাহ, আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দ্বীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে (কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য) অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আমার জন্য সর্বক্ষেত্রে কল্যাণ নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৬৮৪১, তিরমিজি, হাদিস : ৬৪৮)

ইবনে আবু জামরা (রহ.) বলেন, ইস্তিখারা শুধু ‘মুবাহ’ (করলে অসুবিধা নেই) বিষয়ের ক্ষেত্রে এবং এমন মুস্তাহাবের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ, যে মুস্তাহাব অন্য একটি মুস্তাহাবের সঙ্গে সাংঘর্ষিক; সুতরাং দুইটির কোনটি আগে পালন করবে কিংবা কোনটি বাদ দিয়ে কোনটি পালন করবে সে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ইস্তেখারার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর কাছে কল্যাণের প্রার্থনা করে। অনেকে মনে করে, স্বপ্ন দেখলেই ইস্তেখারা পূর্ণ হবে। আসলে ইস্তেখারার জন্য স্বপ্ন দেখা জরুরি নয়। মনের ধাবমান হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ।

আমারসংবাদ/আরএইচ