Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

৯ মাস ধরে ছাতক-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

ডিসেম্বর ২৮, ২০২০, ১১:৩০ এএম


৯ মাস ধরে ছাতক-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ

প্রায় নয়মাস ধরে ছাতক-সিলেট রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। চলতি বছরের মার্চের শেষ দিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে এ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়। পরবর্তীতে দেশের সকল রেলপথ চালু হলেও আজ পর্যন্ত ছাতক-সিলেট রোটে ট্রেন চালু হয়নি। 

ট্রেন চলাচল না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের যাত্রী সাধারণ। এ পথে দ্রুত ট্রেন চালু করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগিরা।   
  
জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক একটি ব্যবসায়ীক কেন্দ্র। বৃট্রিশ আমল থেকে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য চলে আসছে। এ ক্ষেত্রে ছাতক উপজেলাটি দেশ-বিদেশে শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত। ১৯৫৪ সালে ছাতক-সিলেটে ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি স্থাপিত হয়। 

এরপর থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত যাত্রী সেবায় ট্রেন ছিল একনিষ্ঠ। ছাতকবাজার রেল ষ্ট্রেশন থেকে প্রতিদিন চারটি ট্রেন সিলেটে চলাচল করতো। বালবাহী ট্রেনে সিমেন্ট, পাথর, চুনাপাথর, তেজপাতা ও কমলাসহ বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল কম খরচে পরিবহন করা হতো। 

পরবর্তীতে ৪টির পরিবর্তে এ পথে একটি মাত্র ট্রেন চালু থাকে। সকালে ও বিকেল বেলায় ট্রেনটি সিলেট- ছাতক পথে দুইবার যাতায়াত করে আসছিল। ট্রেন চালুর শুরুর দিকে ছাতক থেকে সিলেটে যেতে ট্রেনে একজন যাত্রীর ভাড়া ছিল চার আনা। 

বর্তমানে ছাতক থেকে সিলেটের ভাড়া ১০ টাকা। আগের তুলনায় ট্রেনের গতিও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাতক থেকে সিলেটে পৌঁছতে তার সময় লাগছে সর্বোচ্চ একঘন্টা ১০ মিনিট। 

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে সারাদেশের সাথে এ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। 

চলতি বছরের ২৩ মার্চ থেকে প্রায় নয়মাস ধরে বন্ধ রয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেনটি। 

সম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে ট্রেন চলাচল চালু হলেও প্রাচীনতম এ রেলপথে ট্রেন চালু হচ্ছে না। ট্রেনের সেবা পাচ্ছেন না এ অঞ্চলের যাত্রীরা।

ট্রেন পরিবহনে স্বল্প ভাড়ার পরিবর্তে এ অঞ্চলের মানুষ সড়ক পথে এখন গুনতে হচ্ছে অধিক ভাড়া। সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কবে এ রেলপথে ট্রেন আবারও চালু হবে এমন প্রশ্নের উত্তর মিলছে না কর্তৃপক্ষের কাছে। 

ছাতক প্রেসক্লাবের সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন তালুকদার বলেন, অল্প খরচে নিরাপদে ছাতক থেকে সিলেটে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম রেলপথ। যখন সড়ক পথ ছিল না তখন থেকে ছাতক-দোয়ারা ও কোম্পানীগঞ্জসহ এলাকার মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করতেন। জমজমাট ছিল রেল ষ্টেশন ও আশপাশ এলাকা। 

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হওয়া দেশের সকল ট্রেন আবার চালু হলেও এটি চালু না করায় এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষগুলো সড়ক পথে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে চলাচল করছে। 

ট্রেন চালু, জনবল বৃদ্ধি, রেললাইন সংস্কারের সাথে ট্রেনের বগি ও ষ্টেশন আধুনিকায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি জোর দাবি জানান। 

ছাতকবাজার ষ্টেশন মাষ্টার আবদুল মতিন ভুইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার মূল দায়িত্ব আফজালাবাদ ষ্টেশনে। ছাতকবাজার ষ্টেশনে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কবে ট্রেন চালু হবে এ বিষয়ে তার জানা নেই। 

রেলওয়ে বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এক সময়ের লাভজনক রেলপথসহ ষ্টেশনটি এখন লোকসানে পরিণত হচ্ছে। 

রেললাইনের পুরো সংস্কার, জনবল বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে আবারও রেলওয়ের এ বিভাগটি লাভের মুখ দেখবে বলে প্রত্যাশা করছেন উপজেলাবাসী। 

আমারসংবাদ/এআই