Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বড়দিয়া বাজার রক্ষা বাঁধ ধসে পড়ার আশংকা

নিজস্ব প্রতিনিধি

মার্চ ৮, ২০২১, ০৩:২৫ পিএম


বড়দিয়া বাজার রক্ষা বাঁধ ধসে পড়ার আশংকা

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় নবগঙ্গা ও মধুমতি নদীর মিলন স্থল থেকে অবৈধভাবে বালু তোলায় কোটি কোটি টাকার প্রজেক্ট বড়দিয়া বাজার রক্ষা বাঁধ হুমকিতে এবং অপর পারে সরকারি গুচ্ছ গ্রাম চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। 

রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে সাড়ে বড়দিয়া বাজারের শত শত বিক্ষুদ্ধ ব্যাবসায়ী ও এলাকাবাসী তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং অনতিবিলম্বে ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা বন্ধ করতে হবে। এ সময় বালু উত্তোলনকারী ড্রেজারসহ সংশ্লিষ্টরা পালিয়ে যায়। 

বিক্ষোভ সমাবেশে বড়দিয়া বাজার বনিক সমিতির সভাপতি ও কালিয়া উপজেলার বার বার নির্বাচীত সাবেক চেয়ারম্যান খান শামীম রহমান ওসি তাঁর বক্তব্যে বলেন, উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের বড়দিয়া, মঙ্গলপুর ও তেলকাড়া গ্রামের তিন নদীর মোহনায় (নবগঙ্গা ও মধুমতী নদীর সঙ্গমস্থল) পনর থেকে বিশটি ড্রেজার (খননযন্ত্র) দীর্ঘদীন ধরে বালু কেটে আসছে। আমরা এ ব্যাপারে এমপি ও জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের অবগত করেছি তাতে ও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। তাই নদীর  তীরে ঐতিহ্যবাহী বড়দিয়া বাজার/নদী বন্দর, উত্তর পশ্চিমে তেলকাড়া গ্রামে সরকারি গুচ্ছ গ্রাম এবং নদীর পূর্ব সীমানায় মঙ্গলপুর গ্রাম চরম ঝুকিতে রয়েছে বিধায় আমরা সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এই বিক্ষোভ সমাবেশ করছি।

৬নং খাশিয়াল ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও বড়দিয়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী খান আজাদ আলী বলেন, বড়দিয়া বাজার রক্ষার জন্য আমরা সকল ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী মিলে আজ একত্রিত হয়েছি। কিন্তু আসার পরে দেখলাম কিছু কুচক্রি মহল রামদা দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ বানচাল করতে চেয়েছে এর কঠোর প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করছি।

জেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি ও বাজারের ব্যবসায়ী বরকত বিশ্বাস জানান, বাজার থেকে অনেক দুরে তাদের বালু কাটার সীমানা দেওয়া থাকলে ও তারা বড়দিয়া বাজার ঘেসে শক্তিশালী ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বড়দিয়া বাজারকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আজ বাজারবাসী শান্তিপুর্ণ বিক্ষোভ করেছে, সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে বড়দিয়া বাজার রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছে, সেই বাঁধ যদি হুমকির মুখে পড়ে তাহলে বাজারের ব্যাবসায়ী, শ্রমিক ও বাজার কেন্দ্রীক আশেপাশের ২৭ গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কাজেই অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে পরবর্তীতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সাধারণ ব্যাবসায়ী জামিল চৌধুরী বলেন, বড়দিয়া বাজারে একটি মাদ্রাসা, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সনাতন ধর্মালম্বীদের তীর্থ কেন্দ্র গৌড়ীও মঠ রয়েছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে বাজারের এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান ও  বাজার রক্ষা বাঁধ হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমরা সরকারে উচ্চ মহলে অনুরোধ করবো এই অবৈধ বালু কাটা বন্ধ হোক।

ইতোমধ্যে কয়েক জায়গায় ফাঁটল দেখা দিয়েছে বলে এলাকাবাসীরা জানান। তারা বলেন, দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর কোটি টাকা ব্যায়ে বড়দিয়া রক্ষা বাঁধ সরকারিভাবে সমাপ্ত হয়েছে মাত্র এক/দেড় বছর পূর্বে। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে যেকোন মুহুর্তে বড়দিয়া বাজারসহ পার্শবর্তী এলাকা ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তারা  জেলা প্রশাসকের নিকট বালু কাঁটা বন্ধের জোর দাবি জানান।

এই ঘটনায় লোহাগড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) রাখী ব্যার্নাজীর সংগে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, বড়দিয়ার বালু মহল ইজারা বাতিলের জন্য ডিসি মহোদয়কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি এবং আগামীতে ইজারা না দেয়ার সুপারিশ জানিয়েছি। খুবই শ্রীঘ্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, চিঠি পেয়েছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমারসংবাদ/কেএস