Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪,

শরীয়তপুরে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার ভয়াবহ আক্রমণ

শরীয়তপুর সদর প্রতিনিধি

মার্চ ৩০, ২০২১, ১১:৩৫ এএম


শরীয়তপুরে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার ভয়াবহ আক্রমণ

শরীয়তপুরে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। বর্তমানে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম। 

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতাল সহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সগুলোয় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত ১ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই শিশু। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় মেঝে ও হাসপাতালগুলোর বারান্দায় রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডায়রিয়ার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে আলাদা ১৪ শয্যা থাকলেও গড়ে প্রতিদিন সেখানে ভর্তি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ জন রোগী। ফলে বেডের সঙ্কুলান না হওয়ায় অধিকাংশ রোগীকে মেঝেতেই নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। এমন বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্মচারীদের। অনেকে সুস্থ হয়ে আবার বাড়িতে ফিরেছেন। তবে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কারো মৃত্যু ঘটেনি। 

ডামুড্যা ধানকাটি ইউনিয়ন থেকে সোহেল রানা নামে এক ব্যক্তি তার ভাগনেকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। তিনি জানান, হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি ও কাশি হওয়ার পর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বাড়িতে কোনও সমাধান না হওয়ায় হাসপাতালে আসতে হয়েছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত বকুল চন্দ্র ঋষি দাস (৫০) বলেন, হাসপাতালে এসেছি সুস্থ হওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে যে অবস্থা, এতে আরও দুর্বল হয়ে পড়েছি। হাসপাতালে এসে বেড পাইনি। চাদর বিছিয়ে মেঝেতে শুয়েছি। দুটি মাত্র শৌচাগার রয়েছে, তার অবস্থাও করুণ। 

সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানবিদ সেলিনা আক্তার জানান, গত মাসের চেয়ে এ মাসে হঠাৎ ডায়েরিয়ার রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
 
সদর হাসপাতালেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স সিবু রায় বলেন, বেশি রোগী থাকলে দুজন করে এবং কম থাকলে একজন নার্স রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আইভি স্যালাইনও শেষ হয়েছে অনেকদিন আগে। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রয়েছে ১৪টি বেড। বেডের চেয়ে রোগী বেশি। তাই মেঝেতে রাখতে হচ্ছে তাদের।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মুনীর আহমদ খান বলেন, রোগীর চাপ বেড়েছে। এতে হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট দেখা দিয়েছে। জনবল সংকটের মধ্যে একদিকে করোনায় আক্রান্ত দের অন্যদিকে সাধারণ রোগীদেরও সেবা দিতে হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ধারণা করা হচ্ছে হঠাৎ গরম বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া ও জ্বরসহ বিভিন্ন ধরনের রোগী বেড়েছে। সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি। 

সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল্লাহ্ আল মুরাদ জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। আমরা ডায়রিয়া রোগীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। 

তিনি রোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিশুদের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। পাতলা পায়খানা ও বমি শুরু হলে শিশুকে মুখে খাবার স্যালাইন বার বার খাওয়ানো ও মায়ের বুকের দুধও খাওয়াতে হবে। প্রয়োজনে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া খোলা ও বাসি খাবার পরিহারের পাশাপাশি সবসময় হাত পরিষ্কার রাখারও পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।  

আমারসংবাদ/কেএস