Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

সড়ক উন্নয়ন কাজে ধীরগতি, ধুলোয় অন্ধকার ঘোড়াঘাট

মো. লোটাস আহম্মেদ, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর)

মার্চ ৩০, ২০২১, ১২:০০ পিএম


সড়ক উন্নয়ন কাজে ধীরগতি, ধুলোয় অন্ধকার ঘোড়াঘাট

বহু প্রতিক্ষার পর গত বছরের জুন মাস থেকে শুরু হয়েছে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের প্রশস্তকরণ কাজ। রাজধানী ঢাকা থেকে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় যাতাযাতের একমাত্র রুট এটি। 

পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলের আরো দুটি জেলা পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও যাতায়াতের অন্যতম সড়ক হিসেবেও এই রাস্তার ব্যবহার ব্যাপক। তবে ১৮ মাস অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি এই সড়কের প্রশস্তকরণ কাজ।

গত ২০১৯ সালে ৮৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দে ৯টি গুচ্ছ প্যাকেজের মাধ্যমে শুরু হয় সড়কটির প্রশস্তকরণ কাজ। এই প্রশস্তকরণ কাজের মাধ্যমে ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থ থেকে বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৭ মিটার করা হবে সড়কটিকে।

 প্রাথমিক পর্যায়ে এই সড়কে থাকা প্রায় শতাধিক ছোট ও পুরনো কালভার্ট নতুন করে নির্মান কাজ শুরু করেছিল ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী চলতি মাসেই শেষ হবার কথা ছিল প্রশস্ত করণ কাজ। তবে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৬০ ভাগ। সংশ্লিষ্ট সরকারী দপ্তর সময় মত অর্থ না দেওয়ায় সড়কের কাজ করতে পারছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

ফলে দেড় বছর ধরে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট এবং আশপাশের বেশ কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার জনগণকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে ধূলাবালি। দিন রাত ধূলোয় অন্ধকার হয়ে থাকছে পুরো সড়ক। এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী সবাইকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

বিশেষ করে রাস্তার দুই ধারে থাকা দোকানপাট ও বাড়ি ঘর ধূলোয় ছেয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুধু জনগণের ভোগান্তিই নয়। ধূলোর কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। বৃদ্ধি পাচ্ছে বায়ূ দূষিত বিভিন্ন রোগ। সর্দি কাঁশি সহ বিভিন্ন বায়ূ দূষিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিরা। 

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বলছে, ধূলো নিয়ন্ত্রণে তারা পুরো রাস্তায় দিনে ১০ থেকে ১৫ বার পানিবাহী ট্রাকে করে পানির স্পে করছে। তবে ভুক্তভোগী জনগণের অভিযোগ সকালে এবং বিকেলে দুইবার মাত্র পানির স্পে করতে দেখা যায়।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এম.এম বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রজেক্ট ম্যানেজার আনিসুর রহমান বলেন, চুক্তি অনুযায়ী এই মাসে আমাদের কাজ শেষ হবার কথা। তবে আমরা আরো আগেই সড়ক উন্নয়নের কাজ শেষ করতাম। করোনার প্রথম যে স্টেজ গিয়েছে, সেই সময়েও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত কাজ করে গেছি। যাতে জনগণকে দীর্ঘ সময় ভোগান্তি পোহাতে না হয়। 

তবে ফান্ডিং জটিলতার কারণে আমরা কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখেছি এবং ধীরগতিতে কাজ করেছি। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি যথা সময়ে আমাদের অর্থ দিত, তবে অনেক আগেই আমরা কাজ শেষ করতে পারতাম।

তিনি আরো বলেন, ধূলোর হাত থেকে সাধারণ মানুষকে যথা সম্ভব রেহাই দিতে আমরা প্রতিদিন বেশ কয়েবার পুরো রাস্তায় পানি স্পে করছি। ফলে প্রতিনিয়ত আমাদেও ব্যয়বহুল অর্থ নষ্ট হচ্ছে। আজ কালের ভিতরে আমাদেরকে ফান্ড দেয়ার কথা আছে। সময় মত ফান্ড দিলে আমরা আশা করছি আগামী জুন মাসের ভিতরে রাস্তার ৯০ ভাগ কাজ শেষ করতে পারব।

এদিকে দিনাজপুর সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে স্বাভাবিক সব কাজই বাধাগ্রস্থ হয়েছে। যার কারণে আমাদের ফান্ডিং জটিলতা হয়েছিল। 

আগামী দুই তিন দিনের ভিতরে আমাদের এই সমস্যা সমাধান হবে। আমরা আগামী মে মাসের ভিতরে সড়কের প্রথম লেয়ারের কাজ শেষ করবো। বাকি একটি লেয়ার জুন জুলাই মাসের বর্ষাকাল শেষ হলে করা সম্ভব হবে।

আমারসংবাদ/এআই