Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

এবারও হচ্ছে না ওড়াকান্দি স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা 

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি

এপ্রিল ১, ২০২১, ১২:৪০ পিএম


এবারও হচ্ছে না ওড়াকান্দি স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা 

দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবারও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। 

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনসমাগম এড়াতে ওড়াকান্দি স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় আয়োজিত জরুরী সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও রথীন্দ্র নাথ রায় এ বিষয়টি জানিয়েছেন। 

২শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা আগামী ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। গত বছরও করোনাভাইরাসের কারণে স্নানোৎসব ও বারুনী মেলা হয়নি। 

এবারও স্নান ও বারুণী মেলা না হওয়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মতুয়া ভক্ত ও স্থানীয়দের মাঝে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, ২’শ বছরের অধিক সময় ধরে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দিতে তিন দিনব্যাপী স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত আসছে। এ স্নানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মধ্যপ্রাচ্য এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখ লাখ পূর্ণার্থীর আগমন ঘটে। হিন্দু ধর্মের মতুয়া সম্প্রদায়ের এ মিলন মেলায় লাখো ভক্তের আগমনে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে গোটা ঠাকুর বাড়ি। এটি হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অন্যতম তীর্থস্থান। গত ২৭ মার্চ এ তীর্থভূমি ঘুরে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

মেলায় বাতাসা বিক্রেতা অনুপ ঘোষ বলেন, ‘সারা বছর মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকি, মেলায় অনেক লোকের সমাগম হবে। মেলায় অনেক টাকার বাতাসা বিক্রি হবে। করোনায় মেলা হচ্ছে না জেনে খুব খারাপ লাগছে।

রামদিয়া বাজারের মিষ্টির দোকানী উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, ‘বারুণী মেলা উপলক্ষে মিষ্টি তৈরীর জন্য পর্যাপ্ত চিনি, ময়দা, গুঁড়া দুধসহ বিভিন্ন উপকরণ কিনে রেখেছি। করোনায় মেলা না হওয়ায় চরম ক্ষতির মুখে পড়লাম।’ 

হোটেল ব্যবসায়ী আব্দুল আলিম বলেন, ‘কখনও আমরা ওড়াকান্দি বারুনী মেলা বন্ধ থাকতে দেখিনি। প্রতি বছর নির্ধারিত তারিখে মেলা হয়ে আসছে। মেলায় বেচাবিক্রির জন্য আমরা ব্যবসায়ীরা সারা বছর মুখিয়ে থাকি। কিন্তু এবার করোনায় মেলা না হওয়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হবে।’

ওড়াকান্দি বারুণী মেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ক্ষিরোদ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘স্নান ও বারুণী মেলা হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর স্নান ও বারুণী মেলা না হওয়ারই সম্ভাবনা।’

কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুব্রত ঠাকুর হিল্টু বলেন, যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে আমরা ভীষণ শঙ্কিত। স্নানোৎসবে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে লাখ লাখ ভক্ত এই ঠাকুর বাড়িতে আসেন। তবে, মেলা ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে সীমিত পরিসরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে শুধুমাত্র ধর্মীয় রীতি ‘স্নান’ করার অনুমতি দেয়ার দাবি জানান তিনি। 

গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে- করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগম, সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিস্তাররোধে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি। সে ক্ষেত্রে ওড়াকান্দি স্নান ও বারুণী মেলা হওয়ার কোন সুযোগ নেই।’ 

আমারসংবাদ/কেএস