Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

শরনখোলায় ভিজিডির অর্থ বঞ্চিত ৮ শতাধিক হতদরিদ্র পরিবার 

শরনখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

এপ্রিল ৬, ২০২১, ১০:০০ এএম


শরনখোলায় ভিজিডির অর্থ বঞ্চিত ৮ শতাধিক হতদরিদ্র পরিবার 

বাগেরহাটের শরনখোলায় আট শতাধিক হতদরিদ্র পরিবারের জমা রাখা ভিজিডির অর্থ ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। 

অভিযোগ পেয়ে শরনখোলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রায়হান উদ্দিন শান্ত, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মো. আজমল হোসেন মুক্তা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ছুটে যান। 

এ সময় তারা উপকার ভোগীদের সাথে আলাপ করে ঘটনার সত্যতা পান। যার ফলে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উপজেলার চার ইউনিয়নের জন্য তাৎক্ষণিক আলাদা- আলাদা করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এমএম পারভেজকে ৩নং রায়েন্দা ইউনিয়ন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশ্রাফুল ইসলামকে ১নং ধানসাগর ইউনিয়ন,  সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রতন কুমার বলকে ২নং খোন্তাকাটা ইউনিয়ন ও পল্লীদারিদ্র কর্মকর্তা মি. শিশির কুমারকে ৪নং সাউথখালী ইউনিয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং ওই কমিটিকে আগামী ১১ এপ্রিল মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

উপজেলা সদর ৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নের মালিয়া রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা টুলু রানী, জুথিকা রানী সহ হতদরিদ্র পরিবারের একাধিক সদস্য অভিযোগ করে বলেন, আমরা (হতদরিদ্ররা) গত ২০১৯/২০২০ অর্থ বছরে ভিজিডি কার্ডের অনুকুলে রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দুই বছর বিনামুল্যে ৩০ কেজি করে সরকারী চাল পাই এবং নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক উপকার ভোগীদের মাসে ২০০ শত করে টাকা জমা রাখতে হয়। তার ধারাবাহিকতায় আমরা ওই সময় রায়েন্দা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ৮১৫টি পরিবার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিলন ভাইয়ের কাছে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস হতে মে মাস পর্যন্ত পাঁচ মাসের এক হাজার টাকা করে মোট আট লক্ষাধিক টাকা জমা দেই এবং বাকি ১৯ মাসের টাকা স্থানীয় একটি বেসরকারী ব্যাংকে জমা রাখি। ইতোমধ্যে আমাদের ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় লাভ সহ ব্যাংকের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেন কিন্তু চেয়ারম্যানের কাছে জমা রাখা টাকা গুলো এ পর্যন্ত আমরা ফেরত পাইনি। তাই বিষয়টি ইউএনও স্যার সহ অন্যদের কাছে জানিয়েছি। কারণ আমাদের অনেক কষ্টের টাকা আমরা উক্ত টাকা ফেরত চাই। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ৩নং রায়েন্দা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিলন জানান, হতদরিদ্র পরিবার গুলোর ভিজিডির জমাকৃত সম্পূর্ণ টাকা আমানত হিসেবে আমার কাছে জমা আছে এবং ইতোমধ্যে মাষ্টার রোল তৈরী করা হয়েছে। শীঘ্রই সকল উপকারভোগীর টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তাছাড়া দরিদ্রদের কয়েকজন বিষয়টি না বুঝে আমার ব্যপারে অভিযোগ তুলেছেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন জানান, রায়েন্দা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতদরিদ্রদের জমা রাখা টাকাগুলো তৎকালীন ভিজিডি উপকারভোগীদের মাঝে এখনো কেন ফেরত দেওয়া হয়নি। তার কারন জানতে ইতোমধ্যে রায়েন্দা ইউনিয়নে দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 
তাছাড়া এ ধরনের অনিয়ম অন্য অন্য ইউনিয়নে রয়েছে কিনা তা জানতেও পৃথক দতন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সকল ইউনিয়নে নিরেপক্ষ তদন্ত করে দায়িত্ব প্রাপ্তদের চলতি মাসের ১১ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন চেয়ারম্যান অভিযুক্ত হলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আমারসংবাদ/কেএস