Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

৩০ লাখ শ্রমিকের চলাচলে কিভাবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ

শরিফ শেখ, সাভার

এপ্রিল ১৩, ২০২১, ১২:৫০ পিএম


৩০ লাখ শ্রমিকের চলাচলে কিভাবে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ

শিল্পাঞ্চল সাভারে ৩০ লাখ শ্রমিকের একসাথে কর্মস্থলে আগমন এবং প্রস্থানে নূন্যতম সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা না হলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে সর্তক করে শ্রমিকদের কঠোর স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের প্রতি আহবান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

লকডাউন শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে সাভার উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরি বৈঠক থেকে এই সর্তকতা জারি করা হয়।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, এত মানুষের চলাচল নি:সন্দেহ করোনা প্রতিরোধের জন্যে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। তা সত্ত্বেও লকডাউনের মধ্যে শিল্পাঞ্চল সাভার আশুলিয়ায় কল কারখানা খোলা থাকলেও মানতে হবে কঠোর স্বাস্থ্য বিধি। নইলে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করা হয় ওই বৈঠক থেকে।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আরা নিপার সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাক্তার এনামুর রহমান এমপি, সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব, আশুলিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাহিদ হাসান প্রিন্স, সাভার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ, আমিনবাজার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হ্যাপী দাস, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদাসহ কমিটির সদস্যরা।

সভা শেষে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সদস্য জানান, শ্রমিকদের লকডাউনের আওতায় আনা হলে সবাই বাড়ি ছুটতেন। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি হতো ভয়াবহ। আবার কারখানা চালু রাখায় শ্রমঘন এলাকায় করোনা পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।

তবে কমিটির সদস্য সচিব সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা বলেছেন, শ্রমিকদের কঠোর বিধি নিষেধ না মানলে পরিস্থিতি শোচনীয় রূপ নেবে।

কারখানার কর্মকর্তাদের তত্বাবধানে শ্রমিক পরিবহন, নিয়মিত হাত ধোয়া, নিরাপদ দূরত্বে শেলাই মেশিন স্থাপনসহ শ্রমিকদের মাস্ক, গ্লাভস এবং প্রয়োজনে ফেসশিল্ড ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ব্যতিক্রম হলে লডডাউনের কোন ফল আসবে না বলেও জানান তিনি। বিষয়টি সম্পর্কে তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।

কমিটির অপর এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ১৫’শয়ের অধিক তৈরি পোশাক কারখানা খোলা রেখে সংক্রমণ কিভাবে নিয়ন্ত্রিত তবে সেটা একটা বড় প্রশ্ন। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা আমাদের দায়িত্ব। 

আমরা সেই চেষ্টাই করছি। এর অংশ হিসেবে জরুরি ভিত্তিতে উপেজলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১২ শয্যার হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাসহ লিকুইড সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের জরুরিভিত্তিতে অনুমোদন দেয়া হয় বৈঠকে। 

গত বছরের ১৭মে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পোশাক কারখানা বন্ধের পাশাপাশি উপজেলার প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করা জরুরি উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা। অন্যথায় এলাকায় করোনা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

সেই প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর নানামুখী চাপে পড়েন কমিটির সদস্যরা। তারপর থেকেই দ্রুত গতিতে বাড়তে থাকে আক্রান্তে সংখ্যা।

সাভারে সংগ্রহ করা ১৫ হাজার ৭ জনের নমুনার মধ্যে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ১৪ জন। আর মারা গেছেন ৩৭ জন।

আমারসংবাদ/কেএস