Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

কুমারখালীতে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনে বিলম্ব

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 

এপ্রিল ১৬, ২০২১, ১২:০০ পিএম


কুমারখালীতে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনে বিলম্ব

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনে বিলম্ব হচ্ছে শুধুমাত্র জমির রেকর্ড জটিলতায় ভুল থাকার কারণে। বার বার সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। নতুন করে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। 

বিসিকের থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ঋণ নিয়ে শিল্পে জড়িয়ে অনেকে সফলতা পেলেও কেউ কেউ নানাবিধ কারণে পুঁজি পর্যন্ত হারিয়ে পথে বসেছে। মুলত নির্ধারিত জায়গা না থাকায় অপরিকল্পিত ও বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠেছে কুমারখালীর তাঁতসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান।

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের দাবি উঠে আসছে বহুদিন থেকেই। বিএনপি জোট সরকার জিলাপীতলায় এর জায়গা নির্ধারণও করেছিল। কিন্ত সরকার পরিবর্তন হলে সেটা ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে বর্তমান সরকারে আমলে সাবেক এমপি আব্দুর রউফ চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। শেষ বারের মত শিল্প নগরী স্থাপনে স্থানীয় এমপি সেলিম আলতাফ জর্জ চেষ্টা চালাচ্ছেন। 

কুমারখালীতে অর্থনৈতিক জোন হিসেবে গড়তে তারই ধারাবাহিকতায় নতুন করে আধুনিক ও পরিকল্পিত একটি বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি মহাসড়কের কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশের ডোবা ভরাট করে অত্র জায়গায় শিল্পনগরী করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছে শিল্পমন্ত্রণালয়। 

নির্ধারিত স্থানের তথ্য নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া বিসিকের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) সোলায়মান হোসেন বলেন, অনেকেই শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু বিসিকের নির্ধারিত জায়গা না থাকায় অপরিকল্পিতভাবে যত্রতত্র কলকারখানা গড়ে উঠেছে। সে জন্য আধুনিক ও পরিকল্পিত নতুন বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য কুমারখালীতে প্রায় এক‘শ একর জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, নির্ধারিত স্থানের জমি আগে এক ফসলী ডোবা হিসেবে চিহ্নিত থাকলেও সর্বশেষ রেকর্ড সংশোধনীতে ভুল করে ধানী জমি হিসেবে রেকর্ড হওয়ায় বিলম্ব হচ্ছে। 

তিনি আরো জানান, অচিরেই নির্ধারিত জায়গা নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও সর্বস্তরের জনগণের সাথে মতবিনিময় করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে কুমারখালীতে বিসিক শুধুমাত্র তাঁতশিল্প নিয়ে সীমিত পরিসরে কার্যক্রম শুরু করেছিল। যার থেকে সহায়তা তেমন পায়নি কুমারখালীর শিল্প মালিকেরা। সেটি ২০০৮ সাল হতে বর্তমানে বাংলাদেশ তাতঁবোর্ডের একটি শাখা হিসেবে টিকে আছে। যদিও স্থানীয়রা পৌরসভার সামনে পুকুরের পাড়ের অত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান তাঁতবোর্ডকে বিসিক বলেই চেনে। 

তাঁতবোর্ডের সেবা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত রানা টেক্সটাইলের পরিচালক মাসুদ রানা জানান, তাঁতবোর্ডের সেবা আরো উন্নত হওয়া জরুরি। নতুন আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের আশায় রয়েছে কুমারখালীর তাঁতশিল্পের মালিকেরা। 

নুরুল টেক্সটাইলের পরিচালক জাকারিয়া আনছার মিলন বলেন, বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। বিসিক স্থাপিত হলে সর্ব প্রথম পরিবেশ বান্ধব ইটিপি চালুর প্রতি গুরুত্ব দেন এই তরুণ সফল শিল্পপতি।

কুমারখালীতে প্রত্যাশিত বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, ৫ মাস পূর্বেই জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, কার্যক্রম চলমান আছে। 

কুমারখালী পৌরসভা মেয়র সামছুজ্জামান অরুন জানান, শিল্পনগরী গড়ে উঠলে এই অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হবে, এবং অর্থনৈতিক শক্তি হবে চাঙ্গা ।

কুমারখালীতে বহু দিনের প্রত্যাশিত বিসিক শিল্পনগরী শুধুমাত্র জমির রেকর্ড সংশোধনীতে ভুল থাকায় স্থাপনে বিলম্ব আর দেখতে চাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। বিসিকের থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেয়া শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষোভে ফেটে পড়ছে। তারা সকল জটিলতার দ্রুত সমাধান কামনা করে বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে জোর দাবিও করেছে। 

আমারসংবাদ/কেএস