Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

লালমনিরহাটে হাত বাড়ালেই মাদক, নির্মুলের দাবি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 

মে ৩, ২০২১, ১০:৪০ এএম


লালমনিরহাটে হাত বাড়ালেই মাদক, নির্মুলের দাবি

লালমনিরহাটে প্রতিদিন সীমান্ত পেরিয়ে আসছে মাদক। প্রধান রুট কুলাঘাট দিয়ে এপারে আসা এ মাদক ছড়িয়ে যাচ্ছে সারা দেশে। এ মাদক সিন্ডিকেটের রয়েছে ৫ শতাধিক সদস্য। জেলার মাদক সিন্ডিকেটের প্রধান সুজিত কুমার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্রসহ ১০টি মাদক মামলা। মাছের ব্যবসার আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে গেলেও রয়েছে পুলিশের ছত্রছায়ায়। প্রতি রাতে মাছের চালান, মাছ পরিবহনের ড্রামসহ নানান কৌশলে মাদক সম্রাট সুজিত চালাচ্ছে এ ব্যবসা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ জেলায় প্রতিদিন ও রাতে প্রায় কোটি টাকার মাদক পাচার হয়। এর সঙ্গে রাঘববোয়াল জড়িত রয়েছে। আরো জড়িত আছে ৪/৫ জন যারা বিভিন্ন সময় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্বে মিথ্যা ও মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করে সমাজের কাছে তথা দেশের কাছে তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করে?

কুলাঘাট যে মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছে তা প্রশাসনের অনেকেই জানে। ঘরে বসে অর্ডার করলেই মিলছে মাদকের হোম ডেলিভারি। ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, মদ, বিয়ার, গাঁজাসহ সকল প্রকার মাদকে সয়লাব এখন লালমনিরহাট। জনপথটিতে বিভিন্ন পেশার আড়ালে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে ছদ্মবেশে। প্রতিদিন মোটরসাইকেলযোগে মাদকসেবীরা ছুটছে মাদকের আখড়াগুলোতে। 

এছাড়াও শহরের ড্রাইভারপাড়া, গোশালা, টিউময়েলপাড়া, নয়ারহাট, থানাপাড়া পুকুরপাড়, হাসপাতাল এলাকাসহ শহরের ২ শতাধিক স্পটে এখন মাদক আখড়া। এসব এলাকায় হাত বাড়ালেই মিলছে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ মাদক। এছাড়া দেশের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট থেকে প্রতিনিয়তই বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্যের চালান এসে জমা হয় সুজিত কুমারের মাদক আড়তে। 

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, লালমনিরহাট জেলার ২০০টি স্পটে অবাধে চলছে ইয়াবা ব্যবসা। 

গোশালা এলাকার স্কুল শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, শহরে মাদকের সয়লাব অবস্থা। মাদক ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কৌশলে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন কঠোর না হওয়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। 

লালমনিরহাট শহরের থানা পাড়ার কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন লালমনিরহাট থেকে রংপুরে মাছ আনতে যায় মাছ ব্যবসায়ীরা সেই মাছের হাঁড়ি, ড্রাম করে লালমনিরহাট থেকে প্রতিদিন ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা পাচার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তিস্তা সেতু এলাকায় কঠোর হলে বন্ধ হবে অনেকাংশে মাদক ব্যবসা। তবে যেকোনো মাদকের তুলনায় ইয়াবার চাহিদা ব্যাপক। মাদক ব্যবসা এমন মাত্রায় পৌঁছে গেছে যে, জায়গায় বসে অর্ডার করলেই মিলছে মাদকের হোম ডেলিভারি। মাদকের এমন ভয়াবহ বিস্তারে লালমনিরহাট যেন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আসক্ত হয়ে পড়ছে মাদকের মরণ ছোবলে। স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, যুবক, ব্যবসায়ীর পাশাপাশি নারীরাও এ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। 

অভিযোগ রয়েছে, এই ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের অনেকেই জড়িত। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে রয়েছে এদের সুসম্পর্ক। 

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা জানান, মাদক জিরো টলারেন্সের জন্য পুলিশ কাজ করছে। মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা মতে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। 

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়ন পরিচালক লে. কর্নেল তৌহিদ জানান, সীমান্তে মাদকের বিরুদ্ধে বিজিবি সদস্যদের সতর্ক রাখা হয়েছে।

আমারসংবাদ/কেএস