Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

নান্দাইলে কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

জুন ২, ২০২১, ০৮:৩৫ এএম


নান্দাইলে কর্মসৃজন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ 

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির আওতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১ম পর্যায়ে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৯৭টি প্রকল্পের বিপরতীতে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হলেও বাস্তবে হরিলুট হয়েছে। প্রকল্পে শ্রমিকদের পরিবর্তে খনন যন্ত্র (এক্সাবেটর) ব্যবহার করায় কাজ না পেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন হতদরিদ্র মানুষ। এছাড়া ২য় পর্যায়েও চলছে যন্ত্রের ব্যবহার। 

এতে ভোক্তভোগী বঞ্চিত শ্রমিক সহ অভিজ্ঞ মহলে মিস্ত্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার প্রধান ৪০ দিনের কাজ দিয়েছে কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন সহ ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারদের সাথে যোগসাজস করে কোন প্রকার কাজ না করেই প্রকল্পের সিংহভাগ টাকা হরিলুট করেছে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদের কাজ কেড়ে নিয়ে মেশিন দিয়ে কোন কোন ইউনিয়নে কাজ করেছে। বর্তমান সরকার প্রধান যে উদ্যোগ তথা এ প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন তা নান্দাইল উপজেলায় বাস্তবে পূরণ হয়নি। এক্সাবেটর ব্যবহার করে নামমাত্র শ্রমিক দিয়ে কৌশলে (সরকার দলের কর্মীদের নাম) টিপসই দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছে। 

বাংলাদেশ চেয়ারম্যান সমিতির সাধারন সম্পাদক ৪নং চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এমদাদুল হক ভূঞার সঙ্গে হরিলুট বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় কর্মসৃজন প্রকল্প থেকে ৪নং চন্ডিপাশা ইউনিয়নকে বঞ্চিত করা হয়েছে। 

ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদুল হক ভূঞা জানান, প্রকল্পের বরাদ্দের ৪৫% টাকা দলের নেতাকর্মীদের না দিলে প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হয়না। এতে আমার ইউনিয়নে কর্মসৃজনপ্রকল্পের কোন কাজ করাতে পারিনি। আমার ইউনিয়নবাসী বারবার সরকারি বিভিন্ন সুবিধা (কর্মসৃজন, ভিজিএফ, জিআর সহ ইত্যাদি) থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন বলেন, কর্মসৃজন প্রকল্পের সমুদয় যে কয়েকটি কাজ হয়েছে তা এক্সাবেটর দিয়ে। এতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ থেকে কর্মসংস্থান থেকে হতদরিদ্ররা বঞ্চিত হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঐ উপজেলায় কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন নিয়ম নীতি মানছে না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কাগজে কলমে কাজ শুরু দেখালেও মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। কয়েকটি ইউনিয়নে মেশিন দিয়ে কাজ দেখানো হলেও বাকী ইউনিয়নগুলোতে কাজ না করেই প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের নামে শতকরা ৯০ভাগ বিল প্রস্তুত হয়েছে। 

মুশুল্লী ইউপি চেয়ারম্যান জানান, শ্রমিক না পাওয়ায় ২/১টি প্রকল্পে এক্সাভেটর যন্ত্রের ব্যবহার করা হয়েছে। বর্তমানে ২০০ টাকা মুজুরীতে শ্রমিক পাওয়া যায়না। 

এ বিষয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। 
জানা যায়, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আলিমকে প্রতি শ্রমিকের বিপরীতে উৎকোচ প্রদান করে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প চেয়ারম্যানগণ বিল প্রস্তুত করে নিয়ে গেছেন। কোন কোন ইউনিয়নে তালিকা শ্রমিকের বিপরীতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোট অংকের টাকা কমিশন পাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্সের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়ে থাকলেও করোনা কালীন সময়ে প্রশাসন সহ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা সরকারি অর্থ হরিলুটের প্রতিযোগীতায় মেতে উঠেছে। 

আমারসংবাদ/কেএস