বরিশালে বগুড়ার সেই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউপির একটি ধান ক্ষেত থেকে নাজনীন আক্তার নামে বগুড়ার এক কলেজছাত্রীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নাজনীন বগুড়া সদরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফের মেয়ে এবং বগুড়ার গাবতলি সৈয়দ আহম্মেদ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। 

বুধবার (২ জুন) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাটাজোরের কাটা গাছতলা খাল সংলগ্ন ধানক্ষেত থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন জানান, শিক্ষার্থী নাজনীন আক্তারের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। 

এদিকে বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়রির সূত্র ধরে ওই থানায়ই নাজনীন হত্যায় মামলা দায়ের হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (১ জুন) স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় বগুড়া সদর থানা পুলিশ ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধারে দিনভর অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফেরত যায়। 
ওই অভিযানে স্ত্রী নাজনীন হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত বগুড়া জাহাঙ্গীরাবাদ সেনানিবাসের ঝাড়ুদার সাকিব হোসেন হাওলাদারও উপস্থিত ছিল। সাকিব বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার নতুন চরজাহাপুর গ্রামের করিম হাওলাদারের ছেলে। তখন সাকিবের ভাড়া বাসার পিছনের সেফটিক ট্যাংকির ভেতর থেকে একটি ওড়না ও দুটি নখ পাওয়া গিয়েছিল। তারা চলে যাওয়ার পরদিন বুধবার (২ জুন) সকালে শিক্ষার্থী নাজনীনের লাশটি উদ্ধার হলো। 

পুলিশ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় ও প্রেমের সূত্র ধরে গত বছর ১লা অক্টোবর ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে নাজনীনকে বিয়ে করে সেনা সদস্য সাকিব। পরে গত ২৪ মে তার বাবার অসুস্থতার কথা বলে তাকে বগুড়া থেকে বরিশালে নিয়ে আসে। কিন্তু এরপর থেকেই তাদের মুঠোফোন বন্ধ ছিল। এই ঘটনায় গত ২৬ মে বগুড়া সদর থানায় নাজনীনের বাবা আব্দুল লতিফ একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। 

পরে পুলিশ সাকিবকে গ্রেপ্তার করলে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, স্ত্রী নাজনীনকে সাকিব বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের হরহর গ্রামে তার বাবার ভাড়া বাসায় নিয়ে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে স্ত্রী নাজনীনের লাশ ফেলে দেয় বলেও স্বীকার করে সাকিব। নিজেকে গরীব পরিবারের সন্তান পরিচয় দিয়ে নাজনীনকে বিয়ে করলেও বাড়িতে আসার পর তাদের ঘর ও আর্থিক দুরবস্থা দেখে ঝগড়ার এক পর্যায়ে রাগের মাথায় তাকে হত্যা করে বলেও স্বীকার করে গ্রেপ্তারকৃত সেনা সদস্য সাকিব।

আমারসংবাদ/কেএস