Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

তেঁতুলিয়ায় নদী সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি

জুন ৯, ২০২১, ১১:১৫ এএম


তেঁতুলিয়ায় নদী সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ইউনিয়ন পর্যায়ে নদী সংরক্ষণ শীর্ষক 'উদ্বুদ্ধকরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ' অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

বুধবার (৯ জুন) সকাল ১০টায় উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ৪৮ নদী সমীক্ষা প্রকল্পের অর্থায়নে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। প্রোগ্রাম অফিসার সেলিনা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ চন্দ্র সাহা। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ন সচিব একরামুল হক, ওয়াটার এক্সপার্ট সজিদুর রহমান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ মনির হোসাইন চৌধুরী ও জেলা-উপজেলার বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের মধ্যে মতামত তুলে ধরে তেঁতুলিয়া জার্নালিস্ট'স ক্লাবের আহবায়ক আশরাফুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সরকার হায়দার, আতিকুজ্জামান শাকিল। এছাড়াও অত্র ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ প্রশিক্ষণে অংশ নেন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন জানায়, দেশব্যাপী নদী রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপ গ্রহণের ধারাবাহিকতায় নদীর বর্তমান অবস্থা যাচাই, পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কৌশল এবং দূষণমুক্ত করার পদক্ষেপ গ্রহণের নিমিত্তে 'নদী দূষণ, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং অন্যান্য দূষণ থেকে ৪৮টি নদী রক্ষা এবং নদীর তথ্য ভান্ডার তৈরি ও গবেষণা প্রকল্প (১ম পর্ব)' এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সে মোতাবেক উক্ত প্রকল্পের আওতায় তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্তঘেষা মহানন্দা, করতোয়া, গবরা, বেরং, ভেরসাসহ বেশ কিছু নদীর সমীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ নদীগুলো রক্ষা বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভায় সকল স্তরের স্টেহোল্ডারদের নদী রক্ষায় এগিয়ে আশার জন্য আহবান করা হয় ও অবৈধ দখল উদ্ধার ও নদী দূষণ রোধে প্রশাসন এবং নদী ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করা হয়।

তারা আরও জানান, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণে দেশে নদ-নদী হারিয়ে ফেলেছে তার প্রাণপ্রবাহ। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিভিন্নমুখী উন্নয়ন প্রকল্পের বিরূপ প্রভাব পড়েছে নদ-নদীতে। নদীর নাব্যতা সংকট ও গতিপথ পরিবর্তনে প্রাকৃতিক কারণের সাথে মানবসৃষ্ট কারণও বিদ্যমান। প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছে দেশের নদ-নদীসমূহ। নদীর ভূমি দখলের কারণে নদী সংকুচিত হচ্ছে এবং নাব্যতা হারাচ্ছে। নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যা প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পাড় ভাঙনের তীব্রতা বাড়ার সাথে বাড়ছে বাস্তুহারা মানুষের সংখ্যা। এক সময়ের প্রবহমান নদ-নদী এখন দূষণ, ভরাট, দখলদারিত্ব আর অপব্যবহারের কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছেযোগাযোগ ব্যবস্থা ও এর মৎস্য সম্পদে। শহর, শিল্পকারখানা, হাটবাজার ও গৃহস্থালির কঠিন ও তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে, যা নদীসমূহের পানি দূষণের অন্যতম কারণ। পানি দূষণের ফলে ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য।

এছাড়া পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ও জীবিকার প্রয়োজনে উজানে বন উজাড় হচ্ছে এবং পাহাড়ের মাটি ক্ষয়ে যাচ্ছে। উজান থেকে আসা পানি অতিরিক্ত বালি, পলি বহন করছে। তাই নদী ভরাট হয়ে নাব্যতা কমে যাচ্ছে। ফলে পানি প্রবাহের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল উপাদান; যেমন মাছের উৎপাদন, নৌচলাচল, কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। নদীর সাথে সংযুক্ত খাল, বিল ও অন্যান্য জলাশয়ের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় নদী অববাহিকায় পানি ধারন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং নদীর পাড় ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ফলে উৎপাদন কমে যাচ্ছে। কৃষিকাজে ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার কমে যাচ্ছে।

আমারসংবাদ/কেএস