জহির খান, বরিশাল
জুন ১১, ২০২১, ০৫:২০ পিএম
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অদ্ভুত মুখের আকৃতি নিয়ে এক নবজাতকের জন্ম হয়েছে। শিশুটির নাক ও চোখ নেই। মুখের আকারও বিকৃত। মাথার ওপর বড় আকারের একটি টিউমারের মতো রয়েছে। তাছাড়া ঠোঁট ও ঠোঁটের তালু কাটা।
চিকিৎসকদের দাবি, অস্বাভাবিক সন্তান হওয়ায় প্রথমে তাকে নিতে অপারগতা প্রকাশ করেন নবজাতক শিশুর অভিভাবকরা। পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের বুঝিয়ে নবজাতককে নিতে রাজি করিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন) ভোর রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে শিশুটির জন্ম দেন মুন্নী বেগম নামের এক নারী। তিনি ভোলা জেলার কলাকোপা গ্রামের রিকশা চালক মো. জাফরেট স্ত্রী। তাদের সংসারে ছয় বছর বয়সের আরও একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে হাসপাতালের এ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক সজল পান্ডে জানান, গত বৃহস্পতিবার ভোর রাতে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে বিকৃত মুখের শিশুটির জন্ম হয়েছে। শিশুটি যখন জন্ম নেয়, তখন তারাও আতঙ্কিত হয়ে পরেছিলেন। নিজেদের সামলে অস্ত্রোপাচার সম্পন্ন করেন।
ওই চিকিৎসক আরও জানান, জন্মের পর নবজাতককে অভিভাবকদের কাছে দেয়া হলে প্রথমে তারা নিতে চাননি। পরে অনেক বুঝিয়ে শিশুটিকে অভিভাবকদের কাছে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই নবজাতককে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সেই সাথে শিশুটির মা হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা জানান, ওই নবজাতকটি ‘ক্রেনিয় ফেসিয়াল নেলফরমেশন’ নামের এক বিরল রোগে আক্রান্ত। এ ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগী খুব বেশি দেখা যায় না। জিনগত কারণে এ ধরনের সমস্যার দেখা দেয়। এই রোগীদের খুব বেশিদিন বাঁচার নজির নেই।
এদিকে বিকৃত মুখ নিয়ে জন্মানো ওই নবজাতককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে দরিদ্র রিকশা চালক বাবার পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। তাই নবজাতককে বাঁচিয়ে রাখতে সরকার ও দেশের হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে সহায়তা কামনা করেছেন তারা।
আমারসংবাদ/এআই