Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

মেহেরপুরে ১৫ দিনের কঠোর লকডাউন

মেহেরপুর প্রতিনিধি 

জুন ২২, ২০২১, ০২:৫০ পিএম


মেহেরপুরে ১৫ দিনের কঠোর লকডাউন

মেহেরপুর জেলায় আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা সংক্রমণ। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য বুধবার (২৩ জুন) থেকে দুই সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি। 

মঙ্গলবার (২২ জুন) জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির দীর্ঘ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় করোনা পরিস্থিতির সার্বিক দিক তুলে ধরেন সিভিল সার্জন ডাঃ নাছির উদ্দীন।

ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেওয়া সকল সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে লকডাউনের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ মুনছুর আলম খান। এ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশান লকডাউনের ঘোষণায় বলেন, সকল প্রকার চায়ের দোকান আগামি দুই সপ্তাহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। কোন স্থানেই জমায়েত ও আড্ডা চলবে না। সকাল ৬টা থেকে দুপুর বারটা পর্যন্ত কাঁচা বাজার, মুদিদোকান ও খাদ্য দোকান খোলা থাকবে। হোটেল রেস্তোরা সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে তবে কেউ হোটেলে বসে খেতে পারবে না। প্যাকেট করে খাবার সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে হবে। তবে ওষুধের দোকান খোলা থাকবে সার্বক্ষণিক। এছাড়াও শপিংমল, মার্কেটসহ সকল প্রকার দোকানপাট বন্ধ থাকবে।

দরিদ্র মানুষের কাজ বন্ধ থাকায় তারা কেউ ঋণের কিস্তি দিতে পারবে না। তাই আগামি দুই সপ্তাহ কোন এনজিও ঋণের কিস্তি আদায় করতে পারবে না।

গণপরিবহনের বিষয়ে তিনি বলেন, আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার সকল যানবাহন বন্ধ থাকবে। পাখিভ্যান, ইজিবাইক, অটো, নছিমন, করিমনসহ এরকম কোন বাহন চলবে না। রিকশায় একজন যাত্রী বহন করা যাবে। তবে মোটরসাইকেলে কোন অবস্থায় চালক ছাড়া আরোহী নেওয়া যাবে না। তবে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন চলবে।

ঘর থেকে কেউ বের হতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। কেউ ঘর থেকে বের হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে জরুরি কাজের সতত্য নিশ্চিত করে আইন শৃংখলা বাহিনীর অনুমতি নিয়ে বাইরে যাওয়া যাবে।

কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক ও অন্যান্য শ্রমিকরা কাজে যেতে পারবেন। তবে জরুরি নির্মাণ কাজ ছাড়া সকল নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।

সকল প্রকার সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে তিনি বলেন, বিয়ে, জন্মদিন, সুন্নতে খাতনা ও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ। আগামি দুই সপ্তাহ সকল প্রকার পার্ক ও বিনোদন কেন্দ্রগুরোও বন্ধ থাকবে।

যারা প্রাইভেট ও কোচিং করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন জেলা প্রশাসক।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনার অভাব রয়েছে। অনেকেই সব কিছু জেনেও মানছেন না। তাই জেলার প্রতিটি মসজিদে মাগরিবের নামাজের পর প্রচারণা চালানো হবে। 

এছাড়াও প্রতিটি ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করা হবে। যারা মানুষকে ঘরে রাখা, খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়াসহ করোনারকালীন বিভিন্ন সহয়োগিতায় স্বেচ্ছায় নিয়োজিত থাকবেন।

সভায় অংশ গ্রহণ করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রসুল, পুলিশ সুপার এসএম মুরাদ আলি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. ইয়ারুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ইব্রাহিম শাহীন, গাংনী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এএম খালেক, গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী, মেহেরপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সাধারণ সম্পাদক আলামিন হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল হক মানিক, বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন, পিরোজপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু বিশ্বাস, আমঝুপি ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দীন চুন্নু ও সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারবৃন্দ ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমরা সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই সকলে মিলে যদি এগুলো বাস্তবায়ন করি তাহলে অবশ্যই করোনার ভয়াবহতা এড়ানো সম্ভব হবে।

আমারসংবাদ/কেএস