Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ফেসবুকের কল্যাণে ২৭ বছর পর সন্তানকে ফিরে পেল মা

মো: তারেক পাঠান,পলাশ (নরসিংদী)

জুলাই ১৭, ২০২১, ০৮:৫০ এএম


ফেসবুকের কল্যাণে ২৭ বছর পর সন্তানকে ফিরে পেল মা

আট বছর বয়সে হারিয়ে গিয়েছিল শিশু আলোমগীর। হারানো সন্তানকে খুঁজতে বহু জায়াগায় ঘুরেছেন বাবা ও মা। কিন্তু কোথায় খুঁজে পাননি তাদের আদরের সন্তানকে। ফেসবুকের কল্যাণে হারিয়ে যাওয়া সেই সন্তানের খোঁজ পেলেন ২৭ বছর পর। 

আলোমগীর নরসিংদীর পলাশ উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের নোয়াকান্দা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হারিছ মিয়ার ছেলে। ২৭ বছর পূর্বে চট্রগ্রাম শহর থেকে হারিয়ে যান তিনি। এত বছর পর তাকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত তার পরিবার। আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীরা দলে দলে আলোমগীরকে দেখতে ভিড় করছেন তাদের বাড়ীতে। 

জানা যায়, হারানো আলোমগীরা ছয় ভাই দুই বোন। পরিবারের সদস্যদের মাঝে সবার ছোট আলোমগীর। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় অভাব অনটনে কোনরকম চলছিল তাদের সংসার। তাই ৮ বছর বয়সে প্রতিবেশি হুমায়ুনের বোন খুকির চট্রগ্রামে থাকার সুবাধে তাদের বাসায় থাকতে দেওয়া হয় আলোমগীরকে। একবছর পার হলে সেখান থেকে নিখোঁজ হয় আলোমগীর। 

আলোমগীর বলেন, চট্রগ্রামে বাসা থেকে নিচে নামার পর পথ হারিয়ে ফেলি। নাম ঠিকানা বলতে না পারায় একজন অপরিচিত চাচার সাথে নোয়াখালী সোনাইমুড়ী উপজেলার নরদমা বাজার দক্ষিণ সাততলা এলাকায় চলে যাই। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর একই এলাকার লিটন সরকার ও তার মা আমি যাকে নানি বলে ডাকি ওনার কাছে বেড়ে ওঠি। ওনারা আমাকে অনেক আদর করতেন। 

তিনি জানান, পিতা,মাতা ও পরিবারের সদস্যদের দেখার জন্য তার মন উতলা হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কীভারে তাদের সন্ধান পাবে সেটা তার জানা ছিল না। ঠিকানা, টেলিফোন, কিছুই জানা ছিল না তার। 

আলোমগীরের পরিবারের সদস্যরা জানান, আর জে কিবরিয়া নামে একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি ঢাকা থেকে ফেসবুকে আপন ঠিকানা নামে একটি অনুষ্ঠান করেন। সেই অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে গত রোববার (১১ জুলাই) আলোমগীর আর জে কিবরিয়ার সহযোগিতায় তার জীবনের বিস্তারিত তুলে ধরে তার পিতা, মাতা ও পরিবারের সন্ধান চাওয়া হয়। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে দেখতে পাই ২৭ বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া আলোগীর এটি। 

আলোমগীর জানান, আমি মা ও পরিবারের সন্ধান পেয়েছি। অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু পালক নানী ও মামার  জন্য খারাপ লাগছে। 

আলোমগীরের মা রাবেয়া বেগম জানান, মহান আল্লাহর রহমতে, হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। যারা আমার ছেলেকে লালন করে বড় করেছেন ও ফিরে পেতে সহয়োগিতা করেছেন তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ। আমার সন্তানকে পেয়ে আমি সহ আমার পরিবার অনেক খুশি। তার বাবা বেঁচে থাকলে আরও বেশি খুশি হতেন। যে কষ্ট এতদিন বুকে বিঁধে ছিল তা দূর হয়েছে। 

আমারসংবাদ/এআই