Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

বেঁচে থাকার স্বপ্ন জাগিয়েছে যে হাসপাতাল

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

জুলাই ১৮, ২০২১, ০৯:৫৫ এএম


বেঁচে থাকার স্বপ্ন জাগিয়েছে যে হাসপাতাল

দেশের প্রায় সবগুলো হাসপাতালেই করোনা রোগীর ঠাসা। সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা। এরই মধ্যে করোনায় বেঁচে থাকার স্বপ্ন জাগিয়েছে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ২০২০ সালের ২৪ এপ্রিল দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন টিমের যাত্রা শুরু।

৩টি টিমে বিভক্ত আইসোলশন ইউনিট। আইসোলেশন টিম, পোস্ট কোভিড কেয়ার টিম ও টেলিমেডিসিন টিম। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ হাজারের বেশি রোগীকে সরাসরি চিকিৎসা দিয়েছে আইসোলেশন টিম।

এছাড়াও প্রত্যেক রোগীকে লক্ষণ ভেদে এবং কোমরবিড কন্ডিশন বিবেচনা করে প্রত্যেক রোগীকে অনলাইনের মাধ্যমে ই-প্রেসক্রিপশনও করা হয়। প্রতিটির রোগীকে মোবাইল ও ভিডিও কলের মাধ্যমে খোঁজ-খবর রাখছেন সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত। 

দেবিদ্বারে এখনও পর্যন্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ৯৩৪ জন। উপজেলা পর্যায়ে করোনা রোগীদের উপর প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালিত হয় দেবিদ্বারে  ইতোমধ্যে ৪টি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। ২টির কাজ এখনও চলছে। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহায়তায় দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৩য় তলায় ১০ বেডের করোনা আইসোলেশন ইউনিট চালু করা হয়। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর (বাতাস থেকে অক্সিজেন তৈরি) যুক্ত করা হয়েছে। 

আইসোলেশন টিম প্রায় ৪০০ এর অধিক সন্দেহভাজন ও কনফার্মড মডারেট ও সিভিয়ার রোগীর চিকিৎসা করেছে।  করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য অত্যাবশকীয় পরীক্ষা নিরীক্ষার সুবিধাদী না থাকলেও শুধুমাত্র বুকের এক্সরে আর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার উপর ভিত্তি করেই এ জটিল রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। 

উপজেলা পর্যায়ে প্রথমবারের মত কোভিড-১৯ এর সাথে অ্যাড্রেনাল ক্রাইসিস, সিভিয়ার অলিগোহাইড্রামিনোস, টিবি ও হাইড্রোনিউমোথোরাক্স এর মত জটিল রোগীর চিকিৎসা হয়েছে এ হাসপাতালে। 

জাতীয় ও আন্তজার্তিক গাইড লাইনের আলোকে হাসপাতালেই সরবরাহকৃত ওষুধের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সমস্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হয়েছে। এতে রোগীদের চিকিৎসা খরচ অনেক কমেছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কোন রোগীকে রেফার্ড করা হয়নি। 

দেবিদ্বারের বাইরেও হাসপাতালটির অবস্থানগত কারণে চান্দিনা, মুরাদনগর, বুড়িচং, হোমনা, ব্রাক্ষণপাড়া এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কুটি, কসবা ও নবীনগরের বেশ কিছু সন্দেহভাজন কোভিড রোগীরা সেবা পেয়েছে দেবিদ্বারে। 

এখানে পোস্ট কোভিড ক্লিনিক ৩০০ এর অধিক কোভিড পরবর্তী জটিলতার রোগীর সেবা দিয়েছে। কোভিড সেবার পাশাপাশি চলমান ছিল বহিঃবিভাগ, অন্তঃবিভাগ ও জরুরি বিভাগের চিকিৎসাও টেস্ট হয়েছে ৩ হাজারের বেশি। 

করোনা ইউনিটের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আহমেদ কবীর। এছাড়াও আইসোলেশন, গবেষণা ও পোস্ট কোভিড টিম সমন্বয়ক ডা. চিন্ময় সাহা পোদ্দার ও ডা. নন্দিনী চৌধুরী। টেলিমেডিসিন সমন্বয়ক আছেন ডা. মহিম ইবনে সিনা। 

অন্যান্য টিম মেম্বাররা হলেন, ডা. মঞ্জুর রহমান, শরীফুল ইসলাম শাকিল, সোহেল রানা, রবিউল হাসান, শামীম কাউসার, অর্জুন সাহা, লিমা সাহা, আরিফুর রহমান, আসমা আক্তার, ফারহানা ইসলাম, ওয়াহিদউজ্জামান, উম্মে ফাতেমা, ফারিয়া জাফরিন, সুমাইয়া রুম্মান, জান্নাতুল ফেরদৌস, তন্ময় সরকার ও লুৎফুন্নাহার।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আহমেদ কবীর বলেন, করোনা মহামারীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল সকল বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসন লকডাউন বাস্তবায়নে মানুষকে সচেতন করতে স্বাস্থ্য বিভাগের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহে হ্যালো ছাত্রলীগ, হ্যালো স্বেচ্ছাসেবকলীগসহ বেসরকারি হাসপাতাল মালিক সমিতি সহায়তা করে যাচ্ছেন। 

আমারসংবাদ/এআই