Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

১০ কেজি চালের জন্য ভাইয়ের ছেলের ছুরিকাঘাতে কৃষক চাচা খুন

বরগুনা প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১, ০৮:৩০ এএম


১০ কেজি চালের জন্য ভাইয়ের ছেলের ছুরিকাঘাতে কৃষক চাচা খুন

১০ কেজি চাষের জন্য চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সাগরের ছুরিকাঘাতে চাচাতো নুরুল ইসলাম নামের এক কৃষক খুন হয়েছে। পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরণ করেছে। 

এ ঘটনার সাথে জড়িত আলানুর মুন্সি  ও তার মা আলেয়া বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে।

জানাগেছে, উপজেলা সেকান্দারকালী গ্রামের আলমগীর মুন্সির (৪৮) (আলানুর) মা আলেয়া বেগম (৬০) চাচাতো ভাসুরের ছেলে নুরুল ইসলাম মুন্সির স্ত্রী রানী বেগমের কাছ থেকে গত বছর ১০ কেজি চাল ধার নেয়। ওই চাল গত এক বছর ধরে পরিশোধ করেনি আলেয়া। 

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চাচী শ্বশুড়ী আলেয়া বেগমের কাছে ওই চাল চায় রানী বেগম। 

এতে ক্ষিপ্ত হয় চাচী আলেয়া বেগম। এ ঘটনার ১৫ মিনিট পরে চাচী আলেয়ার ছেলে আলানুর মুন্সি , নাতী সাগর মুন্সি ও জামাতা খলিল সিকদার দেশীয় অস্ত্র বগী ও ছুরি নিয়ে নুরুল ইসলামকে মারতে উদ্বত হয়। 

এসময় নুরুল ইসলাম মুন্সির ছোট ভাই হাসান মুন্সি আলানুরকে নিভৃত করে। কিন্তু আলানুরের ছেলে সাগর মুন্সি দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে চাচা নুরুল ইসলাম মুন্সির পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয় বলে জানান নিহতের ছোট ভাই হাসান মুন্সি। 

এতে সহযোগীতা করেন আলেয়া ও তার দুই মেয়ে খালেদা ও আসমা এ কথা বলেন প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের বোন মিনারা ও বিলকিস বেগম। ছুরিকাঘাত করে তারা পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়। আহত নুরুল ইসলামকে স্বজনরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।

ওই হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিমাদ্রী রায় আহত নুরুল ইসলামকে মৃত্যু ঘোষনা করেন। পুলিশ হাসপাতাল থেকে নিহত নুুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়ন তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত আলানুর মুন্সি ও তার মা আলেয়া (৬০) বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, আলানুর মুন্সির বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি ও তার ছেলে সাগর এলাকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনার বিচার দাবী করেন তারা।

নিহত নুরুল ইসলাম মুন্সির স্ত্রী রানী বেগম বলেন, চাচী আলেয়া বেগম গত বছর ১০ কেজি চাল ধার নেয়। ওই চাল এক বছরেও পরিশোধ করেনি। বৃহস্পতিবার সকালে আমার ঘরে চাচী আসলে আমি ওই ধার নেয়া চাল তার কাছে চাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তার ছেলে আলানুর, নাতী সাগর, জামাতা খলিল সিকদার, মেয়ে খালেদা ও আসমাকে পাঠিয়ে দেয়। তারা এসে আমার স্বামীকে ছুরি মেরে হত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

নিহত নুরুল ইসলাম মুন্সির ছোট ভাই হাসান মুন্সি বলেন, আলানুর বগি নিয়ে আমার ভাইকে মারতে আসে। আমি ওই বগী তার হাত থেকে টেনে নেই। কিন্তু তার ছেলে সাগর মুন্সির ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে আমার ভাইয়ের পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। এতে আমার ভাই গুরুতর আহত হয়। ভাইকে হাসপাতালে আনার পরে চিকিৎসকরা আমার ভাইকে মৃত্যু ঘোষনা করেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ হিমাদ্রী রায় বলেন, নিহত নুরুল ইসলাম মুন্সির  পেটের পাশে ধারারো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ রয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার  পেটের নারীভুরি কেটে গেছে। 

আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন,  নিহত নুরুল ইসলাম মুন্সির মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত আলানুর মুন্সি ও তার মা আলেয়া বেগমকে আটক করা হয়েছে।           

আমারসংবাদ/এআই