ঢাকা
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,
বরিশাল প্রতিনিধি
সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১, ০৯:৩০ এএম
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ হাওলাদার। যিনি গত কয়েক বছর আগে কৌশলে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। মামলা, হামলাসহ নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখতে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছিলেন। বর্তমানে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করলেও এখনও তিনি (ইউসুফ) জিয়া নাগরিক ফোরামের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বহাল রয়েছেন।
অস্তিত্ব ধরে রাখতে অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও ঘরের ছেলেরা সুযোগ বুঝে আবার ঘরে ফিরে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন ফোরামের সভাপতি। তবে আসছে ইউপি নির্বাচনে সুযোগ সন্ধানী ওই ইউপি চেয়ারম্যান পূর্ণরায় নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিতে দলের শীর্ষ নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বামরাইল ইউনিয়নের অসংখ্য আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেই ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বামরাইল ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এক সময়ের উজিরপুর উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ইউসুফ হাওলাদার।
সূত্র মতে, ২০১০ সালে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের আটিপাড়া এলাকায় পিকেটিং করে ব্যাপক গাড়ি ভাংচুর করে। সেই সময় ওই ঘটনায় উজিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইউসুফ হাওলাদার ও তার ভাই হিরন হাওলাদার আসামি হয়। এমনকি বর্তমানে বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে তার (ইউসুফ) ভাই হিরন হাওলাদার আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার অপর ভাই ইউনুস হাওলাদারও বিএনপি সমর্থক। এ ছাড়া ২০১৩ সালে আইনশৃংখলা বাহিনী আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের যে তালিকা করেছেন তাতেও রয়েছে ইউসুফ হাওলাদারের নাম।
এদিকে জিয়া নাগরিক ফোরামের উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ সেলিম হাওলাদার বলেন, ২০১২ সালে উজিরপুর উপজেলা শাখার জিয়া নাগরিক ফোরাম গঠিত হয়। ওই কমিটিতে তখন ইউসুফ হাওলাদারকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। কমিটি গঠনের সময় ইউসুফ নিজে উপস্থিত ছিলেন। এরপর ২০১৬ সালে ইউসুফ হাওলাদার আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকা মার্কায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি এখনও জিয়া নাগরিক ফোরামের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। বর্তমানেও ওই কমিটি বহাল রয়েছে।
বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কবির বলেন, আসছে ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমরা কোন অনুপ্রবেশকারী চাই না। এক্ষেত্রে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে প্রত্যাশা থাকবে দীর্ঘদিন থেকে যারা দল করে আসছেন তাদের মধ্য থেকেই যেন প্রার্থী নির্বাচন করা হয়।
এ সব বিষয় নিয়ে জানতে অভিযুক্ত বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ হাওলাদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০০৫ সাল থেকে আমি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছি। জিয়া নাগরিক ফোরামের কমিটির বিষয়ে আমার জানা নেই। কিছু দুস্কৃতকারীরা আমার নাম অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় দিয়েছে এবং মামলায় জড়িয়ে ছিলো।
এদিকে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে যারা দলের সাথে যুক্ত রয়েছেন তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া উচিত। আমরা দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করছি।
আমারসংবাদ/কেএস
