পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
অক্টোবর ২, ২০২১, ০৯:৩০ এএম
কক্সবাজারের পেকুয়ায় ভোলাখালে মাছ নিধনের মহোৎসব চলছে। নদীতে ফেলানো হচ্ছে বিষাক্ত পাউডার। এই গ্যাসীয় পাউডারের প্রভাবে নদীর পানি বিষে রুপান্তর হয়েছে। গত ১ বছরে উপজেলা প্রসাশন কয়েকবার জরিমানা করলেও তা তোয়াক্কা করে না ওই সিন্ডিকেট। নিয়মিত নদীতে ফেলা হচ্ছে গ্যাসীয় পাউডার। জোয়ার ভাটার ভোলা খালের পানিতে দেখা মিলছে এই বিষাক্ত পাউডারের।
সূত্র জানায়, এ সব পাউডারগুলি খুবই বিষাক্ত জাতীয়। সাদা ধবধবে এ সব পাউডার খালের পানিতে মিশিয়ে পানি ও বিষে রুপান্তর হচ্ছে। এতে করে খালের বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মৃত্যু ঘটছে। রাসায়নিক কেমিক্যাল নদীতে ছড়িয়ে পড়ার পর নদীর পানি এখন বিষে রুপান্তর হওয়ায় মিষ্টি ও লবণাক্ত পানির মিশ্রণে নদীটির মাছসহ বিভিন্ন জৈব বিচিত্রা ও জলজ প্রাণীজ মারা যাচ্ছে।
সরেজমিন পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা গেছে, পেকুয়া বাজারের উত্তর প্রান্ত বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটার ৫/৬ টি ও মগনামার বাইন্যাঘোনার ৩/৪মোকাম থেকে রাসায়নিক কেমিক্যাল পাউডার নদীতে ফেলা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাঠ আনা হচ্ছে পেকুয়ায়। জাহাজের পরিত্যক্ত অংশ বিশেষ কাঠ গুলি এখানে এনে মানুষের দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। কাঠগুলিতে ফসফরাস জাতীয় এক ধরনের পাউডার মিশ্রণ রয়েছে। কাঠমিশ্রিত পাউডারগুলি বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে পরিষ্কার করানো হয়। কাঠ থেকে এ সব পাউডারগুলি মূলত বিষাক্ত গ্যাসীয়। পানিতে মিশ্রিত হওয়ার পর সাদা পাউডার গুলো বিষে পরিণত হয়। এর ক্ষতিকারক প্রভাবে নদীর পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে।
বাইন্যাঘানা এলাকার মোহাম্মদ আনিস, কবির এমরান ও বারবাকিয়া ইউনিয়নের পূর্ব জালিয়াকাটার আবুল শরীফ, হাকিম আলীসহ ৫/৬ জন ব্যক্তি পাউডার নি:সরণ কাজে জড়িত। তারা চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কাঠ এনে বিভিন্ন দ্রব্যাদি তৈরী করে থাকে। এ সব মানুষের কাছে তারা বিক্রি করে। ভোলা খালের নিকটতম স্থানে জাহাজ থেকে আনা কাঠগুলি পরিষ্কার করা হয়। এর অবশিষ্ট অংশ গুলি সহজে নদীতে ফেলানো হয়।
মগনামা বাজার পাড়ার ব্যবসায়ীরা জানান, পাউডারগুলি নদীর পানি নষ্ট করছে। শুধু এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। পাউডারগুলি বাতাসে মিশ্রিত হয়ে মানুষের শরীর স্পর্শ করছে। এর ক্ষতিকারক অংশ আমাদের নাকে মুখে লাগছে। চোখে লাগছে বাতাসে উড়ন্ত সাদা দ্রবণগুলি। আমরা অনেককে বলেছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
পেকুয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিন বলেন, বিষাক্ত পাউডার গুলো যারা নদীতে ফেলছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূর্বিতা চাকমা বলেন, আমি নিজে অবগত বিষয়টি নিয়ে। দেখলাম পাউডার গুলো বাতাসে উড়ে মানুষের নাকে মুখে ডুকে পড়ে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আমারসংবাদ/কেএস