Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

বাউফলে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

এনামুল হক, বাউফল (পটুয়াখালী)

অক্টোবর ১২, ২০২১, ১১:৫০ এএম


বাউফলে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার

সারাদেশের মতো বাউফলেও প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের বাজারের দ্রব্যমূল্যর দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। সীমিত ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে। বাজারে গিয়ে পছন্দের জিনিস কেনা দূরের কথা একান্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যটি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যক্তিরা।

আর নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা আরো করুণ। তাদের পক্ষে এখন কোন মতো দুবেলা খেয়ে বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া ৯০ ভাগ মানুষের অত্যন্ত কষ্টে দিন পার করছেন।

বাজারে জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে যাদের আয় সীমিত তারা স্বাচ্ছন্দ্যে কোনও কিছুই কিনতে পারছেন না। বাজারে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে। শুধু আলু, কচু, মুখী ও পেঁপের কেজি ৫০ টাকার নিচে। প্রতিদিন যে জিনিসটি না হলেই নয় সেই চাল প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকার নিচে নেই। চিকন ও মাঝারি চালের দাম ৮০-৮৫ টাকা। কাঁচা মরিচ ২২০-২৫০ টাকা কেজি। এমন পরিস্থিতিতেও নতুন করে বেড়েছে চাল, আটা, পেঁয়াজ, ময়দাসহ অন্তত এক ডজন পণ্যের দাম।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী কালিশুরীর  বাসিন্দা সজন শিকদার বলেন, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আমাদের তিন বেলা মোটামোটিভাবে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পরেছে। 

তাঁরা বলেন, একদিকে বেতন সীমিত, অন্যদিকে সাংসারিক ব্যয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। ব্যবসায়ী সোহাগ মৃধা বলেন, মাছ, মাংস এমনকি ডিমের হালি ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। কিভাবে বাঁচব পরিবার নিয়ে সেই দু:চিন্তায় আছি।

শুধু সজন শিকদার, সোহাগ মৃধা নন  বর্তমান বাজারে প্রতিটি দ্রব্যের ক্রয়ের সক্ষমতা হারাতে বসেছে সাধারণ মানুষ। উপার্জনের সঙ্গে মিল অমিলের হিসেব কষতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে এ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভোক্তারা। জীবন যুদ্ধের এসে অনেকে হারমানা না মানার প্রশ্নে বিতর্কে জড়ালেও শেষ অবধি তারা হারমানতে বাধ্য হন দ্রব্যমূল্যের জায়গায় এসে।

ব্যাবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, অন্তত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের বিষয়টির দিকে প্রশাসনিক নজরদারী থাকলে সাধারণ মানুষের কষ্টের বোঝা কিছুটা হলেও লাঘব হতো।

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে খোলা আটা ও ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ টাকার বেশি। গত সপ্তাহে যে ময়দা ৩৫ টাকা কেজি পাওয়া যেতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকায়। আটা ৩২-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ১১০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। তাদের মতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম বেড়েছে। খাদ্যের দাম বেড়েছে। এ কারণে ব্রয়লার মুরগির ও ডিমের দামও বেড়েছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে আমদানি করা পেঁয়াজের প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৮ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি দরে যে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন, তা বিক্রি করছেন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে। 

গত সপ্তাহে তারা আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪২ টাকা কেজি দরে। এই সপ্তাহে বিক্রি করছেন ৫০ টাকা কেজি দরে। আর চিনি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাউফলে পাইকারী বাজার ও খুচরা বাজার কোনটিতে নেই কোনো মূল্য তালিকা। বিক্রেতার ইচ্ছে অনুসারে ক্রেতাকে দ্রব্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এদিকে প্রায় প্রতিটি বাজারে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে। ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৫০-৫৫ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বাঁধাকপি মাঝারি সাইজের এক পিস ৭৫-৮০ টাকা, ফুলকপি ছোট ৫০ টাকা, শিম ১৫০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।