খুলনা প্রতিনিধি
অক্টোবর ২৮, ২০২১, ১০:১০ এএম
খুলনার রূপসা উপজেলার রামনগর এলাকার আলোচিত রাজ খাঁ হত্যা মামলায় আসামি জাবেদ মল্লিক জামসেদকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলার অপর আসামি মিজান খাঁ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচার মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি রহিমনগর এলাকার মান্নান ওরফে মুরাদ মল্লিকের ছেলে জামসেদ ওরফে জাবেদ মল্লিক। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন শেখ এনামুল হক, এপিপি ইলিয়াস খান ও এপিপি মোসাঃ শাম্মী আক্তার।
আদালতের সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১ জুন সকালে এসআই মোঃ আব্দুল খালেক নন্দনপুর এলাকায় দায়িত্ব পালনের সময় জানতে পারে ওই এলাকার জনৈক ইমাম হোসেন জোয়াদ্দারের ইটের ভাটা আঠারো বাকী নদীর পশ্চিম পাড়ে বস্তা বন্দী লাশ পড়ে আছে।
সেখানে গিয়ে দেখেন লাশটি মস্তকবিহীন। সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরি করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন তিনি। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি।
এর আগে নিহতের পিতা আমীর আলী খাঁ ছেলে নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে রূপসা থানায় একটি জিডি করেন। অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে বলে পুলিশ মারফত তিনি জানতে পারেন। এ খবর জেনে তিনি থানায় যোগাযোগ করে তার ছেলের পোশাক দেখতে পেয়ে চিনতে পারেন।
নিহতের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। রাজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে প্রথমে কামরুল সরদারকে আটক করে। মোবাইল ফোন প্রাপ্তির কথা জানতে চাইলে ভ্যান চালক আজিজের নিকট থেকে সাড়ে তিন শত টাকায় ক্রয় করেছেন বলে জানান। আজিজের মাধ্যমে জামসেদকে গ্রেপ্তার করা হলে হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয় সে।
তদন্ত রিপোর্টে প্রকাশ হত্যা মামলার আসামিরা ও ভিকটিম একই এলাকার বাসিন্দা। আসামি মিজানের তৃতীয় স্ত্রী কাকলী নামের এক মহিলার সাথে রাজ খা অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি মিজান জানতে পেরে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা তার মাথায় আসে।
৩০ মে রাতে জামসেদের মাধ্যমে রাজকে ডেকে নেওয়া হয় ওই ইটের ভাটায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে মিজান ও জামসেদসহ আরও অজ্ঞাত দুই জন ব্যক্তি রাজকে জড়িয়ে ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। চাপাতি দিয়ে মিজান জবাই করে রাজের মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে তুচ্ছ ঘটনায় রাজের সাথে জামসেদের বিরোধ হয়। আর এ বিরোধের কারণে মিজানের পরিকল্পনায় অংশগ্রহণ করে বলে ১৬৪ ধারায় আদালতকে জনিয়েছেন সে।