Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা রহস্য উদঘাটন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি 

জানুয়ারি ১৭, ২০২২, ০৯:৪০ এএম


সিরাজগঞ্জে ব্যবসায়ী হত্যা রহস্য উদঘাটন

খুন করে পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাক লুট করেন একটি অপরাধী চক্র। থানা ঘুরে মামলা আসে সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর হাতে। দীর্ঘ তদন্তের পরে পিবিআই উদঘাটন করেছে এই রহস্য, চিহ্নিত করেছেন অপরাধী চক্রকে এবং এদের মধ্যে আটক করেছেন প্রধান অপরাধীকে। অপরাধী দোষ স্বীকার করে দিয়েছেন স্বীকারোক্তিও। স্বীকারোক্তিকালে জীবনে প্রথমবার মারামারির একটি মামলায় জেলহাজতে গিয়ে সেখানে তার পরিচয় হয় আরও কয়েকজন অপরাধীর সঙ্গে। সেখান থেকেই হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ অপরাধী।

সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদ (৩৮) হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিরাজগঞ্জের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মিলেছে আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সন্ধান। যারা দীর্ঘদিন ধরে পাবনা, নাটোর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাই করে আসছে।

তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর রাতে সলঙ্গা থানার পাটধারী এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদের মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এসময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় শামসুল হক (৪০) নামে আরও এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়। নিহত নূর মোহাম্মদ নাটোর জেলার নলডাঙ্গা থানার ঠাকুর লক্ষীকোল গ্রামের মো. তমিজ মন্ডলের ছেলে এবং আহত শামসুল হক এক গ্রামের হাফিজ আলী সরদারের ছেলে।

এঘটনায় নিহত নূর মোহাম্মদের ছোট ভগ্নিপতি জাকির হোসেন বাদী হয়ে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন। ১০ দিন পর পিবিআই মামলাটি গ্রহন করার পর সন্দেহভাজন আসামী অপর পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শামছুল হককে ৩ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কোন তথ্য উদঘাটন করতে না পেরে ৬/৭ মাস মামলাটির তদন্তকাজ স্থগিত করা হয়। এরপর আশপাশের জেলাগুলোতে ঘটে যাওয়া একই ধরণের কয়েকটি ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই। ওইসব ঘটনায় পাট, মহিষ, পিঁয়াজ, রসুন, নগদ টাকা, মোবাইল ছিনতাই এবং ডাকাতির মত তথ্য পাওয়া যায়। আর অপরাধীরা ছিনতাই করা মোবাইলের সিম ব্যবহার করে এসব অপকর্ম চালিয়ে আসছে বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে। এ অবস্থায় পিবিআই টিম আধুনিক তথ্য ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে একপর্যায়ে অপরাধীচক্রকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সময় নিহত নূর মোহাম্মদ যে স্থানে পেঁয়াজ লোড করেছিলেন সেখানেই ইছার উদ্দিন ওরফে ইছার (৪৮) নামে একজন দূর্ধর্ষ ডাকাতের অবস্থান সনাক্ত করা হয়। এরপরই তাকে গ্রেফতারের জন্য সন্ধান চালায় পিবিআই। পরবর্তীতে জানা যায় ইছার উদ্দিন ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার একটি ডাকাতি মামলায় কুমিল্লা কারাগারে আটক আছেন।

চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আইনী প্রক্রিয়ায় তাকে কুমিল্লা কারাগার থেকে এনে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইছার উদ্দিন নূর মোহাম্মদ খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে এবং এ ছাড়াও আরও ৫জন জড়িত আছে বলে জানায়। ইছার উদ্দিন দেশের বিভিন্ন জেলায় মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় খুন ও ডাকাতিসহ অন্তত ১৫/১৬টি মামলা রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, ইছার উদ্দিনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

আমারসংবাদ/কেএস