নিজস্ব প্রতিবেদক
মার্চ ১৩, ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম
সাত বছর আগে শরীয়তপুরের জাজিরা গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী চাঁদনী আক্তার হেনা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হোন। কিন্তু এখনও সন্তান হত্যার বিচার পায়নি পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে মামলার দ্রুত পুনঃ তদন্ত শেষে চিহ্নত ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে নারী নির্যাতন দমন চাঁদনী মঞ্চসহ জেলার বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
রোববার (১৩ মার্চ) শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর সংগঠনটি স্মারকলিপি প্রদান করে।
এর আগে বিচারের দাবিতে গত ১০ মার্চ সকালে নারী নির্যাতন দমন চাঁদনী মঞ্চের আয়োজনে ও জাজিরা গার্লস হাইস্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ঢাকা-শরীয়তপুর মহাসড়ক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন-নারী নির্যাতন দমন চাঁদনী মঞ্চ আহ্বায়ক জামাল মাদবর ও সদস্য সচিব পলাশ খান। পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক জাতীয় সংগঠন বিডি ক্লিন শরীয়তপুর জেলা টিমের সহ-সমন্বয়ক রাসেল মির্জা, সমাজকর্মী আব্দুল মোতালেব সুমন, বিডি ক্লিন জাজিরা টিমের সহ-সমন্বয়ক রুবেল মাদবর ও সদস্য মুক্তা খান, এনএনডিসিএম এর সদস্য- জাহিদ হাসান শাকুরী, জান্নাতুল ফেরদৌস নীলা প্রমুখ।
মো: পলাশ খান শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আসমাউল হুসনা লিজর সামনে চাঁদনী হত্যাকান্ড থেকে গত সাত বছরের তথ্য বিভিন্ন তথ্য উত্থাপন করেন। এসময় হত্যাকান্ডের বিচারকার্য ত্বরান্বিত করতে জেলা প্রশাসকের কাছে জোর দাবি জানান। এবিষয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, স্কুল ছাত্রী শিশু চাঁদনী আক্তার হেনার নৃশংস হত্যাকান্ড সম্পর্কে অবহিত হয়েছি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। বিষয়টি মনোযোগ সহকারে নেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ হতে স্মারকলিপিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, মামলার নথি সূত্রে পাওয়া যায় শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলাধীন ছোট মুলনা গ্রামের আজগর খানের মেয়ে ও জাজিরা গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী চাঁদনী আক্তার হেনা ২০১৫ সালের ১১ মার্চ একই গ্রামের বান্ধবী পাখি আক্তারের সঙ্গে স্কুলে যাবার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পরে বান্ধবী পাখি বাড়িতে ফিরলেও চাঁদনী আর ফিরে আসেনি। পরে তিনদিন পর চাঁদনীর লাশ বাড়ির কাছেই এক খালে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় চাঁদনীর বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে জাজিরা থানায় মামলা করেন। তিন মাস পর তিনি শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ০৯ জনকে আসামি করে পুনরায় মামলা করেন।
আসামিরা ছিলেন-যথাক্রমে- মোসা: পাখি আক্তার, মিলন ওরফে দুলাল মাদবর, জুয়েল ঢালী, মাসুদ বেপারী, ওয়াসিম তালুকদার, সোহেল ঢালী, রাজন, রুবেল তালুকদার, তোতা বেপারী। এরপর ২০১৭ সালের ১৪ জুন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এতে মাসুদ ব্যাপারী, ওয়াসিম তালুকদার, জুয়েল ঢালী, রুবেল তালুকদার ও রাজন পাঠান নামের পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুস সালাম এই মামলাটির রায় ঘোষণা করেন সেখানে সকল আসামীদের বেকসুর খালাস দিয়ে রায়ে উল্লেখ করা হয় কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
আমারসংবাদ/এমএইচ/এআই