Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

মিথ্যা ঠিকানায় আসছে বিদেশি সিগারেট

প্রিন্ট সংস্করণ॥হাসান-উজ-জামান

মার্চ ১২, ২০১৯, ০৬:৪৮ পিএম


মিথ্যা ঠিকানায় আসছে বিদেশি সিগারেট

অবৈধ বিদেশি সিগারেটে সয়লাব ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহর। অভিজাত থেকে শুরু করে ফুটপাতের পানের দোকানেও মিলছে বিদেশি সিগারেট। একটি দুষ্টুচক্র মিথ্যা ঘোষণা এবং মিথ্য ঠিকানা দিয়ে এসব সিগারেট দেশে আনছে। পরে তা ছড়িয়ে দেয় বাজারে। এতে করে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। বিভিন্ন সময় আমদানিনিষিদ্ধ সিগারেট ব্যবসায়ীরা গ্রেপ্তার হয় ঠিকই। কিন্তু জামিনপ্রাপ্ত হয়েই ফের শুরু করে একই কারবার। ঢাকার বিভিন্ন দোকানে বিদেশি সিগারেট সরববাহের জন্য রয়েছে একাধিক ডিলার। রমনা থানার একটি মামলার সূত্র মতে, সিআইডির গুলশান ইউনিটের একটি টিম ২০১৫ সালের অক্টোবরে মৌচাক মার্কেটের সামনের তিনটি দোকানে অভিযান চালায়। ওই সময় মাকসুদুর রহমান ও দোকানদার আলমকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপর এক দোকানদার ইউসুফ। পুলিশ ওই সময় এসব দোকান থেকে বিপুল আমদানি নিষিদ্ধ বিদেশি সিগারেট উদ্ধার করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব আসামিরা অবৈধ ব্যবসা বর্জন না করে উল্টো আরও বিস্তৃত করেছে। সূত্র জানায়, গত নভেম্বরে মতিঝিলের ফকিরাপুলে আমদানি নিষিদ্ধ সিগারেট বিক্রির ডিলার অভিযোগে শরীফ, শাহিন ও কালামের প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনি। ওই সময় শাহীনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, ফকিরাপুলের কালাম তার নিজ এলাকাসহ মতিঝিল ও এর আশপাশের খুচরা দোকানগুলোতে সিগারেট সরবরাহ করেন। বায়তুল মোকাররম এলাকায় রিপন। নিউমার্কেট এলাকার ডিলার সবুজ, বাবুল ও জোবায়েদ। গুলশানে কালু, তাহের ও মান্নান ডিলার হিসেবে নিয়োজিত। মান্নান ওয়্যার হাউজ থেকে অলক বাবুর মাধ্যমে বিদেশি সিগারেট বের করেন। পরে তা পাইকারি হিসেবে গুলশান-বনানী ও উত্তরায় ছোট দোকানগুলোতে সরবরাহ করেন। ওই মান্নান একসময় ডিলার তৈয়বের কর্মচারী ছিলেন। মাস দেড়েক আগে নারায়ণগঞ্জের টানবাজার এলাকায় অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ওই সময় ধরা পড়ে অবৈধ সিগারেট ব্যবসায়ী শাহজাহান। মাঝে মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে কেউ কেউ ধরা পড়লেও বন্ধ হয়নি এসব অবৈধ ব্যবসা। সূত্রমতে, প্রতি মাসে কয়েক কন্টেইনার সিগারেট এভাবে সরবরাহ হচ্ছে। এর আগে চট্টগ্রাম বন্দর কাস্টম হাউসে আনুমানিক ২৩ কোটি টাকা মূল্যের বড় দুটো চালান ধরা পড়ে। কাগজপত্রে চালান দুটি ঢাকার মতিঝলের রহমান ম্যানশনের মেসার্স এন ইসলাম এন্টারপ্রাইজ এবং যাত্রাবাড়ীর মেসার্স আনোয়ার অ্যান্ড কোম্পানি নামে। কিন্তু কাস্টমস এসব প্রতিষ্ঠানের হদিস পায়নি। এভাবে মিথ্যা ঠিকানা ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা বিদেশি সিগারেট আনছে। এছাড়াও বিদেশি ফ্রিজসহ বাক্সজাতীয় পণ্যের ভেতরে করেও আনা হচ্ছে এসব সিগারেট। বিদেশি সিগারেটে আভিজাত্য প্রকাশ করে- এ ধারণা থেকে তরুণসমাজই এর বড় ক্রেতা। সূত্র জানায়, কাস্টমস, কাস্টমস ইন্টালিজেন্স এবং সরকারি সংস্থা এ ধরনের চোরাচালানি রোধে কাজ করলেও দুষ্টুচক্রের অপতৎপরতা রোধ হচ্ছে না কিছুতেই।