Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

রোহিঙ্গা অনুদানে লাভবান হচ্ছে বিদেশি ব্যাংক

প্রিন্ট সংস্করণ॥বিশেষ প্রতিবেদক

মার্চ ২০, ২০১৯, ০৬:২১ পিএম


রোহিঙ্গা অনুদানে লাভবান হচ্ছে বিদেশি ব্যাংক

রোহিঙ্গাদের জন্য আসা বৈদেশিক সহায়তা ও অনুদান দেশীয় ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন না করে বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে করা হচ্ছে। এতে বিদেশি ব্যাংক লাভবান হলেও বঞ্চিত হচ্ছে দেশীয় ব্যাংক। তাই দেশীয় ব্যাংকের মাধ্যমে এই লেনদেন করা যায় কি না সে বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চেয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দেশ ও দাতা সংস্থার মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা অনুদান ও সহায়তা হিসেবে আসছে। এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৪৮ কোটি ডলার বা তিন হাজার ৮৪০ কোটি টাকার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই সহায়তা আসার আগেই বিদেশি ব্যাংকের পরিবর্তে দেশীয় ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করার সিদ্ধান্ত নিলে তা দেশের জন্যই উপকার হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের জন্য আসা বৈদেশিক সহায়তা ও অনুদান বৈদেশিক ব্যাংকের মাধ্যমে না করে সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে করতে অনুরোধ করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এ জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।সোনালী ব্যাংকের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সরকার তাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে বিশাল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সাধ্যমতো আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে। এই সহায়তার বৈদেশিক মুদ্রার সমুদয় অর্থ বিদেশি/বহুজাতিক ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী শরণার্থীদের জন্য দেয়া বৈদেশিক সহায়তা রাষ্ট্রাত্ত ব্যাংকের মাধ্যমে আনা, সংরক্ষণ ও স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তরসহ সামগ্রিক ব্যাংকিং কার্যক্রম সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে করা সম্ভব। এই লেনদেল থেকে অর্জিত আয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক প্রকারান্তরে সরকার তথা জনস্বার্থ সুরক্ষিত থাকবে। তাই সার্বিক ব্যাংকিং কার্য সম্পাদনে সক্ষম ব্যাংক হিসেবে সোনালী ব্যাংক আপনাদের প্রাতিষ্ঠানিক সেবা প্রদানে আগ্রহী।চিঠিতে তিনি আরো বলেন, সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সোনালী ব্যাংক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য সহায়ক প্রয়োজনীয় ব্যাংকিংসহ সেবা প্রদানে সম্মত। সে লক্ষ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের যে সব এলাকায় বসবাস করবে, তাদের সেখানে ব্যাংকের বিদ্যমান শাখার মাধ্যমে সব প্রকার অনলাইন ব্যাংকিং (সরকারি ট্রেজারি চালান জমাসহ) সেবা গ্রহণের পাশাপাশি সরকারের গৃহীত কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার সুযোগ চাওয়া হয়েছে।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় বিষয়টি আমলে নিয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বসবাসকারী বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য প্রাপ্ত বৈদেশিক অনুদান ও সহায়তা বৈদেশিক মুদ্রা রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে সংরক্ষণ এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সহায়তা কার্যক্রম এই ব্যাংকের মাধ্যমে করার প্রস্তাবের বিষয়ে মতামত দেয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর গত ১৮ মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তার আগে গত কয়েক দশকে এসেছে আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে মিয়ানমার সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ওপর সমীক্ষার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা মিতসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে (এমএসএফ) বলেছে, মিয়ানমারে ২৫ অগাস্ট সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর একমাসেই অন্তত ছয় হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এ বিষয়ে সু চির অবস্থান নিয়ে তার মনোভাব জানতে চাইলে লি বলেন, হয় তিনি বিষয়টি অস্বীকার করছেন অথবা প্রকৃত ঘটনা থেকে তিনি অনেক দূরে আছেন।