Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ঝুলছে চেক জালিয়াতির ছয় লাখ মামলা

শরিফ রুবেল

মার্চ ১, ২০২০, ১১:০৬ পিএম


ঝুলছে চেক জালিয়াতির ছয় লাখ মামলা
  • ঢাকার ৩৩টি আদালতে বিচারাধীন এক লাখ ২৩ হাজার মামলা 
  • শুধু ঢাকায় প্রতিদিন ২০০ জন চেক জালিয়াতির শিকার
  • চেক ডিজঅনার মামলা থেকে রূপ নিচ্ছে ১০ ভাগ ফৌজদারি মামলা
  • এক যুগে আট লাখেরও বেশি মানুষ চেক জালিয়াতির শিকার হয়েছেন
  • জালিয়াতির শিকার ৮০ ভাগই ব্যবসায়ী

আজমত আলী। সাভারের হেমায়েতপুরের বাসিন্দা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে গামের্ন্টস ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। আজমতের ব্যবসায়িক পার্টনার সিদ্দিকুর রহমান। কিন্তু ২০১৪ সালে ব্যবসার নগদ ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান সিদ্দিকুর রহমান।

পরে আজমতের চাপে সালিশের মাধ্যমে আট লাখ টাকা ফেরত দিতে রাজি হন সিদ্দিকুর। এমনকি ওই বছরের ১২ নভেম্বর চেকের মাধ্যমে আট লাখ টাকা পরিশোধও করেন।

কিন্তু বিপত্তি ঘটে এখানেই, সিদ্দিকুরের চেকে দেয়া অর্থ তুলতে চেকটি ডার্চ-বাংলা ব্যাংকের সাভার শাখায় জমা দিলে অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়।

পরে ব্যবসায়ী আজমত আলী কোনো উপায়ান্তর খুঁজে না পেয়ে প্রতারক সিদ্দিকুরের নামে আট লাখ টাকা চেক জালিয়াতির মামলা করেন ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। ব্যাংকে টাকা না থাকার বিষয় জানিয়ে সিদ্দিকুরকে উকিল নোটিস পাঠালেও তিনি টাকা পরিশোধ করেননি।

এমনকি তিনি যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। টাকা উদ্ধারে মামলা করলেও গত ছয় বছরেও সেই মামলার কোনো সুরাহা হয়নি। নিন্ম আদালত গড়িয়ে উচ্চ আদালতে এসেছে মামলাটি। এখন উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

আজমতের মতোই আরেক ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন। টেক্সটাইল মিলস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সোহরাব হোসেন আবদুল্লাহ আল হাসানের কাছে পাঁচ কোটি টাকা পান। ঘটনাটি ২০১৪ সালের জুন মাসের।

ওই বছরের ২৩ নভেম্বর আবদুল্লাহ টাকা পরিশোধের জন্য একটি চেক ইস্যু করেন। চেকটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকে কারওয়ান বাজার শাখার জমা দেয়া হলে হিসাব নম্বরে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা ডিজঅনার হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইনি নোটিস দিলেও টাকা পরিশোধ করেননি আবদুল্লাহ।

পরে পাঁচ কোটি টাকার চেক জালিয়াতির মামলা করেন ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। আবদুল্লাহ আল হাসানকে আসামি করে ঢাকার ১৯ নম্বর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলাটি করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ছয় বছরেও ওই মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি।

এদিকে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ৭২৮৪/০৯ মামলার নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রিমিয়ার ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাদি এসএস জেনারেল ট্রেডিং কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. আবু সাঈদ ও একরামুল হকের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা করেন।

আসামিরা ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি পাওনাদার ব্যাংককে ২৫ লাখ টাকার চেক ইস্যু করেন। চেকটি ডিজঅনার ঘোষিত হয়। জানা যায়, চেক ডিজঅনারের অধিকাংশ মামলা চার থেকে পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও মামলার বিচারকার্যই শুরু হয় না। ফলে মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আসামিরা।

পরে হাইকোর্টের আদেশে বছরের পর বছর স্থগিত থাকে এসব মামলা। শুধু আজমত আলী ও সোহরাব হোসেনরাই নন, সারা দেশে এমন অসংখ্য চেক জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। মামলাও হচ্ছে, কিন্তু বিচার হচ্ছে না।

ফলে মামলাগুলো ঝুলে আছে বছরের পর বছর। চেক ডিজঅনারের মামলার অধিকাংশ বিবাদি প্রভাবশালী ও বিত্তবান। মামলাটি জামিনযোগ্য হওয়ায় আইনের ফাঁকফোকর ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে জাল চেক প্রদানকারীরাজামিনে বেরিয়ে যাচ্ছেন।

অপরদিকে জালিয়াতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানা-পুলিশ হচ্ছে। অনেকে আদালতেও যাচ্ছেন। কিন্তু সুফল মিলছে খুবই কম। ফলে ঝুলে যাচ্ছে অসংখ্য মামলা। দিন দিন মামলার পাল্লাই ভারী হচ্ছে, বিচারের পাল্লা শূন্যই রয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ঝুলছে অসংখ্য মধ্যবিত্ত পরিবারের ভাগ্যও।

আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেক ডিজঅনারের মামলার জন্য নির্দিষ্ট আইন আছে। সংশ্লিষ্ট আইনে আদালতে মামলা করতে হয়। কিন্তু অজ্ঞতার কারণে অনেকেই থানায় গিয়ে মামলা করে থাকেন।

থানায় মামলা করে টাকা উদ্ধার করতে পারেন না। থানায় মামলা করার কারণে চেক প্রতারণার মামলার সংখ্যাই শুধু বেড়েছে। কিন্তু কোনো ফলাফল আসেনি।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চেক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাবও একটি বড় সমস্যা। দৈনন্দিন জীবনে চেকের ব্যবহার বাড়ছে প্রতিনিয়ত। পাশাপাশি প্রতারণার ঘটনায় উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে মামলার সংখ্যা।

তাই চেক গ্রহণ করার আগে সর্তকর্তা অবলম্বন করতে হবে। আর চেক জালিয়ারি মামলার বিচার খুবই কম হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর বিচার না হওয়ার কারণেই প্রতারকরা এত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দ্রুত সময়ে জালিয়াতির বিচার হলে আর কেউ এই অপরাধ করতে সাহস পেতো না।

তারা জানিয়েছেন, চেক প্রতারণার মামলায় আদালতে এসে এমনভাবে ঘুরতে হলে আইনের প্রতি মানুষের আস্থা আর থাকে না। তাদের মতে, একটি মামলা শুনানির জন্য বছরে একটি তারিখ ধার্য করা ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।

নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টে (এনআই) দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা এখন ছয় লাখের উপরে। এনআই অ্যাক্টের মামলা থেকে রূপ নিচ্ছে অসংখ্য ফৌজদারি মামলা। তৈরি হচ্ছে আর্থসামাজিক অস্থিরতা, টানাপড়েন, পারিবারিক অশান্তি। চেকের মামলায় আত্মহত্যা, হার্ট অ্যাটাক, ব্রেইনস্ট্রোক করে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

পাশাপাশি আত্মগোপন কখনো বা বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। জানা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে ১৫০ জন চেক জালিয়াতির ফাঁদে পড়ে নাকাল হচ্ছেন। প্রতারকরা চেককে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন।

এদের মধ্যে এক থেকে দেড়শ ব্যক্তি থানায় প্রতারণার মামলা করেন। বাকিরা টাকা আদায়ের জন্য আদালতে প্রতারকদের বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট (এনআই অ্যাক্ট) আইনে মামলা করছেন। এভাবে প্রতি বছর ৬৬ থেকে ৭০ হাজার লোক মামলার জালে আটকা পড়ছেন।

গত এক যুগে আট লাখেরও বেশি নাগরিক প্রতারকের খপ্পরে পড়ে চেক জালিয়াতির শিকার হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮০ ভাগই ব্যবসায়ী। অল্প সময়ে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় বছরের পর বছর আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে তাদের।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে পরিমাণ টাকা উদ্ধারের জন্য মামলা করা হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা আইনজীবী ও আদালত সংশ্লিষ্টদের পেছনে খরচ হয়ে যায়।

পাওনাদারের টাকা (ব্যবসায়ী কিংবা ব্যক্তি) পরিশোধের জন্য ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিরা চেক ইস্যু করে থাকেন। ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের চেক ডিজঅনার হয়ে থাকে। হিসাব নম্বরে যথেষ্ট টাকা নেই বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়।

ফলে পাওনাদাররা টাকা তুলতে পারেন না। আইন না জানার কারণে প্রতারণার শিকার অনেকেই থানায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করেন। এ আইনে মামলা করে তারা কোনো দিনও টাকা উদ্ধার করতে পারেন না। নিয়ম হচ্ছে— চেক ডিজঅনার ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইনজীবীর মাধ্যমে ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি নোটিস দেবে।

এরপরও পাওনাদারের টাকা পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আদালতে চেকদাতার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। ঋণের টাকা আদায়ে প্রতারকের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় মামলা করতে হয়। এ প্রক্রিয়ায় প্রতারিত ব্যক্তিরা টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হচ্ছেন।

মামলার পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, আগস্ট মাস পর্যন্ত ঢাকা মহানগরের ৩৩টি আদালতে প্রায় এক লাখ ২৩ হাজার চেক জালিয়াতির মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ঢাকার ১৬টি মহানগর দায়রা জজ আদালত ও ১০টি বিশেষ জজ আদালসহ বিভিন্ন আদালতে চেক জালিয়াতির (এনআই অ্যাক্ট) মামলা হয়ে থাকে।

জানা গেছে, ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে শতাধিক ব্যক্তি চেক জালিয়াতির ফাঁদে পড়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এভাবে প্রতি বছর ৫০-৬০ হাজার মানুষ মামলার জালে আটকা পড়ছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত এ আদালতে ২২ হাজারের মতো নতুন মামলা হয়েছে। এর মধ্যে আট হাজার মামলাই চেক জালিয়াতির।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টাকা উদ্ধারের জন্য এনআই অ্যাক্টে মামলা করা হয়। এসব মামলার অনুসন্ধান বা কোনো তদন্ত হয় না। তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা আইনজীবী ও আদালত-সংশ্লিষ্টদের পেছনে খরচ হয়ে যায়। দীর্ঘ দিনেও এসব মামলার রায় না হওয়ায় হতাশ মামলার বাদিরা।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘এ মামলা নিষ্পত্তি হয় ধীরগতিতে। চেক ডিজঅনার মামলার রায় হলেও বাদি তার টাকা ফেরত পান না। শাস্তি হয়, কিন্তু আসামি কীভাবে টাকা পরিশোধ করবে সেটা রায়ে উল্লেখ থাকে না।

অনেক আসামি পলাতক থাকায় তাকে খুঁজেও পাওয়া যায় না। এখানেই বাদির আরেকবার ভোগান্তি। এটা কমাতে হবে। ওই আদালত থেকে আসামির মালপত্র ক্রোক করে টাকা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ আমার সংবাদকে বলেন, ‘চেক ডিজঅনার ভয়াবহ অপরাধ। কিন্তু সেই অনুযায়ী শাস্তি নেই। আর শাস্তি যেটা আছে, সেটাও মামলার দীর্ঘসূত্রতায় আটকে যায়।

বর্তমান সময়ের ব্যবধানে আইনটির বেশকিছু প্রায়োগিক দুর্বলতা রয়েছে। এটাকে আরও যুগোপযোগী করা উচিত। উকিল নোটিস ছাড়া এনআই অ্যাক্টের মামলা করা যাবে না, এমন বিধান সংযোজন করতে হবে।’

ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান আমার সংবাদকে বলেন, ‘এসব মামলায় অনেক সময় আসামি গ্রেপ্তার হয়, কিন্তু বিচার হয় না। শাস্তির নজির খুবই কম হওয়ায় অপরাধীদের ভয় কম। আর মামলাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি হলে এসব অপরাধ কমে আসবে। এনআই অ্যাক্টের মামলাগুলো জামিনযোগ্য ধারা হওয়ায় আসামিরা সহজে পার পেয়ে যায়।

কিন্তু এ মামলার রায়ে তিনগুণ টাকা জরিমানা ও এক বছরের জেল দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু যে ব্যক্তি মূল দেনা দিতে পারে না, সে কীভাবে তিনগুণ টাকা দেবে। এ ব্যাপারে আইন সংশোধন করে সহজ পথ বের করতে হবে।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাদির অজ্ঞতার কারণে মামলা বাধাগ্রস্ত হয়। কারণ, এসব মামলা থানায় করা যাবে না, এগুলো আদালতের মামলা। আবার জরিমানার টাকা কীভাবে আদায় হবে, বাদি কীভাবে তার পাওনা টাকা পাবে আইনে এর কোনো সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান বা ব্যাখ্যা নেই।

এমন পরিস্থিতিতে চেক ডিজঅনার মামলার অনেক রায় অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়েছে বছরের পর বছর। এর কোনো সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। বিচারপ্রার্থী মানুষের ভোগান্তি অবসানের লক্ষ্যে এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা সংশোধন করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

এদিকে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বরে এনআই অ্যাক্টের বেশ কিছু সংশোধনী আইন মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায় আইন কমিশন। নিরীহ, নিরপরাধ মানুষের হয়রানি রোধে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সংশোধনীর সুপারিশটি পাঠানো হয়। দুই বছর পরে সেই সংশোধনী এনে ২০২০ নতুন খসড়া প্রণয়ন করে সরকার।

নতুন করে চেক ডিজঅনার আইন সংশোধন, বাড়ছে জেল-জরিমানা : কারো চেক ব্যাংকে ডিজঅনার হলে তা অপরাধযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এর শাস্তির বিধানও বাড়ানো হয়েছে। নতুন আইনে অপরাধীকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা চেকে লিখিত অর্থের চারগুণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হচ্ছে।

অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হচ্ছে। সরকার চেক ডিজঅনারের মামলায় নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট ১৮৮১ সংশোধন এরকম কঠোর বিধান রেখেই প্রণয়ন করতে যাচ্ছে।

সম্প্রতি বিনিময়যোগ্য দলিল আইন-২০২০ এর খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্টে চেক ডিজঅনারের মামলায় এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। সংশ্লিষ্ট যে পরিমাণ টাকা উল্লেখ করা হয়, তার তিনগুণ জরিমানা করা হয়। অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।

নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার কোনো ব্যাংকের হিসাবে অপর কোনো ব্যক্তিকে যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধের জন্য চেক লিখে দিয়েছেন, কিন্তু ব্যাংক হিসাবে যে পরিমাণ টাকা আছে তা দিয়ে যদি চেক সমন্বয় করা সম্ভব না হয়, আবার ওই হিসাব থেকে টাকা পরিশোধের জন্য ব্যাংকের সঙ্গে যে পরিমাণ টাকার চুক্তি করা হয়েছে, তা অতিক্রান্ত হওয়ায় কিংবা স্বেচ্ছায় ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে লেনদেন স্থগিত বা বন্ধ করার কারণে ব্যাংক কর্তৃক ওই চেকটি অপরিশোধিত হয়ে ফেরত এলো, তাহলে ওই ব্যক্তির মাধ্যমে অপরাধ সংঘটন করেছে বলে বিবেচিত হবে।

এ অপরাধে অপরাধী নতুন এ আইনে সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর মেয়াদ পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা চেকে লিখিত অর্থের চারগুণ অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আইন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১৮৮১ সালে প্রণীত হয় এনআই অ্যাক্ট। মূল এ আইনটি ১৯৯৪ সালের ২০০০ এবং সর্বশেষ ২০০৬ সালে সংশোধন হয়। তবে এই সংশোধনগুলো আইনের মৌলিক কাঠামোয় পরিবর্তন আনা হয়নি।

আমারসংবাদ/এসটিএমএ