Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশে নামলেও চালের দাম কমেনি

জাকির হোসেন॥ প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ২, ২০১৭, ০৭:৩৯ এএম


আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশে নামলেও চালের দাম কমেনি

আমদানি শুল্ক (ট্যারিফ) ১০ শতাংশে নামিয়ে এনে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল চালের দাম কমে আসবে কিন্তু এখনও কমেনি। অথচ শুল্ক কমানোর পরপরই নিম্ন ও মধ্যবিত্তের মাঝে চালের দাম কমার যে ক্ষীণ আসার সঞ্চার হয়েছিল, তা স্বপ্নই রয়ে গেছে। ঈদের ছুটির পর রাজধানীর একাধিক বাজারে গিয়ে দেখা গেছে মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা এবং সরু বা চিকন চাল প্রকার ভেদে ৫২ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ আগের দামই বহাল রয়েছে।

গত ২০ জুন সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার কথা চিন্ত করে এখন থেকে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করা যাবে। এতে চলমান বাজারমূল্য দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তিনি বলেন, চালের কোনো সংকট নেই। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছে। বাসাবো বউ বাজারে চাল কিনতে এসে বেসরকারি চাকরিজীবী মিজানুর রহমান জানালেন, ৬০ টাকা কেজি দরে নাজিরসাইল চাল কিনেছি। ঈদের আগে ৫৮ টাকায় কিনেছি। মাত্র কদিনেই ২ টাকা বেড়েছে। আমদানি শুল্ক কমানোর পর চালের দাম কমার কথা থাকলেও বাস্তবে ঘটেছে তার উল্টো। তিনি বলেন, যে বেতন পাই তা দিয়ে চালের টাকার বাড়তি জোগান দেয়া অনেক কষ্টকর।

এদিকে বাজারে দেখা গেছে, মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা কেজি প্রতি ৪৮-৫০ টাকা ও পাইজাম কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়। সরু চালের মধ্যে মিনিকেট কেজিতে ৫৪-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫-৬০ ও আঠাইশ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়। সরকারি হিসাবে জুন পর্যন্ত গত এক বছরে সাধারণ মানের মোটা চালের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশের বেশি; আর এক বছরে বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা টিসিবির হিসাবে ঢাকার বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি চাল সর্বনিম্ন ৪৬ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিকে দায়ী করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাজেট আলোচনায় তিনি বলেন, ১ কোটি ৬ লাখ ৫৮ হাজার ৮২১ মেট্রিক টন খাদ্য মজুদ থাকায় খাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি দেশে সৃষ্টি হয়নি। তবে হ্যাঁ, এই মূল্য বৃদ্ধিটা বৃষ্টির কারণে। যেহেতু হাওরে ফসল নষ্ট হয়েছে; সে কারণে কিছুটা মূল্য বৃদ্ধি। তবে খাদ্যের অভাব কিন্তু আমাদের নেই। কিন্তু কিছুদিন চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চালের মজুদ যে কম আছে সেটা কিন্তু নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। চাল আমদানির কর কমিয়ে দিয়েছি। ফলে এখন খাদ্যশস্য আসবে। চালের দাম বৃদ্ধিতে দেশের কৃষক কিন্তু এবার তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

আমদানি শুল্ক কমানোর পরও কেন চালের দাম কমেনি জানতে চাইলে জামালপুরের চাল ব্যবাসায়ী কাজী মো. কাউয়ুম আমার সংবাদকে জানান, শুল্ক কমানোর পর বেসরকারি পর্যায়ে ভারত থেকে চাল আসা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে গ্রামপর্যায়ে মোটা চালের দাম কমতে শুরু করেছে। তবে ঢাকায় সপ্তাহ খানের পরে কমবে। কারণ ব্যবসায়ীদের কাছে যে চাল আছে তা বিক্রি না হওয়া পর্যন্ত কমবে না। তারাতো আর লোকসান দিয়ে চাল বিক্রি করবে না। যেহেতু তারা বেশি দাম দিয়ে চাল কিনেছে।