Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

লক্ষাধিক শিক্ষকের স্বপ্নভঙ্গ

বেলাল হোসেন॥প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ৬, ২০১৭, ০৭:২১ এএম


লক্ষাধিক শিক্ষকের স্বপ্নভঙ্গ

দীর্ঘ ৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি না হওয়ায় হতাশায় পড়েছেন লক্ষাধিক শিক্ষক এবং এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারি ও তাদের পরিবার। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ননএমপিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় এ হতাশা এবং স্বপ্ন ভঙ্গ। অথচ শিক্ষক নেতাদের বিভিন্ন সময় আশা দেওয়া হয়েছিল চলতি বাজেটে এমপিওর জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকবে। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। এ অবস্থায় শিগগিরই এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বঞ্চিত শিক্ষকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, বর্তমানে দেশে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ননএমপিওভুক্ত সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষক কর্মরত। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য যে যে শর্ত পূরণ করতে হয় তা সম্পূর্ণ আছে বলে বিশেষ সূত্রে জানাযায়।
শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ২৭ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রয়েছেন ৩ লাখ ৫৭ হাজার ২৮৮ জন এবং কর্মচারী রয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৩৭৫ জন। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে স্কুল ১৬ হাজার ১১৮টি, কলেজ ২৩৭০টি এবং মাদ্রাসা রয়েছে ৭ হাজার ৫৯৭টি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (এমপিও) নুসরাত জাবীন বানু বলেন, এমপিওর বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। নতুন করে কবে নাগাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ শুরু হবে এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, কোনো সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এ বিষয়ে বলা যাবে না। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অর্থই মূল সমস্যা। এর জন্যই এমপিওভুক্তি বন্ধ আছে। এছাড়া এমনও কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো শুধু মাত্র দোকান খুলে বসে আছে টাকা উপার্জনের জন্য।

ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো যোগ্যতাই নেই অথচ এমপিওকরণ হয়ে গেছে। সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তিতে ২০১১ সালে ১০০০ স্কুল-মাদ্রাসা এমপিওভুক্তি করার ঘোষণা দেওয়া হলেও তা করা হয়নি। তবে ২০১০ সালে যখন এমপিওভুক্তির তালিকা প্রকাশ করা হয় তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল এ কাজ চলমান থাকবে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণ দেখিয়ে সরকারের এ প্রক্রিয়া থেমে রয়েছে।

এ বিষয়ে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারি ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ বলেন, আমরা এতোদিন বাজেটের দিকে তাকিয়ে ছিলাম কিন্তু আমাদের কোনো কিছুই হলো না। চলতি মাসেই আন্দোলন যাওয়ার ইঙ্গীত দেন এই নেতা। তিনি বলেন, আমার প্রায় ১৩ বছর এরকম অনেক শিক্ষক আছে কারো ১৫-২০ হয়ে গেছে কিন্তু এমপিওর মুখ দেখতে পারছেন না। অনেক কষ্ট করে এসব শিক্ষদের পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারন করছে বলে জানান মুকতাদের আজাদ।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) মাধ্যমিক এবং কলেজ শাখা সূত্রে জানাগেছে, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসে তা যাচাই-বাছাই করে তদন্ত করা হয়। সম্প্রতি বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক কোড জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে মাউশি এবং দুদক।