Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

বিএনপির স্বরাষ্ট্র-জনপ্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী

আফছার আহমদ রূপক॥প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ১০, ২০১৭, ০৫:৩৭ এএম


বিএনপির স্বরাষ্ট্র-জনপ্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রধানমন্ত্রী

 আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সহায়ক সরকারের প্রস্তাবে বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিতে পারে। তবে প্রস্তাবে শর্ত থাকবে যেহেতু ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে সহায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন, সেহেতু ক্ষমতার ভারসাম্য এবং সুষ্ঠু ভোটের জন্য বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে। বাকি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকবে আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল। অর্থাৎ এসব মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী থাকবেন এসব রাজনৈতিক দলের নেতারা। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রটি বলছে, বিএনপির সহায়ক সরকারের প্রস্তাবে শুধু উল্লিখিত প্রস্তাবই থাকবে এমন নয়। বিএনপির প্রধান দাবি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ অন্য কোনো ব্যক্তিকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান করে অন্যান্য দলের মন্ত্রী নিয়ে একটি সহায়ক সরকার। অনেকটা তত্ত্বাবধায়কের আদলেই। কিন্তু বিএনপি জানে এ ধরনের সরকার করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে এবং আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই মানবে না। তাই বিকল্প হিসেবে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী দাবি। বিএনপির ধারণা এ দাবিটি শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মেনে নিতেও পারে। এর কারণ এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপদে বহাল থাকছেন এবং সংবিধান সংশোধন করতে হবে না। তাছাড়া ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সরকার এমন একটি প্রস্তাব বিএনপিকে দিয়েছিল। কিন্তু বিএনপি তা মেনে নেয়নি এবং নির্বাচনে অংশ না নিয়ে এখন মাথা চাপড়াচ্ছে। তাই একাদশ নির্বাচনে এমন ভুল করতে চায় না।

সূত্রটি আরও বলছে, বিএনপি এসব দাবি জানিয়ে সহায়ক সরকারের জন্য রাজপথে আন্দোলনও চালিয়ে যাবে। কিছুদিনের মধ্যেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন এবং সেখানে অবস্থানরত তার জ্যেষ্ঠপুত্র বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে এসব বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন। দেশে ফিরে এসে খালেদা জিয়া সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবেন। পাশাপাশি আন্দোলনেরও ঘোষণা দিতে পারেন। তবে প্রস্তাব দেওয়ার পর তা মানার ক্ষেত্রে সরকারের মনোভাব পর্যবেক্ষণ করবেন কিছুদিন। একেবারেই নেতিবাচক হলে আন্দোলনের ডাক দেবেন। সূত্রটি বলছে শেষপর্যন্ত কোনো দাবিই মানা না হলে বা আন্দোলন ফ্লপ হলেও বিএনপি নির্বাচনে যেতে পারে। তাদের মতে, বর্তমান সিইসি কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন কঠোর হয়ে ভোট কারচুপি রোধ করলে বিএনপির অসংখ্য সমর্থকের ভোটে ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা আছে।

প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের এবং স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী বিএনপির-এমন দাবি জানিয়ে সহায়ক সরকারের প্রস্তাব আসবে কিনা জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, দেখা যাক। সহায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন শিগগিরই হবে কিনা অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে পারিনি। তাই কিছু বলতে পারছি না। এদিকে বিভিন্ন সভা-সেমিনারে আওয়ামী লীগের একাধিক মন্ত্রী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। সংবিধান থেকে একচুলও নড়বে না আওয়ামী লীগ এবং কোনো প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনাও হবে না।