Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪,

‘কর্মপরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করবে’

তবিবুর রহমান॥ প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ১৬, ২০১৭, ০৬:৫২ এএম


‘কর্মপরিকল্পনার যথাযথ বাস্তবায়ন সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করবে’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে নিবন্ধিত দলগুলোসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সংলাপ, আইন সংস্কার, সীমানা পুনর্র্নিধারণ, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নতুন দলের নিবন্ধন, যাতায়াত সুবিধাসহ ভোটকেন্দ্র তালিকাভুক্ত করা ও ইসির সক্ষমতা বাড়ানো এবং সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি– এ সাত বিষয়কে রোডম্যাপে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। আজ রোববার সিইসি কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন তা উন্মোচন করবেন। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা ইসির সামনে মূল চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনের কর্মযজ্ঞ শুরু হতে যাচ্ছে। সবার প্রত্যাশা– সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জন এবং সুষ্ঠুভাবে রোডম্যাপ তথা কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়নই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে পারে বলে ধারণা করছে নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, নির্বাচনি প্রস্তুতির প্রায় সব এজেন্ডাই ইসির রোডম্যাপে এসেছে। চ্যালেঞ্জ হলো– ঘোষিত সময়ের মধ্যে এ কাজগুলো সম্পন্ন করা। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের হাতে খুব বেশি সময় নেই। এর মধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। মূলত সবকিছু নির্ভর করছে ইসির আন্তরিকতা ও দক্ষতার ওপর। আমরা আশা করব, ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নে ইসি সক্ষমতার পরিচয় দেবে। এব্যাপারে জানতে চাইলে সংবিধান প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা ও কার্যপরিধি ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। একইসঙ্গে কর্মপরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন দরকার। এব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনা ইসি চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তা বই আকারে প্রকাশ হয়েছে। রোববার সিইসি তা উন্মোচন করবেন। আনুষ্ঠানিক এ রোডম্যাপ ধরেই কাজ বাস্তবায়ন হবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সবার কাছে ইসির সব কাজ তুলে ধরা হবে। তাদের মতামত নিয়ে সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে, বলেন তিনি। সবার মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটি। ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংলাপে শেষ মুহূর্তে নারী সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে বসার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর নাগাদ এ সংলাপে পর্যায়ক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নারী সংগঠনের নেত্রী ও নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইসি কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অংশীজন, গণমাধ্যম, দলসহ সংশ্লিষ্টদের সামনে উপস্থাপন করে সবার মতামত নেবে। সবার মতামতের আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব বলে ইসি বিশ্বাস করে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনায় বিদ্যমান আইন-বিধি প্রয়োগ করে অতীতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। এখন আইনি কাঠামোর আমূল সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে ইসি বিবেচনা করে না। তবে পরিবেশ-পরিস্থিতির পরিবর্তনের মুখে এগুলো আরও যুগোপযোগী করার সুযোগ রয়েছে। যাতে ভোট প্রক্রিয়া আরও সহজতর ও অর্থবহ হয়। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ও নির্বাচন পরিচালনা বিধি অনুযায়ী ‘পোস্টাল ব্যালটে’ ভোটে দেওয়ার প্রক্রিয়াটি জটিল। বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরতদের সহজ পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার কাঠামো বের করা প্রয়োজন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত প্রার্থীর গেজেট প্রকাশ নিয়ে বিধিতে অস্পষ্টতা রয়েছে উল্লেখ করে তা দূর করার প্রস্তাব কমিশনের। সেই সঙ্গে আইনি কাঠামো পর্যালোচনা করে আরও অসঙ্গতি পেলে তা দূর করতে উদ্যোগ থাকবে ইসির।